প্রথম দেবাশিস আইচ স্মারক আলোচনা সভা : মূলস্রোতের সংবাদ মাধ্যমের ঘৃণা ও হিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে বিকল্প সংবাদ মাধ্যমের প্রতিরোধই আগামীর দিশা


  • June 22, 2025
  • (0 Comments)
  • 278 Views

চলতি বছর থেকে গ্রাউন্ডজিরো-র উদ্যোগে ও দেবাশিস আইচ-এর পরিবার ও বন্ধুবর্গের সমর্থন-সহযোগিতায় শুরু হল এই বার্ষিক স্মারক আলোচনা সভা। প্রথম বছরের আলোচনার বিষয় ছিল – “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ক্রমবর্ধমান ঘৃণা ও হিংসা: মূলস্রোতের গণমাধ্যমের ভূমিকা”।

 

Groundxero | June 22, 2025

 

২১ জুন ২০২৫ কলকাতার থিওসফিকাল সোসাইটি হলে অনুষ্ঠিত হল প্রথম দেবাশিস আইচ স্মারক আলোচনা সভা। গ্রাউন্ডজিরো-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাংবাদিক, লেখক, গবেষক দেবাশিস আইচ এক বছর আগে ২০২৪-এর এই দিনে প্রয়াত হন। চলতি বছর থেকে গ্রাউন্ডজিরো-র উদ্যোগে ও দেবাশিস আইচ-এর পরিবার ও বন্ধুবর্গের সমর্থন-সহযোগিতায় শুরু হল এই বার্ষিক স্মারক আলোচনা সভা। প্রথম বছরের আলোচনার বিষয় ছিল – “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ক্রমবর্ধমান ঘৃণা ও হিংসা: মূলস্রোতের গণমাধ্যমের ভূমিকা”।

 

আলোচনার প্রথম বক্তা ছিলেন নারী অধিকার কর্মী আফরোজা খাতুন। নিজের সংখ্যালঘু পরিচিতি  নিয়ে আজকের ভারতে অবস্থান এবং সম্প্রদায়ের উপর নেমে আসতে থাকা সাম্প্রদায়িক আঘাত ও তাতে মূলস্রোতের গণমাধ্যমের উসকানি কীভাবে সমগ্র পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে তা নিজের বক্তব্যে স্পষ্ট তুলে ধরেন তিনি। আফরোজা বলেন যে, এখনকার বাজারসর্বস্ব অর্থনীতিতে প্রতিটি মিডিয়া হাউজ-এর উপর চাপ থাকে সরকারের পক্ষে খবর করার। তাঁর বক্তব্য আসলে আজকের মূলস্রোতের গণমাধ্যমের প্রোপাগ্যান্ডা সাংবাদিকতার দিকেই আঙুল তোলে। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে উদাহরণ দেন, যখন কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার পরে সাংবাদিক বলেন পক্ষ নিতে হবে তা আসলে কীসের ইঙ্গিত! সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা কীভাবে হবে বলেও তিনি প্রশ্ন তোলেন। আজকের ভারতে কোনো উগ্রপন্থার ঘটনার বিরোধিতায় যাঁরা সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে উদ্গ্রীব হয়ে ওঠেন তারা কী একটা গোটা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কথা বলছেন? জানতে চান আফরোজা। যে ধরনের মুসলিম বিদ্বেষী কথাবার্তা তাঁকে প্রায়শই সামাজিক আদান-প্রদানে, এমনকি ঘনিষ্ঠ বা পরিচিত প্রগতিশীল পরিসরেও শুনতে হয় তারমধ্যে থাকে – “কোরানে তো অত্যন্ত হিংসাত্মক কথা বলা হয়েছে, ওরাই (মুসলিমরা) তো সব উগ্রপন্থীদের সাহায্য করছে।“ আফরোজা বলেন, যখন মূলস্রোতের গণমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া সর্বত্র একই ধরনের প্রচার চলতে থাকে, তখন কি মনে হয় না যে এর মধ্যে কোনো অভিসন্ধি আছে? তিনি প্রকাশ্য আলোচনাতে এমনো শুনেছেন, ‘সব মুসলিমকে মারা দরকার।‘ কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাঁর পরিচয় জানা সত্ত্বেও এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন না অনেকে, আবার কখনো তিনি নিজেই নিজের ধর্মীয় পরিচয় দেননি বা দিতে অস্বস্তিতে পরেছেন এহেন বক্তব্য শোনার পর। তিনি বলেন, অথচ এই ধরনের বিদ্বেষমূলক কথার প্রতিরোধে যুক্তিযুক্ত প্রশ্নের কোনো উত্তর থাকে না। তিনি বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দলের ভাষ্য বলবেন না, নিজের কথা বলুন। এই ওরা-আমরার বিভেদ কিছুতেই যাচ্ছে না।“ নিজের ব্যক্তিগত সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নাম যেহেতু আরবি তাই সামাজিক মাধ্যমে কিছু লিখতে কোনো কোনো সময় ভয় লাগে। আমাদের দেশ বাঁচাতে, সংবিধান বাঁচাতে হবে। জীবনও বাঁচাতে হবে। প্রায়শই সহকর্মী, প্রতিবেশীদের নানা জেরা, প্রশ্নর সম্মুখীন হতে হয়। যখনই কোনো হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের কথা বলেছি তখনই দেশদ্রোহী, পাকিস্তানে চলে যাও এমন কথা শুনতে হয়।“ তিনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ভাগ করে জানালেন, করোনার সময়ে তাঁকে বলা হয়েছিল, তাঁর কর্মক্ষেত্র শিয়ালদা এলাকার কলেজে না যেতে কারণ সেই সংলগ্ন মসজিদ থেকে করোনা ছড়াচ্ছে! তিনি মন্দিরের প্রসঙ্গ তোলায় বলা হয়েছিল, সেখান থেকে ছড়াবে না কারণ দূরত্ব বজায় থাকে যা মসজিদে থাকে না। এই ধরনের ভুল তথ্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আতঙ্ক, ঘৃণা আর বিদ্বেষ ছড়ানো হয়, অথচ তার বিরুদ্ধে যথেষ্ঠ প্রতিরোধ তৈরি হয় না। এমনকি দেশে যখন গো-মাংস নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে, তখন নিজের পুত্রের জন্য তিনি দোকান থেকে মটন বিরিয়ানি কিনলেও তারপর তা বদলে চিকেন বিরিয়ানি নিয়েছেন, এমন ঘটনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এখন দেশের সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা মানেই, দেশকে না ভালবাসা। এগুলো সব সোশ্যাল মিডিয়ার ফলশ্রুতি। ২০১০ থেকেই বেশ কিছু মূলস্রোতের মিডিয়া ছড়াতে শুরু করে তিন তালাক, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি – এগুলোর বিরোধিতা মানেই বিজেপি সরকারের বিরোধিতা। মুসলিম মহিলারা কেন বিরোধিতা করছে এমন প্রশ্নও তোলা হয়। এই সরকার কীভাবে মুসলিম মহিলাদের রক্ষা করছে, মূলস্রোতের গণমাধ্যম এই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ের পহেলগাঁওতে পর্যটক হত্যা, অপারেশন সিঁদুর তাঁর আলোচনায় বারেবারেই উঠে আসে।

 

 

তিনি শেষ করেন দেবাশিস আইচের বইয়ের নাম “ভাত দে হারামজাদা” এই ডাক দিয়ে। শিক্ষা, চাকরি সব ক্ষেত্রেই দেশে বিজেপি সরকারের আমলে বেহাল দশা। তিনি বলেন, “ভাত নেই, তাই বিষ পান করায় মূলস্রোতের সংবাদ মাধ্যম। লড়ুক ওরা লড়াই করে মরুক। আমরা সেই বিষ পান করে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছি। কিন্তু না, যাচ্ছি না। আজকের এই অনুষ্ঠানের পর আরোই মনে হচ্ছে যাচ্ছি না। আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।“

 

অল্ট নিউজ-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রতীক সিনহা ছিলেন আলোচনা সভার দ্বিতীয় বক্তা। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি স্পষ্ট করে দেন, মূলস্রোতের সংবাদ মাধ্যম বহু বছর ধরেই খুব খারাপ কাজ করে চলেছে। সুতরাং এখন আর তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা করে সময় নষ্ট অর্থহীন। এখন আর শুধুমাত্র হিন্দু-মুসলমান বিভেদ বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণেও এদের কাজ সীমিত নেই। বরং আরো অন্যান্য ক্ষেত্রে এই বৈষম্য নানাভাবে ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছে তারা। এই কারণেই এখন আমাদের ভাবার সময় এসেছে একটা সমাধান বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার। প্রতীক মনে করেন এনডিটিভি-র শেয়ার যেদিন আদানির হাতে চলে গেল সেদিনই এখানে মূলস্রোতের মিডিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতা হয়ে যায়। বর্তমানে এদেশের গণমাধ্যমের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ আদানি ও আম্বানির কুক্ষীগত। তিনি আরো বলেন, হিন্দি বলয়ের হিন্দি মাধ্যমের সংবাদমাধ্যমগুলি যেভাবে হিন্দি ভাষার সংবাদচর্চা সারা দেশের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে, যা ঘৃণা ও বিদ্বেষের রাজনীতি ছড়ায়, সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক – সে বিষয়ে আরো সতর্ক থাকতে হবে। যদিও এদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, তবে তা কখনোই একমাত্রিক নয়। সাম্প্রতিক সোনম রাজবংশীর ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন কীভাবে এই ঘটনার উপস্থাপনা পুরুষদের অধিকার আন্দোলনকে পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক কাঠামোয় জোরদার করছে। এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার বিশেষ ভূমিকার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর মতে এখন খুব কৌশল করে বিভিন্ন স্তরে এমন উপায় বের করা হয়েছে, যেখানে মূলস্রোতের মিডিয়ার ম্যানিপুলেটিভ ন্যারেটিভ তৈরির কাজ যেখানে শেষ হচ্ছে, সেখান থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া নিজেদের কনস্পিরেসি থিওরি প্রচারের অ্যাজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করছে। শুধু ধর্ম নয়, জাতি-বর্ণ-শ্রেণী সব ক্ষেত্রেই বৈষম্য বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে। বিজেপি স্থির করে নিয়েছে কী দেখানো হবে। মূলস্রোতের মিডিয়াকে সেখানে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও আপাতভাবে হাস্যকর মনে হতে পারে, কিন্তু বিজেপি-পোষিত মূলস্রোতের মিডিয়াগুলির নিজেদের সাংবাদিকতার ব্যর্থতা, ভুয়ো খবর চালানোর অভ্যাস ঢাকতে সেগুলিকে জাতীয়তাবাদী মিথ্যা বলে আড়াল করছে। প্রতীক মনে করেন মূলস্রোতের সংবাদপত্রগুলি তাও এখনো তুলনায় কিছুটা ভালো কাজ করছে। বিকল্প হিসাবে এই মুহূর্তে রয়েছে ডিজিটাল। মূলস্রোতের মিডিয়া সেই ডিজিটাল-কে ব্যবহার করছে দর্শকদের বিভ্রান্ত করতে। বিকল্প সংবাদমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের সামনে সুযোগ রয়েছে এই ডিজিটালকে সঠিক তথ্যনীষ্ঠ সাংবাদিকতার কাজে ব্যবহার করার। তারজন্য প্রয়োজন পেশাদার মানসিকতা ও ক্রাউড ফান্ডিং-এর সঠিক প্রক্রিয়া জেনে কাজ করা, যাতে তা দীর্ঘমেয়াদী হয়। নিউজ কন্টেন্ট-এর সঙ্গে কোনোভাবেই সমঝোতা না করা। কোনোভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ার চাপের কাছে মাথা নীচু করলে চলবে না। একটি বিকল্প সংবাদমাধ্যম উদ্যোগ তৈরি করার জন্য মাথায় রাখতে হবে কর্মীদের বেতন, আইনি লড়াইয়ের খরচ ইত্যাদি। তিনি নিজের অল্ট নিউজ-এর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ওপেন লাইসেন্স রাখাও জরুরি। যেহেতু তাঁদের উদ্যোগ চলে সাধারণের টাকায়, তাই তাঁদের নিউজ কন্টেন্ট-ও সাধারণের জন্য উন্মুক্ত।

 

প্রতীক শেষ করেন এই আশা দিয়ে যে বর্তমানে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিকল্প সংবাদ মাধ্যম অন্যতম প্রধান গণমাধ্যম হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে, প্রয়োজন তাকে দীর্ঘমেয়াদী করে তোলার জন্য পরিকল্পনা, বাস্তব বুদ্ধি, দূরদৃষ্টি।

আলোচনা সভার শেষ বক্তা ছিলেন স্বাধীন সাংবাদিক স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য। পহেলগাঁওতে উগ্রপন্থী আক্রমণ ও তার পরবর্তী অপারেশন সিঁদুরকে কেন্দ্র করে বিজেপি সমর্থক চ্যানেলগুলি যেভাবে ইসলামবিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদের প্রচার চালিয়েছে সরাসরি তাকেই চিহ্নিত করে আলোচনা শুরু করেন তিনি। স্পষ্টভাবে তিনি বলেন এই ধরনের চ্যানেলগুলির সঞ্চালকেরা যেভাবে মিথ্যে খবর পরিবেশন করেন তা এক ধরনের সুচতুর ভাঁড়ামো, যা নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা বিকল্প সংবাদ মাধ্যমগুলিতে হওয়া জরুরি মানুষের মধ্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই। সারা দেশের মূলস্রোতের মিডিয়া কাজ করছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা খারাপ এই মর্মে প্রচার চালাতে। তিনি জানান, এই ধরনের প্রচার প্রথম শুরু করে হিন্দিভাষী নয়ডাস্থিত চ্যানেলগুলি। সরাসরি বিজেপি-র তাঁবেদারি করা এই সংবাদ মাধ্যমগুলি বর্তমানে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে রমরমিয়ে চলছে আর তাদের লক্ষ্য যে রাজ্যগুলি এখনো বিজেপি শাসিত নয়, সেখানেও নিজেদের আধিপত্য জাঁকিয়ে তোলা। বিজেপি দখল করতে চায় সেরকম রাজ্যগুলিতে সারাদিন উত্তেজনামূলক খবর পরিবেশন করছে এই সংবাদ মাধ্যমগুলি যেগুলি ধর্মভিত্তিক, সাম্প্রদায়িক শান্তি বিরোধী, ইসলাম বিদ্বেষী। উদাহরণ হিসাবে তিনি সহজভাবে বোঝান যে, আজকের দিনে সাধারণ নাগরিকদের কোনো ইস্যুতে অবরোধ, ভাঙচুর স্বাভাবিক হলেও, যখনই সেখানে ইসলাম ধর্মাবলমহবী কেউ যুক্ত হলেই তা ‘জেহাদি’ রূপ পেয়ে যায়; টিভির ডিবেটে মুসলিম প্রতিনিধি হন দাড়িওয়ালা, ফেজ টুপি পরা কোনো অপরিচিত মৌলানা, যাকে বাকিরা দাবিয়ে দিয়ে দেখাবে কীভাবে জেহাদিকে ঠেকাতে হয়! তিনি জানান, পরবর্তী সময়ে গ্রাউন্ড রিপোর্ট করতে গিয়ে অধিকাংশ সময়েই এই মুসলিম পরিচিতির মানুষটিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। স্নিগ্ধেন্দু বলেন, “আসলে টিভিতে যা দেখানো হয় তা অবচেতনে হিন্দুদের প্রভাবিত করে।“ তাঁর মতে সংখ্যালঘুদের প্রতি এই বাড়তে থাকা ঘৃণা ও হিংসার প্রচারকে মুসলিম মানুষদের উপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। এখন বরং হিন্দুদের সময় হয়েছে এই অপপ্রচারকে কাউন্টার ও প্রতিরোধ করার। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বিকল্প সংবাদ মাধ্যমগুলিকে একজোট হয়ে এই টিভি চ্যানেলগুলিকে রিভিউ করা যায় কি না তা ভেবে দেখতে হবে। এই ধরনের মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যটাকে মানুষের কাছে নষ্ট করে দিতে হবে। এদের অর্ত ও, ক্ষমতার জোরেই এরা ঘৃণা ও হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতি ছড়াতে পারে। গ্রাউন্ড রিপোর্ট করা স্বাধীন সাংবাদিকদের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই অর্থনৈতিক ও নানান কারণে মুশকিল হয়ে পরে। তাই মূলস্রোতের সংবাদের উপাদানগুলিকে রোস্টিং করা যায় কি না দেখতে হবে। কন্টেন্ট ভাগ করে নেওয়া, খরচ ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করে বিভিন্ন সমমনস্ক বিকল্প সংবাদ মাধ্যম একসঙ্গে কাজ করলে তা যথেষ্ঠ প্রভাব ফেলবে বলে তিনি আশাবাদী।

তিনি শেষ করেন এই বলে,”স্বাধীন সাংবাদিকতায় আর্থিক ঘাটতি মেটাতে রয়েছে প্যাশন, কমিটমেন্ট। এই মুহূর্তে মিডিয়া অ্যানালিসিস করা স্বাধীন মিডিয়ার বড় কাজ। মিসইনফর্মেশন, ডিসইনফর্মেশন, ফেক নিউজ-এর বৃত্ত ভেঙে সঠিক তথ্যসম্মৃদ্ধ সংবাদ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।“

 

প্রথম দেবাশিস আইচ আলোচনা সভা শেষ হয় আশাবাদের মধ্যে দিয়েই। যে তথ্যনীষ্ঠ সাংবাদিকতা আজীবন করে গেছেন এই বরিষ্ঠ সাংবাদিক যেন সেই পথে হেঁটেই বিকল্প সংবাদমাধ্যমের আগামী দিনের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিলেন এদিনের পরিপূর্ণ সভাকক্ষে উপস্থিত বক্তারা।

 

ছবি : মৈনাক।

 

Share this
Leave a Comment