উত্তরাখন্ডে ডলফিন কোম্পানির সাত শ্রমিক আমরণ অনশনে : উদাসীন বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ, সংবাদমাধ্যম


  • November 12, 2024
  • (0 Comments)
  • 463 Views

সরকার, শ্রম বিভাগ, কোম্পানি মালিকের শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে চার জন মহিলা ও তিন জন পুরুষ শ্রমিক গত ২৫ দিন ধরে আমরণ অনশন করছেন। অনশনরত মহিলা শ্রমিকদের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। উদাসীন বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ও সংবাদমাধ্যমের উপেক্ষা সত্তেও শ্রমিকরা হকের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রাউন্ডজিরোর প্রতিবেদন।

 

Groundxero Nov. 12, 2024

 

উত্তরাখন্ডের রুদ্রপুরের গান্ধী পার্কে ডলফিন কোম্পানির মজদুর সংগঠনের সদস্যদের আমরণ অনশনের ২৫ দিনের বেশি অতিক্রান্ত। আশ্চর্যজনকভাবে জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলি এই বিষয়ে কোনওরকম খবর করা থেকে বিরত রয়েছে। ইন্টারনেটে খুঁজতে গেলেও শেষ সাত দিন আগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই ঘটনার কোনও বিস্তারিত খবর বা ফলো আপ নিউজ নেই। হাতে গোনা কয়েকটি হিন্দি মাধ্যমের সংবাদ পোর্টাল ছাড়া খুঁজে পাওয়া যাবে না এই সংক্রান্ত কোনও খবর।

 

স্থায়ী শ্রমিকদের ঠিকা শ্রমিকে পরিণত করা, শ্রম আইন যথেচ্ছভাবে উল্লঙ্ঘন করা, একজন শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে আঙুল কাটা পড়া সত্ত্বেও তাঁকে কোনও রকম ক্ষতিপূরণ না দেওয়া সহ আরও বহু শ্রমিক বিরোধী পদক্ষেপ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন যাবত নিতে থাকার কারণে প্রথমে শ্রমিকেরা অগস্টের মাঝামাঝি থেকে ধর্ণা-অবস্থান, তারপরে অক্টোবরে ১৭ দিন অনির্দিষ্টকালের ধর্ণার পরে, শেষ পর্যন্ত ১৮ অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনের ডাক দেন।

 

এই আমরণ অনশনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক হল এতে অংশ নিচ্ছেন বেশ কয়েক জন মহিলা শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে পিংকি গাংওয়ারের দীপাবলির প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা খোলা চিঠি আলোড়ন তৈরি করে। সেই চিঠির বাংলা অনুবাদ এই প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রকাশ করা হচ্ছে। ৪ নভেম্বর পেরিয়ে যায় ৪ জন মহিলা শ্রমিকের আমরণ অনশনের ১৫তম দিনও। আমরণ অনশনকারী মহিলা শ্রমিকদের শারীরিক অবস্থার উদ্বেগজনক ক্রমাবনতি সত্ত্বেও ডলফিন কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বা উত্তরাখন্ডের ডবল ইঞ্জিন সরকার – কেউই শ্রমিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে কোনওরকম ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি।

 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে আমরণ অনশনে থাকা পিঙ্কি গাংওয়ারের খোলা চিঠি

 

প্রতি,

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, নয়াদিল্লি, ভারত

বিষয় – আপনার বোন পিঙ্কি গাংওয়ারের শেষ ইচ্ছা পূরণ করা, যাতে আমার শেষকৃত্য উত্তরাখণ্ডের শ্রমমন্ত্রী/উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পুষ্কর সিং ধামিজির খাতিমা বাসভবনে সম্পন্ন হয়। 

মহাশয়,

আমি পিঙ্কি গাংওয়ার, সিডকুল পন্থনগর, জেলা উধম সিং নগর (উত্তরাখণ্ড) স্থিত ডলফিন কোম্পানিতে কর্মরত একজন স্থায়ী মহিলা শ্রমিক। আমি ভারতের উত্তরপ্রদেশের মেয়ে। ডলফিন কোম্পানিতে মৌলিক শ্রম আইন বাস্তবায়নের জন্য আমি সহ প্রায় ৫০০ জন শ্রমিক গত জানুয়ারি ২০২৪ থেকে একটানা লড়াই করে যাচ্ছি। কিন্তু উত্তরাখণ্ডে আপনার বিজেপি দলের ডাবল ইঞ্জিন সরকার মৌলিক শ্রম আইন লঙ্ঘন বন্ধ করা এবং ডলফিন কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে শ্রম দফতর এবং জেলা প্রশাসন দরিদ্র শ্রমিকদের দমন করছে। এমনকি ০৭/০৮/২০২৪ তারিখে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট আমাদের মতো শোষিত শ্রমিকদের পিটিশন নম্বর-২১২৮/২০২৪-এর ভিত্তিতে দেওয়া  আদেশের পরেও, মৌলিক শ্রম আইন লঙ্ঘন বন্ধ করার জন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

 

মহাশয়, আমরা শুধু শ্রম আইন অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ও বোনাস-ই তো দাবি করছি। ডলফিন কোম্পানিতে আট-দশ বছর ধরে কর্মরত স্থায়ী নারী শ্রমিকদের ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মাসিক মাত্র ৫৫০০-৬০০০ টাকা বেতন দেওয়া হয়েছিল, এটা কি ন্যায্য? আমাদের স্থায়ী শ্রমিকদের মাত্র ৩০০-৫০০ টাকা বোনাস দেওয়া হয়, এটা কি নৈতিক ও আইনগতভাবে যুক্তিযুক্ত? আমরা এই নৈতিক প্রশ্ন তুলছি যে, আমরা যারা স্থায়ী শ্রমিক তাদের কোন আইনে ঠিকা প্রথায় কাজ করিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেওয়া হলো এবং বকেয়া অর্থ পরিশোধও করা হলো না? আমরা একটা সহজ সরল প্রশ্ন তুলছি যে কী করে বিনা নোটিশে এবং আমাদের বকেয়া অর্থ প্রদান না করেই অবৈধ ভাবে কারখানার গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে? আইন অনুযায়ী যে সব কোম্পানিতে ২৫০ বা তার বেশি শ্রমিক কাজ করে সেখানে ক্যান্টিন সুবিধা দেওয়া বাধ্যতামূলক এবং আমাদের কোম্পানিতে ১০০০ জনের বেশি শ্রমিক কাজ করে, তাহলে কেন আমাদের ক্যান্টিনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না, আমরা এই বৈধ প্রশ্নটিও রাখছি।

 

মহাশয়, উত্তরাখণ্ডের শ্রমমন্ত্রী, শ্রম দফতর এবং জেলা প্রশাসনের মৌলিক শ্রম আইন কার্যকর করা কি সাংবিধানিক দায়িত্ব নয়? আর এই দায়িত্ব তিনি পালন করলেন না কেন? এবং যদি আপনার বিজেপি দলের ডাবল ইঞ্জিন সরকারে কোন শুনানি না হয়, আমি, পিঙ্কি গাংওয়ার, অন্য তিনজন মহিলা শ্রমিক বোন এবং দুই পুরুষ শ্রমিক ভাই সহ, মৌলিক শ্রম বাস্তবায়নের দাবিতে ২১ শে অক্টোবর ২০২৪ থেকে আমরণ অনশনে বসেছি।

 

মহাশয়, ২৪/১০/২০২৪ তারিখে শ্রমিকদের পুনর্বহাল করার জন্য ডেপুটি শ্রম কমিশনারের জারি করা নোটিশটি, ঠিক তার পরের দিনই ডেপুটি শ্রম কমিশনার রুদ্রপুর এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রুদ্রপুর আর মানতে চাইছেন না। ২৩ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে, ডেপুটি শ্রম কমিশনার আমাদের কাছে একটি নোটিশ জারি করেছিলেন যে ২৫/১০/২০২৪ তারিখে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাজুল/প্রশাসন রুদ্রপুরের মধ্যস্থতায় আলোচনা করা হবে, কিন্তু কোম্পানির ম্যানেজারকে ডাকাই হলো না, যেখানে উপরের নোটিশটি কোম্পানির ম্যানেজারকে পাঠানো হয়েছিল এবং একতরফা আলোচনার সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উল্টে আমাদের প্রতিনিধিদের হুমকি দিচ্ছিলেন। যা থেকে স্পষ্ট যে জেলা প্রশাসন, সরকার ও শ্রম বিভাগ পুরোপুরি কোম্পানি মালিকের পাশে দাঁড়িয়েছে।

 

মহাশয়, আপনার প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিজি উত্তরাখণ্ডের শ্রমমন্ত্রীও, তাই তিনি আমাদের নারী শ্রমিকদের সাথে এই নৃশংসতার জন্য প্রধান দায়ী। আরও লজ্জার বিষয় হল আপনার দলের স্থানীয় বিধায়ক শ্রী শিব অরোরাজি আমাদের মহিলাদের কাছে প্রায় আট-দশ বার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি দু-চার দিনের মধ্যে আমাদের সমস্যার সমাধান করবেন এবং সমস্ত শ্রমিকদের কাজ ফিরিয়ে দেবেন, যা এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যায় তবে প্রতিবারই তিনি লজ্জাজনকভাবে তার কথা অস্বীকার করেছেন।

 

মহাশয়, আপনি নিজেকে ওবিসি সম্প্রদায়ের ছেলে এবং পরম শুভাকাঙ্ক্ষী বলে ঘোষণা করছেন। বেনারস থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় আপনি নিজেকে গঙ্গা মাইয়া এবং উত্তরপ্রদেশের ছেলে বলে উল্লেখ করতেন। আমিও ওবিসি সম্প্রদায়ের এবং উত্তরপ্রদেশের মেয়ে। এজন্য আমি আপনার বোন আর আপনি আমার ভাই। কিন্তু আপনার ডাবল ইঞ্জিন সরকারে আমাদের কথা শোনা হয় না কারণ আমি শ্রমিক শ্রেণীর সদস্য এবং দরিদ্র। আর আপনাদের ডাবল ইঞ্জিন সরকারে আমরা শ্রমিক ও গরীবদের কথা শুনি না তাই আজ আমরণ অনশনে জীবন-মরণের লড়াই। আমি শুনেছি নাজুলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং আপনার ডাবল ইঞ্জিন সরকারের প্রশাসন বলছে আমরণ অনশনে বসে থাকা আমাদের তিন-চারজন মহিলা মারা গেলেও তাদের কোন যায় আসে না। কারণ ভারতের জনসংখ্যা অনেক বেশি। স্যার, আপনার ডাবল ইঞ্জিন উত্তরাখণ্ড সরকারের এ কেমন রামরাজ্য যেখানে একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমাদের অনশনকারীদের প্রতি এতটা অসংবেদনশীল হতে পারেন? এই অফিসারদের কি তাদের নিজেদের মা-বোনদের প্রতিও একই রকম ভাবনা আছে? আপনার সরকারে এটাই কি রামরাজ্য আর এটাই কি নারীর সম্মান?

 

স্যার, আমি মরতে চাই না, বাঁচতে চাই, আর জীবনকে খুব ভালোবাসি। কিন্তু যতীন দাস ও ভগত সিং-এর মতো আমাদের মহাপুরুষদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমি মনে করি, দেশ ও সমাজের স্বার্থে, শ্রমিকদের স্বাধীনতা ও অধিকারের জন্য আমরণ অনশন করে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার এবং আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমরণ অনশন করে আমার শ্রমিক ভাইদের অধিকার আদায়ে সাহসিকতার সাথে লড়াই চালিয়ে যাব। এটা আপনার কাছে আমার প্রতিশ্রুতি।

 

মহাশয়, আমার পূর্ণ বিশ্বাস, আমরণ অনশনে আমাকে যদি জীবন উৎসর্গ করতে হয়, তাহলে আমার ডলফিন কোম্পানি ও সিডকুলের শ্রমিক ভাই-বোনেরা অবশ্যই এর প্রতিশোধ নেবেন এবং সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন।

 

স্যার, আমার জীবদ্দশায় আপনি এবং আপনার ডাবল ইঞ্জিন সরকার আপনার বোনের জন্য ন্যায়বিচার দিতে পারেননি। তবে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে যে আমার মৃত্যুর পর, আপনি অবশ্যই আমার শেষ ইচ্ছা পূরণ করবেন যে আমার শেষকৃত্য উত্তরাখণ্ড রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিজির খাতিমা বাসভবনে সম্মানের সাথে সম্পন্ন করা হবে যাতে উত্তরাখণ্ড ও ভারতের মানুষ দেখতে পারে আর এটা অনুধাবন করতে পারে যে, আপনাদের দলের ডাবল ইঞ্জিন সরকারের শ্রমমন্ত্রী শ্রমিক ও নারীদের প্রতি কতটা নির্লিপ্ত, নিষ্ঠুর ও স্বৈরাচারী।

 

আপনার সহযোগিতার জন্য উন্মুখ

আপনার বোন

পিঙ্কি গাংওয়ার

 

কপি পাঠানো হয়েছে- (১) সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, শ্রমিক সংযুক্ত মোর্চা উধম সিং নগর (২) স্যার ইনচার্জ, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (৩3) ভারতের বিরোধী দলের নেতা, মাননীয় রাহুল গান্ধী জি (৪4) মুখ্যমন্ত্রী, উত্তরাখণ্ড সরকার, দেরাদুন

 

তারিখ 25/10/2024

 

গত ৩০ অক্টোবর পিংকি গাংওয়ারের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁর প্রাণ বাঁচানোর কথা বলে জেলা প্রশাসন তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে জোর করে তুলে নিয়ে আসে। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তিতে অনশনরত মহিলা শ্রমিকদের পোশাক ছিঁড়ে যায়, পুলিশ তাঁদের লাথি-ঘুষি মেরে নিরস্ত করার চেষ্টা করে। তার পরের একটি ভিডিওতেই সামনে আসে নিতান্ত অবহেলায় পিংকিকে একটি চারপায়ির উপরে হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছে, নার্স উপস্থিত থাকলেও কোনওরকম শুশ্রুষা করা হচ্ছে না। অপর দিকে পিংকি নিজেও অন্য কোনও মজদুর মহিলা সাথীর শুশ্রুষা নিতে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন এই বলে যে, প্রশাসন যখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে তখন তিনি প্রশাসনের দায়িত্ব। অনশনরত পিংকি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন। শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রশাসন অনশন ভাঙতেই পিংকিকে তুলে নিয়ে যায়। যেভাবে তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে তা থেকে স্পষ্ট শ্রমিকদের প্রাণের চিন্তা প্রশাসনের আদপেই নেই।

পিংকি গাংওয়ার

চার মহিলা শ্রমিকের মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি ছিল দুই বোন প্রেমাবতী ও পুষ্পা-র। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাঁদের কোনওরকম স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হচ্ছিল না। শ্রমিকেরা বারবার দাবি করেন উত্তরাখন্ড সরকার ও জেলা প্রশাসনের অসংবেদনশীল, অমানবিক মানসিকতার প্রমাণ তাঁদের এই বিষয়টিকে ঘিরে এহেন উদাসীনতা।

 

ডলফিন মজদুর সংগঠনের সহ সভাপতি সুনীতা জানিয়েছিলেন, “প্রেমাবতী ও পুষ্পা সহোদর বোন। তাঁরা কোম্পানির স্থায়ী শ্রমিক। গত ২৭ মার্চ আচমকাই তাঁদের পিতৃবিয়োগ হলে তাঁরা মা-বাবার বাড়িতে যান। পাঁচ দিন পর ফিরে এসে কাজে যোগ দিতে গেলে কোম্পানির মালিক প্রিন্স ধওয়ান, সহানুভূতির বদলে অত্যন্ত অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ করে তাঁদের কাজে যোগদান বন্ধ করে দেন। তাঁদের মতো আরও ৪৮ জন শ্রমিকের কাজে যোগদান বর্তমানে অবৈধভাবে বন্ধ আছে। অসংখ্য স্থায়ী শ্রমিককে ঠিকা শ্রমিকের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী ন্যূনতম বেতন ও ন্যূনতম বোনাসের দাবি করা যেন ডবল ইঞ্জিন সরকারের কাছে খুব বড় অপরাধ হয়ে গেছে। শ্রম বিভাগ, জেলা প্রশাসন আর শ্রম মন্ত্রী কোম্পানি মালিক প্রিন্স ধওয়ানের ঢাল হয়ে উঠেছেন।”

 

ইতিমধ্যে গত ৩ নভেম্বর আমরণ অনশনকারী দুই বোন প্রেমবতী ও পুষ্পা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি খোলা চিঠি লেখেন। সেই চিঠির বাংলা অনুবাদ এই প্রতিবেদনের সঙ্গে দেওয়া হল।

 

প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ভাইফোঁটার দিন লেখা আমরণ অনশনরত দুই শ্রমিক বোনের খোলা চিঠি

 

আমরা এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী দু’জন প্রেমবতী আর পুষ্পা, দুই সহোদর বোন ডলফিন কোম্পানি, সিডকুল পন্তনগর (উত্তরাখন্ড)-এ কর্মরত স্থায়ী শ্রমিক। কোম্পানি মালিক প্রিন্স ধওয়ান-এর নির্দেশে আমাদের কারণ দর্শানোর নোটিস, অভিযোগ পত্র কোনও কিছু ছাড়াই গত সাত মাস ধরে বেআইনিভাবে কাজে যোগদান (গেটবন্দী) বন্ধ করা হয়েছে।

আমাদেরই মতো আরও প্রায় ৪৮ জন শ্রমিককে গত ৮ থেকে ১০ মাস যাবত বেআইনি ভাবে গেটবন্দী করে রাখা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ, শ্রম আইনকে আবর্জনার স্তুপে ফেলার মতো করে স্থায়ী শ্রমিকের কাজ বন্ধ করে দিয়ে তাঁদের ঠিকাদারের অধীনে যেতে বাধ্য করে তাঁদের ভবিষ্যত শেষ করে দেওয়া হয়েছে।

আমাদের ন্যূনতম বেতন ও ন্যূনতম বোনাসও দেওয়া হয়নি। ডলফিন কোম্পানিতে যেভাবে প্রাথমিক শ্রম আইনকে চূড়ান্ত উল্লঙ্ঘন করা হয়, আমরা তার বিরুদ্ধে শ্রম বিভাগ, জেলা প্রশাসন ও সরকারের কাছে অগুণতি বার লিখিত অভিযোগ করেছি, কিন্তু কেউই কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।

এর পরে আমরা কর্মীরা হাইকোর্ট, নৈনিতালে ২১২৮ নম্বর পিটিশন দায়ের করি। যার উপর হাইকোর্ট 0৭/0৮/২০২৪ তারিখের আদেশ প্রদানের ভিত্তিতে সহকারী শ্রম কমিশনার, রুদ্রপুরের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকে মৌলিক শ্রম আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হয়েছিল।

কিন্তু উত্তরাখণ্ডে আপনাদের বিজেপি দলের ডাবল ইঞ্জিন সরকার আমাদের কথা শোনেনি। বরং কোম্পানির মালিক প্রিন্স ধাওয়ানকে খোলাখুলি সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল।

এতে মানসিকভাবে আহত হয়ে আমরা দুই সহোদর বোন ২১ অক্টোবর থেকে গান্ধী পার্ক রুদ্রপুরে (উত্তরাখণ্ড) অন্যান্য নির্যাতিত শ্রমিকদের সাথে আমরণ অনশনে বসতে বাধ্য হই। আজ ভাইফোঁটার দিনে আমাদের আমরণ অনশনের ১৩ দিন হয়ে গেল।

আপনার ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ডাক্তারেরা গত তিন দিন ধরে আমাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেননি। মনে হচ্ছে আপনার উত্তরাখণ্ড সরকার আমাদের নরবলি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেজন্য আমাদের নিয়ে কেউ চিন্তিত নয়।

মহাশয়, আপনার ডাবল ইঞ্জিন সরকারের জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ২৯ অক্টোবর, প্রকাশ্য রাজপথে অবস্থিত আমাদের অবস্থানস্থানে, পুলিশ আমাদের মহিলাদের পোশাক খুলে ফেলে, উলঙ্গ করে বস্ত্রহরণ করে, মাটিতে ফেলে টানাহেঁচড়া করা হয়, লাথি-ঘুষি মারা হয় নির্দয়ভাবে। দুর্যোধন, দুশাসন, শকুনি ও কংসও যেন তাঁদের কাছে পিছিয়ে ছিলেন। অসহায় দ্রৌপদীর স্মৃতি যেন তাজা হয়ে গেল।

মহাশয়, আমরা পৌরাণিক কাহিনীতে শুনেছি যে রাম এবং কৃষ্ণ অত্যন্ত দয়ালু ছিলেন। রাবণও নারীদের প্রতি অত্যন্ত উদার ছিলেন এবং নারীদের খুবই সম্মান করতেন। আমরা আরও শুনেছিলাম যে রাবণ কখনওই সীতার বস্ত্রহরণ করেননি বা তাঁর দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকাননি। আমরা আরও শুনেছি যে রাবণ তাঁর বোন সুর্পনখার প্রতিশোধ নিতে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত রামের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন।

মহাশয়, আমরা পৌরাণিক কাহিনীতেও শুনেছি যে কংস অত্যন্ত নির্দয় ও নিষ্ঠুর ছিল। যিনি নিজের স্বার্থপরতা ও ক্ষমতার জন্য তাঁর সহোদরা দেবকীকে হাতকড়া ও শেকল দিয়ে কারাগারে বন্দী করেছিলেন এবং তাঁর উপর ভয়ানক নির্যাতন করেছিলেন।

তিনি তাঁর আট নবজাতক ভাগ্নেকে তাদের পা চেপে ধরে পাথরে মাথা ঠুকে হত্যা করেন। আমরা পৌরাণিক কাহিনীতে আরও শুনেছি যে দুর্যোধন, দুশাসন এবং শকুনি শাসকের ক্ষমতা লাভের জন্য মহিলাদের (দ্রৌপদীর মতো) বস্ত্রহরণ করে উলঙ্গ করতে, অপমান করতে দ্বিধা করেননি।

মহাশয়, উত্তরাখণ্ডে আপনার ডাবল ইঞ্জিন সরকার (যেখানে মুখ্যমন্ত্রী ধামি নিজেই শ্রমমন্ত্রী) আমাদের মতো নিপীড়িত মহিলাদের উপর এত অন্যায়, অত্যাচার করেছে যে আমরা তাতে শুধু কংস, দুর্যোধন, দুশাসন এবং শকুনি দেখতে পাই।

অতএব, ভাইফোঁটায়, আপনাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে অবিলম্বে আপনার উত্তরাখণ্ড সরকার, মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি, জেলা প্রশাসন এবং শ্রম বিভাগকে নির্দেশ দিন যাতে নারীদের সঙ্গে সম্মানের সঙ্গে আচরণ করা হয় এবং ভবিষ্যতে কোনো নারীর বস্ত্রহরণ করা না হয়।

তাঁদের বোঝান যে, নারীর কাপড় ছিঁড়ে ফেলা, মারধর করা, মাটিতে ফেলে টেনে-হিঁচড়ে আনা অহংকার ও পুরুষত্বের বিষয় নয়। বরং অত্যন্ত লজ্জা ও কাপুরুষতার বিষয়।

মহাশয়, ভাইফোঁটায় আপনি উত্তরাখণ্ড সরকারকে বোঝান যে আপনি যদি রাম হতে না পারেন, যদি আপনি কৃষ্ণ হতে না পারেন, তাহলে অন্তত রাবণ হয়ে উঠুন এবং মহিলাদের সম্মান করতে শিখুন। তাঁদের বুঝিয়ে বলুন, তাঁরা যেন কংস, দুর্যোধন, দুঃসাশন বা শকুনি না হয়ে ওঠে।

আমরা আশা করি আপনি, ১৩ দিন ধরে আমরণ অনশনে বসে থাকা মহিলাদের এই সহজ-সরল আবেদন এবং অনুভূতি উপলব্ধি করে, অবিলম্বে উত্তরাখণ্ড সরকারকে এই বিষয়ে যথাযথ পরামর্শ দেবেন।

-আপনারা বোনেরা পুষ্পা ও প্রেমবতী।

 

ডলফিন কোম্পানির আমরণ অনশনকারীদের সমর্থনে গত ৪ নভেম্বর প্রতীকী অনশনে বসেন বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী, মজদুর সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় – ৪ নভেম্বর ডলফিন-এর মজদুরদের আমরণ অনশনস্থানে বিভিন্ন শ্রমিক-কৃষক ইউনিয়ন, সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা, আমরণ অনশনকারীদের প্রাণরক্ষার জন্য শাসক ও প্রশাসনকে সচেতন করতে ক্রমান্বয়ে প্রতীকী অনশন করেন। এরপরে জেলাধিকারী উধমসিং নগর-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে দাবির প্রতিলিপি দেওয়া হয়।

প্রতীকী অনশনে বসেন বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী, মজদুর সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

 

৪ নভেম্বরের সভায় বক্তারা বলেন, সকলেই জানেন যে উত্তরাখন্ডের সিডকুল পন্তনগরে ডলফিন কোম্পানিতে প্রাথমিক শ্রম আইন সম্পূর্ণভাবে উল্লঙ্ঘন করার বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে কয়েক’শ শ্রমিক আন্দোলন করছেন। চার জন মহিলা শ্রমিক সহ অন্য শ্রমিকেরা গত ১৫ দিন ধরে (সেই সময়ে ১৫ দিন হয়েছিল) আমরণ অনশনে বসে রয়েছেন। বক্তারা বলেন, রুদ্রপুরের গান্ধী পার্কে আমরণ অনশনে বসা দুই সহোদরা পুস্পা আর প্রেমবতীকে গত সাত মাস ধরে কোম্পানি মালিক অবৈধভাবে কাজে যোগদান বন্ধ করে রেখেছেন কারন তাঁদের পিতার আচমকা মৃত্যু হলে তাঁরা ছুটি নিয়ে তাঁকে শেষ বারের মতো দেখতে যান এবং এহেন মর্মান্তিক পরিস্থিতিতেও মাত্র ৫ দিন পরেই ২ এপ্রিল ২০২৪-এ ফিরে এসে ডিউটিতে যোগদান করেন। কিন্তু কোম্পানি মালিক প্রিন্স ধওয়ান তাঁদের প্রতি সহানুভূতি না দেখিয়ে অত্যন্ত নিষ্ঠুরতার সঙ্গে তাঁদের কাজে যোগ দান বন্ধ করে দেন। যা মানবিক নৈতিকতাকে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিয়ে মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য পাপ ও অপরাধ।

 

এদিন বক্তারা এ কথাও বলেন যে আমরণ অনশনে বসা কৃষ্ণা দেবীর হাত কোম্পানিতে ডিউটি করতে যাওয়ার সময়ে ভেঙে যায়। কোম্পানি মালিক না তাঁর চিকিৎসা করিয়েছেন, না তিনি যে সময়টা কাজ করতে পারেননি সেই সময়ের দেখভালের জন্য কোনও ভাতা দিয়েছেন। এরপর তিনি যখন ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়ে কাজে যোগ দিতে আসেন তখন আজ থেকে নয় মাস আগে তাঁরও কাজে যোগদান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ঘটনা কোম্পানি মালিকের নিষ্ঠুরতা ও অপরাধের স্পষ্ট উদাহরণ।

 

বক্তারা জানান ঠিকা শ্রমিক হিসাবে কাজ করার প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য আমরণ অনশনকারী পিংকি গাংওয়ারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তাঁর উপরে চরম উৎপীড়ন চালানো হয়েছে। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ করেও তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। এদিন বক্তারা আরও বলেন, আমরণ অনশনে বসা স্থায়ী শ্রমিক দেব কুমারের সঙ্গে আরও কয়েক হাজার শ্রমিককে অবৈধভাবে কাজ থেকে ছাঁটাই করে দিয়ে জোর-জবরদস্তি ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমরণ অনশনে বসা অপর এক স্থায়ী শ্রমিক ললিত কুমার সহ ৪৮ জন স্থায়ী শ্রমিককে কোনও শ-কজ নোটিস বা অভিযোগ পত্র না দিয়েই গত প্রায় সাত-আট মাস ধরে অবৈধভাবে কাজে যোগদান বন্ধ করা হয়েছে। কোম্পানি যে ন্যূনতম বেতন ও ন্যূনতম বোনাস আইনের চূড়ান্ত উল্লঙ্ঘন করছেন তাও এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বক্তারা বলেন যে, উপরোক্ত ঘটনাগুলি থেকে প্রমাণিত যে, ডলফিন কোম্পানি প্রাথমিক শ্রম আইন সম্পূর্ণ উল্লঙ্ঘন করে চললেও শ্রম বিভাগ, জেলা প্রশাসন ও উত্তরাখন্ড সরকার এখনও কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ না নেওয়া খুবই চিন্তার ও আশ্চর্যজনক।

 

বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ সামনে রেখে বক্তারা বলেন ডলফিন কোম্পানি মালিকের উপরোক্ত ঘটনাগুলিতে প্রকাশ পাওয়া নির্দয়তা, ছল-চাতুরি ও প্রাথমিক শ্রম আইন উল্লঙ্ঘন করা এবং শ্রম বিভাগ, জেলা প্রশাসন ও উত্তরাখন্ড সরকারের চূড়ান্ত উদাসীনতার জন্যই আমরণ অনশনকারীদের আজ জীবন বিপন্ন।

 

বক্তারা দাবি করেন – জেলাধিকারীকে, অনশনকারীদের প্রাণরক্ষার জন্য দ্রুত হস্তক্ষেপ করে দুই তরফের সমঝোতা লিখিত-পড়িত ভাবে কার্যকর করতে হবে এবং সকল শ্রমিককে কাজে পুনর্বহাল করতে হবে। ডলফিন কোম্পানিতে শ্রমিক স্বার্থে কঠোরভাবে প্রাথমিক শ্রম আইন প্রয়োগ শুরু করতে হবে।

 

তিন দিন আগে শেষ যে খবর পাওয়া গেছে তা অনুসারে ডলফিন কোম্পানির শ্রমিকদের বিরুদ্ধে শ্রম বিভাগ এক অবৈধ নোটিস জারি করেছে যা শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী এবং কোম্পানির স্বার্থ রক্ষাকারী। গত ৪ নভেম্বর এডি্‌এম ও ডিএলসি দ্বারা জেলাস্তরীয় কমিটি উধমসিংহ নগর থেকে এই নোটিস জারি হয়। এই নোটিসে বলা হয়েছে এই বিবাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন ৫০০ জন স্থায়ী শ্রমিকের মধ্যে ৪০ জন শ্রমিক প্রবেশনারি ভিত্তিতে কাজে যোগ দিতে পারেন। যদিও কোম্পানি মালিক এই ৫০০ জন স্থায়ী শ্রমিকের কাজ বন্ধের কোনও আদেশ জারি করেনি এবং তাঁদের পাওনা টাকাও মেটায়নি। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে জেলাস্তরে সবচেয়ে বড় শ্রম আধিকারিক ও জেলা স্তরীয় কমিটির স্থায়ী শ্রমিকদের প্রবেশনারি ভিত্তিতে কাজে পুনর্বহালের পুরোপুরি অবৈধ নির্দেশ এটাই প্রমাণ করে যে বিজেপি-র ডবল ইঞ্জিন সরকার ডলফিন কোম্পানির মালিকের স্বার্থ রক্ষাতেই কাজ করছে এবং ডিএলসি ও জেলা প্রশাসন শ্রম আইন যাতে চালু না হয় তারজন্যই কাজ করে চলেছে।

 

সরকার, শ্রম বিভাগ, কোম্পানি মালিকের শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে চার জন মহিলা ও তিন জন পুরুষ শ্রমিক গত ২৫ দিন ধরে আমরণ অনশন করছেন। অনশনরত মহিলা শ্রমিকদের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।

 

এই পরিস্থিতিতে গত ৯ নভেম্বর উত্তরাখন্ড প্রতিষ্ঠা দিবসে শ্রম বিভাগের বেআইনি পদক্ষেপ ও আমরণ অনশনে বসা সত্ত্বেও শ্রমিকদের হিতবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ডলফিন কোম্পানির শ্রমিকেরা গান্ধী পার্কের অনশনস্থানে দুপুরবেলা সভার আয়োজন করেন। এই সভায় যোগদান করেন ন্যায়ের পক্ষে থাকা সাধারণ মানুষ, সিডকুল অঞ্চলের অগুনতি শ্রমিক এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ নেন।

 

Share this
Leave a Comment