সরকারি প্রকল্প-কর্মীদের অধিকার-বঞ্চনা: সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা


  • May 14, 2023
  • (1 Comments)
  • 861 Views

সরকারি প্রকল্প-কর্মীদের অধিকার-বঞ্চনা: সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা

 

একটি আলোচনা সভা

 

গ্রাউন্ডজিরো-র পঞ্চম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে, ৬ মে ২০২৩, আমরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ হল-এ এ রাজ্যের প্রকল্প-কর্মীদের নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছিলাম। এই আলোচনা সভায় মূল লক্ষ্য ছিল, অঙ্গনওয়াড়ি, আশা, মিড ডে মিল ও ১০০ দিনের কাজের মতো গুরত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির কর্মী, সহায়িকা, শ্রমিকদের কথা মুখোমুখি বসে শোনা, জানা। সভা শেষে আমাদের সকলেরই অনুভূতি এই যে এই প্রকল্প-কর্মীদের যে দায়-দায়িত্ব, হাড়ভাঙা খাটুনি তার তুলনায় তাঁদের ভাতা/ মজুরি অতি সামান্য। এবং এক জন কর্মী/ শ্রমিকের মর্যাদা ও স্বীকৃতিটুকুও তাঁদের নেই। একইসঙ্গে আমাদের লক্ষ্য ছিল, তাঁদের  যে দীর্ঘকালের দাবি—তা তাঁদের নিজেদের মুখ থেকে শোনা। পাশাপাশি, এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকাই বা কী তা বুঝে নেওয়াটাও আর একটি অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।

 

এই আলোচনা সভায় বক্তারা ছিলেন, আশা কর্মী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদিকা ইসমত আরা খাতুন; ওয়েস্ট বেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেলপারস ইউনিয়নের সম্পাদিকা মাধবী পণ্ডিত; অ্যাসোসিয়েশন অব মিড ডে মিল অ্যাসিস্ট্যান্টস (আম্মা)-র উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রিনা নায়েক, পশ্চিমবঙ্গ খেত মজুর সমিতির অম্বরীশ সোরেন ও প্রতিমা সর্দার এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়। গ্রাউন্ডজিরো-র পক্ষ থেকে আলোচনার সূত্রপাত করেন দেবাশিস আইচ।

 

আমরা এই সভার বক্তব্যগুলি আরও অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনুষ্ঠানে বক্তাদের ক্রম অনুসারে তিনটি কিস্তিতে তা প্রকাশিত হবে। আজ প্রথম কিস্তি।

 

প্রারম্ভিক কথা

দেবাশিস আইচ, সাংবাদিক, গ্রাউন্ডজিরো

 

২০১৮ সালের ১৪ মে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমাদের পাঁচ বছর হয়েছে। আমরা ছয়ে পা দিয়েছি। যে সময়ে এই গ্রাউন্ডজিরো করার কথা আমাদের মাথায় ঢুকল এবং স্থির করলাম কী করব, কী করব না—সেই সময়টা আপনাদের যদি স্মরণে থাকে আপনারা জানবেন ২০১৭-তে পেশী প্রদর্শন ও অস্ত্র প্রদর্শনের এক ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটে গিয়েছিল সারা রাজ্য জুড়ে। ২০১৮-তে একই কাণ্ড হয়েছিল এবং একের পর এক রায়ট হয়েছিল। আসানসোল রায়টের কথা আপনাদের মনে আছে। হাওড়ার কথা মনে আছে। তারও আগে ২০১৬ সালে অবশ্য আপনারা দেখেছেন বাদুরিয়া-বসিরহাট—এই সমস্ত কাণ্ডগুলো। আমরা তখন ভেবেছিলাম আমাদের তো নানা অ্যাক্টিভিটি তো আছে, প্রচুর সংগঠন আছে…তারই সঙ্গে একটা সংযোগ রেখে এটা আমাদের অ্যাক্টিভিজম হবে। যে কথাগুলো, যে প্রচারগুলো যে মিথ্যাগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তার প্রতিবাদ করা, তথ্যগুলো তুলে আনা, আমাদের লক্ষ্য ছিল সাধারণ ভাবে ছাত্র-ছাত্রী, যুবক-যুবতীরা যারা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আছে তাদের হাতে এমন কিছু তথ্য বা তত্ত্ব পৌঁছে দেওয়া যায় যেগুলো নিয়ে তারা কাজ করতে পারবে।

 

আপনারা জানেন, সংবাদমাধ্যমে ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে যে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক যেটা ফ্রান্সের একটি সংগঠন [রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স] সারা পৃথিবীর সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক কী সেটা [প্রকাশ করে]… ২০১৮ সালে এই সূচকে [১৮০টি দেশের মধ্যে] আমাদের দেশ ছিল ১৩৮তম। আর এই ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে আমরা পৌঁছেছি ১৬১-তে। ২৩ ধাপ নেমেছি। আর গত বছরের তুলনায় ১১ ধাপ নেমেছি। এমন একটা সময় সাংবাদিকতা করা, স্বাধীন সাংবাদিকতা করা বেশ কঠিন। সেটা যারা প্রতিস্পর্ধা দেখাতে চান, দেখান; কিংবা সত্যি কথা বলতে চান, বলেন তাঁরা হাড়ে হাড়ে জানেন।

 

এই কথাগুলো আপনারা সবাই জানেন। আমাদের নিজেদের কথা যদি বলি, সামান্য তথ্য মাত্র…সেটা হচ্ছে এই যে সময় পাঁচ বছরে আমরা মাসে সাড়ে তিন লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছি। আহামরি কোনও সংখ্যা নয়। এবং একটা সময় চার লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছেছিল কিন্তু নেমে এসেছে। আর একটা বিষয় আমরা কখনও ‘বুস্টিং’ করার চেষ্টা করিনি…এটা সাধারণ ভাবেই হয়েছে। আর একটি তথ্য যে পাঁচ বছরে আমরা ১৭৮০টি কন্টেন্ট দিতে পেরেছি। অর্থাৎ, বছরে [গড়ে] ৩৫৬টা। এর নানা কারণ আছে। আমাদের ক্লান্তি আছে, আমাদের লোকবলের অভাব আছে, লেখকের কাছে পৌঁছানো আছে, তাঁদের দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া আছে—এই সমস্ত জায়গাগুলোতে কোথাও একটা গাফিলতি আছে। কিন্তু কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রেও আমাদের কোথাও খুঁতখুঁতনি আছে।…সে যাই হোক এটা আমাদের ১৭৮০-তে পৌঁছানোর বৃত্তান্ত…আমরা চেষ্টা করব, এবং আপনারাও, আশা করি যারা শুভানুধ্যায়ী, যারা লেখেন, আরও নিয়মিত লিখবেন। যারা লিখতে চান অবশ্যই আপনাদের তরফ থেকেও একটা যোগাযোগ থাকবে।

 

ইসমত আরা খাতুন

রাজ্য সম্পাদিকা, আশা কর্মী ইউনিয়ন 

 

 

রাজ্য তথা দেশ জুড়ে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তাই তাঁদের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা কতটা, তাঁদের অধিকার-বঞ্চনার বিষয়টা কেমন, তা আজকের দিনে আলোচনা করা জরুরি। আমাদের এই রাজ্যে সরকারি প্রকল্প-কর্মীর সংখ্যা প্রায় ছ’লক্ষ। তার মধ্যে মিড ডে মিল কর্মী রয়েছেন ২ লক্ষ ৩২ হাজার। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী রয়েছেন ১ লক্ষ ৭০ হাজার। ৭০ হাজারেরও বেশি রয়েছেন আশা কর্মীরা। এই যে বিপুল সংখ্যক কর্মী রয়েছেন, তাঁরা প্রায় সকলেই মহিলা কর্মী।

 

আজ এই আলোচনায় আমি আশা কর্মীদের নিয়েই কথা বলব। তাঁদের কাজ প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া। এর সঙ্গে যেহেতু জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে, তাই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পও বটে। একই সঙ্গে গ্রাম ও শহরে পরিষেবা দিয়ে থাকেন আশা কর্মীরা। তাঁদের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হল প্রসূতি মহিলার যত্ন নেওয়া, এবং তিনি যাতে সুস্থভাবে একটি শিশুর জন্ম দিতে পারেন তা নিশ্চিন্ত করা। বাচ্চার জন্মের পরে তার স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিকে নজর রাখার কাজও এক জন আশা কর্মীর। অর্থাৎ, শিশু মৃত্যুর হার ও মায়ের মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণ করা। এখানেই শেষ নয়। বাচ্চার জন্মের পরে তার স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিকে নজর রাখার কাজও এক জন আশা কর্মীর। জনগণকে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং পাশাপাশি সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করাও তাঁদেরই কাজ।

 

২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ‘আশা প্রকল্প’ চালু করেছিল। এতগুলো বছর পরে দেখা যাচ্ছে যে ভারতের শিশু মৃত্যু ও মায়ের মৃত্যুর হার বেশ কমেছে। অন্যদিকে, দিন-রাত অক্লান্ত ভাবে যাঁরা এর পিছনে কাজ করে চলেছেন, সমস্ত পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন, তাঁরা আজ কোথায় দাঁড়িয়ে? তাঁদের জীবনযাত্রার মান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে? গণতান্ত্রিক জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র আর তার সরকারের এই সমস্ত কর্মীদের প্রতি দায়িত্ব কতটা হওয়া উচিত তার নিরিখে যদি বিচার করা হয়, তাহলে দেখাই যাচ্ছে যে কর্মীরা প্রতিদিন বঞ্চনার সম্মুখীন হচ্ছেন। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে কর্মীদের কাজের পরিধি ব্যাপক বেড়ে গেছে। সম্প্রতি, কোভিডকালে আশা কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিষেবা দিয়ে গিয়েছেন। আর এই ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে প্রথম সারির যোদ্ধা হিসেবে আশা কর্মীদের গুরুত্ব। কেন্দ্র হোক বা রাজ্য সরকারের দায়বদ্ধতা এক জন আশা কর্মীর দায়বদ্ধতা হয়ে উঠেছে। অথচ তাঁদের অধিকারের দিকটা সব সরকারের কাছেই উপেক্ষিত।

 

আজকাল আশা কর্মীদের কাজ শুধু মা-শিশুদের স্বাস্থ্যরক্ষা নয়। বরং, সরকারি আরও নানা প্রকল্পের কাজ একের পর এক চেপেছে আশা কর্মীদের ওপরে। যেহেতু, প্রতিটা জেলায় তৃণমূল স্তরে একেবারে সংগঠিত বাহিনী হিসাবে পাওয়া যায় এঁদের। তাই গাছ লাগানো, মশা তাড়ানো থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় পরিষেবা দিতে যাওয়াও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু তার তুলনায় তাঁদের বেতন কতটুকু? রাজ্য সরকারের সমস্ত যোজনাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে তাঁদের। অথচ, এই কাজের জন্য বহুত কর্মসংস্থান হতে পারত। আবার কেন্দ্রীয় সরকারের আবাস যোজনার কাজও করতে হচ্ছে আশা কর্মীদেরই। সরকারি যোজনাগুলির রাজনৈতিক টানাপড়েনের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী থেকে তাঁদের শাসানো হচ্ছে যোজনার সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য। আবাস যোজনার কাজ করতে গিয়েই মানসিক চাপে আত্মহত্যা করতে হয় উত্তর ২৪ পরগনার এক আশা কর্মী রেবা বিশ্বাসকে। অতিরিক্ত কাজের চাপ কর্মীদের কাছে বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা আমাদের সংগঠন অর্থাৎ আশা কর্মী ইউনিয়নের পক্ষ  থেকে এ নিয়ে লাগাতার দাবি করছি।

 

যে আশা কর্মীরা মা ও শিশুর যত্ন নেয় তাঁদের নিজেদের মাতৃত্বকালীন ছুটি মাত্র ৪৫ দিন। কোনও দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দু-তিন মাস কাজে ছেদ পড়লে অর্থ সাহায্যও জোটে না। এমনকি বেতন নিয়েও টানাটানি হয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের বার বার দাবি জানাতে হচ্ছে। বছর বছর মে দিবস পালিত হয় ঠিকই কিন্তু, আমাদের সমাজে শ্রমিকদের, কর্মীদের নিরাপত্তা আজও অধরাই। সরকারি কাজে তৃণমূল স্তরে পরিষেবা দেওয়ার দায় আমাদের রয়েছে, তবুও সরকারের চোখে আমরা স্বেচ্ছাসেবী। দাবি জানাতে গেলে যতটুকু ভাতা আমরা পাচ্ছি তা না পোষালে কাজ ছেড়ে দেওয়ার হুমকি আসে। ক্ষমতায় যে সরকারই আসুক না কেন, তাদের কাছে একটাই প্রশ—এই পরিস্থিতি পালটানোর জন্য কিছু কি করা যায় না?

 

আজ চারিদিকে কাজের জন্য হাহাকার। সেখানে যা পাওয়া যায় তাই আমরা করতে বাধ্য হচ্ছি। নিজেকে নিংড়ে দিয়ে কাজ করার পরও কাজের আর্থিক সুরক্ষা নেই। করোনা-পর্বে সরকার ঘোষণা করেছিল, যে সমস্ত কর্মীরা কাজ করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হবেন তাঁদের এক লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্য দেওয়া হবে। প্রায় ১৫ হাজার কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মধ্যে এ যাবত বড়জোড় দেড় থেকে দু’হাজার কর্মী সেই টাকা পেয়েছেন। তারপর অতিমারি উত্তীর্ণ হলে সরকার সেই সাহায্যটুকু বন্ধ করে দেয়। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার অতিমারির সময়ই ১৫ মাসে ১৫ হাজার টাকা করে আশা কর্মীদের অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। সে টাকার মধ্যে ন’হাজার টাকার বেশি কেউ পায়নি। আমাদের দাবিগুলো নিয়ে আমরা স্বাস্থ্যভবন রাজভবন, নবান্ন বহু জায়গায় গিয়েছি। রাস্তা আটকাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধেছে। কাজের কাজ কিছু হয়নি। চার, সাড়ে চার হাজার টাকার বিনিময়ে সরকার আমাদের ঘাড়ে বিপুল কাজ চাপিয়ে দেয়। ভারতে অনেক রাজ্য রয়েছে যেখানে এই বেতন ভাতার অঙ্কটা বেশি।

 

সরকারি নির্দেশে মহিলাদের স্যানিটারি ন্যাপকিনও বিক্রি করছেন আশা কর্মীরা। কিন্তু, লাভের মার্জিন মাত্র এক টাকা। এই চড়া দামের বাজারে তাতে আজকাল কী হয়? যাঁরা পরিষেবা দেবেন তাঁদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর জরুরি। সেইটুকু সময় জোটে না এক জন আশা কর্মীর। সাপ্তাহিক কোনও ছুটি নেই। ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। আশা কর্মীরা মূলত বিবাহিত। কাজের চাপে পরিবারের জন্য তাঁরা সময় দিতে পারছেন না। সেই নিয়ে গার্হস্থ্য অশান্তিও তৈরি হচ্ছে। অতিরিক্ত চাপের কারণে তাঁরা আজ শারীরিক এবং মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত।

 

এই নিয়ে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা আন্দোলন করে চলেছি। গ্রাম ও শহর মিলিয়ে সংগঠনের মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় ষাট হাজারের কাছাকাছি। প্রতিটি লড়াইয়ে এই সংখ্যক সদস্যরা সংগঠনের পাশে থাকেন। আশা কর্মীদের একটা বড় অংশই অর্থনৈতিক ভাবে অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত। এত অল্প পয়সার বিনিময়ে কাজ করতে আসা মহিলারা বাধ্য হয়েই আজ রাস্তায় নামছে। আমাদের সংগঠন থেকে এইসব মহিলাদের লড়াইয়ে ভরসা জোগাচ্ছি। চেষ্টা চালাচ্ছি যাতে তাঁদের মনোবল আরও দৃঢ় করা যায়। সংগঠনের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি আশা কর্মীদের সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীর স্বীকৃতি দেওয়া হোক। তাঁদের বেতন ভাতা বর্তমান বাজারদরের নিরিখে ন্যূনতম ২৬ হাজার টাকা করা, সাপ্তাহিক ছুটি ও মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া চাই। পেনশন, পিএফ, গ্র্যাচুইটি, ইএসআই-সহ সমস্ত সরকারি সুবিধা তাঁদের দেওয়া হোক। যাতে তাঁরা তাঁদের পরিবার নিয়ে সুরক্ষিত জীবন কাটাতে পারে। এই উদ্দেশ্যে আমাদের লড়াইয়ে আপনাদের সহযোগিতা কাম্য।

 

 

Share this
Recent Comments
1
  • comments
    By: Ps Mukherjee on May 19, 2023

    জনস্বাস্থ্য কর্মীদের প্রতি নূন্যতম সহযোগিতা করা সরকারের প্রাথমিক দ্বায়িত্ব। উল্টে এ দেশে নিম্নতর স্তরে কাজ করা কর্মীদের ওপর জমিদার সুলভ শোষন চালায় আমলাতন্ত্র এবং তাদের প্রভু রক্ষনশীল সরকার বাহাদুর- কেন্দ্র অথবা রাজ্য উভয় পরিস্থিতিতে। এক অদ্ভুত আঁধার। উচ্চশাপ্রত্যাশী মধ্যবিত্তরা আশা বা অঙ্গন‌ওয়ারী কর্মীদের চলমান সমাজে কি ভূমিকা বা কোন ক্ষেত্রে তারা কাজ করেন, সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ওয়াকিবহাল নযন, বড়জোড় এ্রঁদের শ্রেনীদৃষ্টিতে এই সমস্ত কর্মীরা
    নিম্নবর্গীয় সেবিকার বেশি কিছু নয়। সুতরাং বিপুল সংখ্যক সামাজিক কর্মীদের দৈনন্দিন সমস্যার কথা সমাজের বৃহত্তর পরিসরে ঠাঁই পায় না। একমাত্র বামপন্থী কিছু দল এদের সমস্যার কথা তুলে ধরার চেষ্টা করে যার অধিকাংশ‌ই দিনের শেষে আমলাতন্ত্র বাজে কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দেয়।

Leave a Comment