প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের সঙ্গে ঘটতে থাকা লিঙ্গভিত্তিক হিংসার চিত্রটি বাস্তব। অথচ লিঙ্গভিত্তিক হিংসার বিরুদ্ধে আন্দোলনে, সমীক্ষায় বাদ পড়ে যান তাঁরা। লিখলেন সুদর্শনা চক্রবর্তী।
উদাহরণ ১
১৯ বছরের লতা (নাম পরিবর্তিত) হেমব্রম ঝাড়ঝন্ডের এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা। লতার প্রতিবন্ধকতা উচ্চতাজনিত, তিনি ‘বামন’। বাড়িতে রয়েছেন মা, বাবা, বোন, দাদা, বৌদি। সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছেন। খুবই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তারপর স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন কারণ সেখানে সবাই তাঁকে উত্যক্ত করত। তাঁর শরীরে ব্যথা হওয়া সত্ত্বেও বাড়িতে তাঁকে দিয়েই সব সময়ে ঘর ঝাঁট দেওয়া, মোছার কাজ করানো হয়। বলা হয়, কাজ না করলে শরীর ঠিক থাকবে না। প্রতিবন্ধী পেনশন পান। ভয় পান নিজের ছোট বোনকে কারণ সে না কি সেই পেনশনের টাকা নিয়ে নেওয়ার জন্য বকাঝকা করে। এবং গ্রামেরই এক ব্যক্তি তাঁকে যৌন হেনস্থাও করেছেন একবার। কিন্তু সে কথা পরিবার বা অন্য কাওকেই তিনি বলতে পারেননি। বাড়িতে তাঁর কথা, মতামতের কোনও গুরুত্ব নেই।
উদাহরণ ২
কলকাতায় এক পাব্লিক মিটিং-এ দেখানো হয় একটি শর্ট ফিল্ম। যার বিষয় ছিল, কীভাবে ভাব বিনিময়ের ক্ষেত্রে জটিল চাহিদা রয়েছে এমন একজন মেয়ের উপরে তার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মানুষটি হিংসাত্মক আচরণ করছেন, তাকে মারধোর, তার চাহিদা-প্রয়োজন না বুঝে তাকে শারীরিক অত্যাচার করা ইত্যাদি চলে দিনের পর দিন। তার মা, বাবাকে কাওকেই মেয়েটি নিজের উপরে ঘটা অত্যাচারের কথা বোঝাতে পারেন না। এই হিংসা তাকে সহ্য করতে হয় দীর্ঘ সময়। শেষ পর্যন্ত মেয়েটির মা বুঝতে পারেন ও এই হিংসা বন্ধ হয়। শর্ট ফিল্মটি দেখানোর পর মিটিং-এ উপস্থিত শ্রদ্ধা খাটোর তাঁর কমিউনিকেশন বোর্ড ব্যবহার করে জানান, সিনেমায় দেখানো হিংসার ঘটনাটি তার নিজের জীবনের। শ্রদ্ধা নিজের উপর ঘটা হিংসার কথা সকলের সামনে তুলে ধরেছেন। কিন্তু সকলে পারেন না।
উদাহরণ ৩
২০১৩ সালে কলকাতায় ঘটে যায় ভাব বিনিময়ে জটিল চাহিদা রয়েছে এমন এক তরুণীর সঙ্গে যৌন হেনস্থার ঘটনা। সেই তরুণী দুই নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে থিয়েটার দেখে ফেরার সময় অন্ধকার পথে তাকে যৌন নিগ্রহ করা হয়। মেয়েটি কাঁদতে থাকেন, বাড়িতে এসে ইশারায় মা-কে ঘটনার কথা জানান। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও পরে তাঁর শরীরে কালশিটে ও আঁচড়ের দাগ থাকায় ও তিনি ক্রমাগত কাঁদতে থাকায় বাবা-মা থানায় নিয়ে যান। এই ঘটনায় মেয়েটির জবানবন্দী নথিবদ্ধ করার সময় আইন অনুসারে একজন স্পেশাল এডুকেটর-এর সাহায্যে তা হওয়ার কথা, কিন্তু পুলিশ তা করতে অস্বীকার করে। সেই তরুণী যা বলেন, পুলিশ তা বুঝতে পারে না এবং কেসটি এমনভাবে সাজানো হয় যে অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যায়।
উদাহরণ ৪
কলকাতার ২০১৮ সালের ঘটনা। একটি ১১ বছরের কিশোরীকে প্রতিবেশী এক যুবক নিয়মিত ফুঁসলিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করে ও নিয়মিত নির্যাতন করতে থাকে। কিশোরী মেয়েটি কথা বলতে পারে না। বিষয়টি বাড়িতে জানালে তাকেই বকাবকি করা হয়। স্কুলে শিক্ষিকাদের সন্দেহ হলেও বাবা-মা স্বীকার করতে চাননি। অবশেষে মেয়েটির রক্তপাত শুরু হয় ও জরায়ু বাইরে বেরিয়ে এলে বাবা-মা ভয় পেয়ে পুলিশে রিপোর্ট করেন। ততদিন অভিযুক্ত পালিয়ে গেছে। কেসটি এখনও চলছে।
উদাহরণ ৫
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমান্ডিতে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী মহিলার সঙ্গে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে ছিল নানাবিধ সামাজিক, পারিবারিক জটিলতা। খুবই স্বল্প পরিসরে প্রতিবন্ধী অধিকার আন্দোলন কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হন, প্রতিবাদ জানান। কিন্তু বৃহত্তর নারী আন্দোলনে বা গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সেভাবে না হয় প্রতিবাদ, না হয় আলোচনা। সরকারের উপর কোনও ভাবেই চাপ তৈরি করা যায়নি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে। পরবর্তী সময়ে তারা দাবি করে বিষয়টি দেখা হচ্ছে কিন্তু সেই প্রতিবন্ধী নারীর কোনও খোঁজ পরবর্তী সময়ে পাওয়া যায়নি।
উদাহরণ ৬
কলেজ পড়ুয়া পুজা (নাম পরিবর্তিত) শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধকতা ও যৌনতা বিষয়ক এক সর্বভারতীয় অনলাইন ওয়ার্কশপ-এ তিনি বলছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর প্রতিবন্ধকতার প্রতি আদৌ গুরুত্ব দেন না। তাঁর উপস্থিতিতে যখন কোনও বিষয়ে পারিবারিক আলোচনা হয়, তখন সবাই নিজেদের মধ্যেই কথা বলেন, সাইন ল্যাঙ্গোয়েজ ব্যবহার করেন না। তাঁর তাতে অংশগ্রহণও জরুরি বলে মনে করেন না। নিজের প্রতি হওয়া এই বৈষম্য নিয়ে তিনি সচেতন, বাকিরা নন।
লিঙ্গভিত্তিক হিংসা ও বৈষম্যর আলোচনায় অদৃশ্য রয়ে যান প্রতিবন্ধী নারীরা
অধিকাংশ প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাই নিজেদের সঙ্গে ঘটা হিংসা, বৈষম্যের কথা বলতে পারেন না। বিশেষত যাদের ভাব বিনিময়ের ক্ষেত্রে জটিল চাহিদা থাকে। তাঁরা যেভাবে নিজেদের সঙ্গে ঘটা হিংসা, অত্যাচার, বৈষম্যের কথা বোঝাতে পারেন, সেই অগমেন্টেটিভ ও অল্টারনেটিভ কমিউনিকেশন শেখার বা জানার পরিকাঠামো, ইচ্ছে কোনওটাই সামাজিকভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নেই বা থাকলেও সীমিত। ফলে এই মহিলাদের সঙ্গে ঘটতে থাকা হিংসা সামগ্রিকভাবে মেয়েদের সঙ্গে ঘটা লিঙ্গভিত্তিক হিংসাকে কেন্দ্র করে যে আলোচনা তার বাইরে রয়ে যায়।
প্রতিবন্ধী নারী প্রতি লিঙ্গভিত্তিক হিংসার ঘটনায় আইন, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থার ভূমিকা
প্রতিবন্ধী মহিলাদের সঙ্গে ঘটতে থাকা হিংসার ক্ষেত্রে দৃশ্যমানতা না থাকা এবং বিষয়টির প্রতি সামাজিক সচেতনতার অভাব এই ধরনের ঘটনায় আইনি ও প্রশাসনিক সহায়তা না পাওয়া, ন্যায় না পাওয়ার এক অন্যতম বড় কারণ।
ভারতের আইনে আইনি সহায়তার উল্লেখ থাকলেও ঘটনাগুলি যেহেতু পুলিশ-প্রশাসন পর্যন্তই পৌঁছায় না, অভিযোগ দায়ের হয় না, ফলে আইনি পরিসরেও আসে না। পুলিশ, আদালত সর্বত্র আলাদা আলাদা প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করার জন্য, আইনি প্রক্রিয়া চালানোর জন্য স্পেশাল এডুকেটর, সাইন ল্যাঙ্গোয়েজ ইন্টারপ্রেটার, প্রতিবন্ধী-বান্ধব পরিকাঠামো থাকার কথা। এই সমস্ত কিছু রাখার দাবি তখনই তোলা সম্ভব যখন প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের দৃশ্যমানতা বাড়বে। অভিযোগই যেখানে গোপন রাখা, দাবিয়ে রাখা হয়, সেখানে থানা বা আদালতে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলারাও নিজেদের সঙ্গে ঘটা হিংসার কথা জানাতে পৌঁছাতে পারেন না, পারলেও নানাবিধ বাধায় তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ন্যায় পান না।
নির্ভয়া কান্ড পরবর্তী সময়ে পরিবর্তন এসেছিল ভারতীয় ফৌজদারি আইনে, সেখানে প্রতিবন্ধী নারীদের কথা মাথায় রেখে এসেছিল বেশ কিছু সদর্থক পরিবর্তন। এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রতিবন্ধী অধিকার আন্দোলনের ভেতরে নারীবাদী চিন্তা নিয়ে কাজ করা অধিকার কর্মীদের নিরন্তর অ্যাডভোকেসি-র ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
এখনও অধিকাংশ পুলিশ থানা (মহিলা পুলিশ থানা সহ) প্রতিবন্ধীদের জন্য সুগম্য নয়। এবং সেখানে প্রতিবন্ধী মহিলাদের জন্য সাইন ল্যাঙ্গোয়েজ ইন্টারপ্রেটর, স্পেশাল এডুকেটর-এর ব্যবস্থা থাকা আইনত বাধ্যতামূলক সে বিষয়ে পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশ কর্মীরা অবগত নন। তাঁদের কাছে যে এই তথ্যটুকু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেই, তা প্রমাণ করে এই বিষয়ে সচেতনতা প্রচার ও প্রসারে ও তথ্য পৌ্ঁছে দেওয়ায় সরকারি স্তরে উদাসীনতা গাফিলতি, কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় স্তরেই।
২০১২ সালের পকসো (প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্ট) ও ২০১৩–এর তৎকালীন সিলএএ (ক্রিমিনাল ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট) অনুযায়ী প্রতিবন্ধকতাযুক্ত কোনও শিশু বা মহিলা যখন যৌন হেনস্থার অভিযোগ করছেন তখন রাজ্যর নির্দিষ্টভাবে তাতে হস্তক্ষেপ করা বাধ্যতামূলক। এই দু‘টি আইন অনুযায়ীই রাজ্য প্রশাসনকেই অভিযোগকারীর জন্য স্পেশাল এডুকেটর ও সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার–এর পরিষেবার ব্যবস্থা করতে হবে।
২০২১-এর জুলাই মাসে খাস কলকাতার একটি নির্দিষ্ট থানা এলাকায় একজন মূক ও বধির তরুণী তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে এই মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই নির্দিষ্ট থানার পুলিশ সেই তরুণীকে কোনও সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার (অনুবাদক)-এর পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হন। যেহেতু তরুণীর বক্তব্য তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক যথাযথভাবে বুঝে উঠতে পারেননি, তাই তাঁর ধর্ষণের অভিযোগও থানায় নথিভুক্ত হয়নি। ঘটনাটি সে সময়ে হাইকোর্ট অবধি গড়ায়। হাইকোর্ট-এর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে সেই তরুণীকে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার-এর পরিষেবা দেওয়া হয় এবং তিনি প্রথম অভিযোগ করার চার মাস পরে ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়।
পচিমবঙ্গের প্রতিবন্ধী অধিকার নিয়ে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে দীর্ঘ বহু বছর ধরে অ্যাডভোকেসি করা সংস্থা শ্রুতি ডিসএবিলিটি রাইটস সেন্টার-এর উদ্যোগে সে সময়ে ১০০ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে ২০২১-এর ৩ ডিসেম্বর প্রতিবন্ধী দিবসের দিন পাঠানো চিঠিতে স্পষ্ট করে জানানো হয় যে, ২০১২ সালের পকসো (প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্ট) ও ২০১৩-এর সিলএএ (ক্রিমিনাল ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট) অনুযায়ী প্রতিবন্ধকতাযুক্ত কোনও শিশু বা মহিলা যখন যৌন হেনস্থার অভিযোগ করছেন তখন রাজ্যর নির্দিষ্টভাবে তাতে হস্তক্ষেপ করা বাধ্যতামূলক। এই দু’টি আইন অনুযায়ীই রাজ্য প্রশাসনকেই অভিযোগকারীর জন্য স্পেশাল এডুকেটর ও সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার-এর পরিষেবার ব্যবস্থা করতে হবে। চিঠিতে জানানো হয় যে সেই নির্দিষ্ট থানার নির্দিষ্ট ঘটনাটিতে অত্যাচারিত তরুণীটিকে এই সহায়তা দিতে না পারা খুবই অবাক করার মতো।
মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয় পশ্চিমবঙ্গে সেই সময়ে রিহ্যাবিলেটশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (আরসিআই)-তে নথিভুক্ত আছেন এমন সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার-এর সংখ্যা ৬২। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ চাইলেই আরসিআই-তে যোগাযোগ করে স্পেশাল এডুকেটর ও সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটারদের নামের তালিকা পেতে পারেন। পকসো-তে এও বলা আছে যে, প্রতিটি রাজ্যে এ রকম তালিকা জেলাভিত্তিক থাকতে হবে এবং তাদের পেশাগত পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে যে সাম্মানিক দেওয়ার কথা তার জন্য বাজেটও রাখতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠিতে অনুরোধ করা হয় যেন পকসো ও সিএলএএ-এ উল্লেখিত এই ধারাগুলি যাতে সঠিকভাবে প্রণয়ন করা হয় তা নিশ্চিত করতে যাতে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত শিশু ও মহিলারা ন্যায় পান।
এই ঘটনার এক মাসের মধ্যেই আবারও খাস কলকাতায় এক প্রতিবন্ধী মহিলাকে গাড়ির মধ্যে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এই নৃশংস ঘটনার পরেও অভিযোগকারী সেই মহিলাকে দু’টি থানা থেকে অভিযোগ না নিয়েই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ঘটনা যে থানা এলাকার সেখানে নথিভুক্ত করা হয় বলে জানা যায়।
তবে যা উল্লেখযোগ্য তা হল সেই থানায় পুলিশ কর্মীদের উদ্যোগে প্রথম থেকেই আইন মেনে অভিযোগকারীর বক্তব্য সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার-এর মাধ্যমে নথিভুক্ত করা হতে থাকে। গাড়ি চিহ্নিত করা থেকে অভিযোগকারীর মেডিক্যাল পরীক্ষা প্রতিটি ধাপেই সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার উপস্থিত ছিলেন। না, এই ঘটনা ব্যতিক্রম নয়, এটাই নিয়ম ও আইন মেনে হওয়ার কথা। অথচ যেহেতু প্রশাসনিক উদাসীনতায় এগুলি প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়, সেইজন্য এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলে তা খবর তৈরি হয়। এবং কোনও না কোনওভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিটিরও এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়।
ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতি উদাসীনতা
ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার – লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার সার্ভাইভার মহিলাদের একই ছাদের তলায় মেডিকো-লিগ্যাল পরিষেবা দেওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকারের বিশেষ প্রকল্প। সারা দেশের সব রাজ্যের প্রতিটি জেলায় নির্দিষ্ট সরকারি হাসপাতালের ভেতরে আলাদা করে থাকার কথা এই সেন্টার। রয়েছেও। (যদিও পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় নেই)। রাজ্য বিশেষে পরিষেবার মানের হেরফের রয়েছে অবশ্যই। তবে সম্প্রতি এক ক্ষেত্র সমীক্ষার (ফিল্ড ভিজিট)কাজে এই প্রতিবেদক উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খন্ড ও পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার-এর তথ্য জানার পর যে বিষয়টি সামনে উঠে এসেছে তা হল, এই সেন্টারগুলির কোনওটিই প্রতিবন্ধী-বান্ধব নয়। সেখানে প্রতিবন্ধী মহিলাদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য একেবারেই কোনও ব্যবস্থা নেই। সেন্টার-এর সুপারভাইজার থেকে শুরু করে কর্মী – কেস ওয়ার্কার, কাউন্সেলার, চিকিৎসা কর্মী, পুলিশ কর্মী, অন্যান্য পরিষেবা প্রদানকারী – কেউই বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলারা যদি সার্ভাইভার হিসাবে সেন্টারে আসেন, তাহলে তাদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষিত নন। নেই সচেনতনতা। এই সেন্টারগুলি শারীরিক প্রতিবন্ধী মহিলাদের জন্য সুগম্য নয়, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী মহিলাদের জন্য সাইন ল্যাঙ্গোয়েজ প্রশিক্ষকের পরিষেবা নেই, নেই স্পেশাল এডুকেটর-এর, মানসিক প্রতিবন্ধী মহিলাদের জন্য উপযুক্ত পরিষেবা কোনও কিছুই উপলব্ধ নয় সেন্টারগুলিতে। এই সেন্টারগুলিতে যেহেতু পাঁচ দিনের জন্য শেল্টারের ব্যবস্থাও থাকে এবং ক্ষেত্র বিশেষে সন্তানসহ, সেক্ষেত্রে কোনও সার্ভাইভার মহিলা প্রতিবন্ধী সন্তান সহ কীভাবে সেন্টারে থাকবেন সে বিষয়েও সেন্টার পরিচালনকারীরা অবহিত নন।
প্রতিবন্ধী মহিলাদের প্রতি ঘটতে থাকা লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য ও হিংসা সম্পর্কে সচেতনতার অভাব এতটাই যে লক্ষ্ণৌর মডেল ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে বলা হয় কোনও হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী মহিলা আসলে তাঁর বক্তব্য শুনতে বা কাউন্সেলিং করতে নির্দিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারীরা নির্দিষ্ট ঘরের বাইরে এসে কথা বলবেন। এক্ষেত্রে সেই মহিলার গোপনীয়তা, স্বাচ্ছন্দ্য ইত্যাদি বিষয়গুলি গ্রাহ্য করা হয় না! পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সেন্টারে বলা হয় মানসিক প্রতিবন্ধী মহিলাদের সেন্টারে নয় তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট হোমে যেতে হবে।
অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই ক্ষেত্র সমীক্ষার ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারগুলিতে প্রতিবন্ধী মহিলা সার্ভাইভারদের কেস নথিভুক্ত হওয়ার সংখ্যা শূন্য বা নগন্য। অথচ এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন জাতীয় স্তরের সমীক্ষায় উঠে এসেছে লিঙ্গভিত্তিক হিংসার সার্ভাইভার মহিলারা সামাজিক-পারিবারিক বাধা পেরিয়ে পুলিশের কাছে কেস নথিভুক্ত করতে কম সংখ্যায় গেলেও হাসপাতালে পরিষেবা নিতে যান। যে কারণে এই সেন্টারগুলি সরকারি হাসপাতালের ভেতরে গড়ে তোলা হয়।
প্রতিবন্ধী নারী ও বহুস্তরীয় লিঙ্গভিত্তিক হিংসা ও বৈষম্য
লিঙ্গভিত্তিক হিংসা প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের সঙ্গে হওয়া সহিংসতার মধ্যে অন্যতম। যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটান তারা আসলে ধরেই নেন প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলারা অভিযোগ করলে তা গ্রাহ্য হবে না, তাঁরা এতটাই প্রান্তিক ও পরনির্ভরশীল যে নিজেদের সঙ্গে হওয়া হিংসা-হেনস্থার কথা জানাতে সাহস পাবেন না। ফলে প্রতিবন্ধকতাকে দুর্বলতা ভেবে নিয়ে তাঁদের উপর হিংসা চলতে থাকে।
অন্যদিকে পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে যেহেতু মনে করা হয় যে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলারা, ‘অন্য মহিলাদের মতো নন’ – তাই তাঁদের উপর কোনওরকম লিঙ্গভিত্তিক হিংসা ঘটতেই পারে না। এই ধরনের নির্যাতনের কথা তাই তাঁরা জানালেও, শারীরিক নিগ্রহের প্রমাণ দেখালে, বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাই তাঁদের উপেক্ষা করার, মেনে না নেওয়ার মানসিকতাই বেশি চোখে পড়ে।
পরিবারের মানুষেরা এগুলিকে সামাজিক লজ্জা, প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদেরই সমস্যা ইত্যাদি ভেবে গোপন রাখেন। পরিবারের পাশাপাশি প্রশাসনও এই বিষয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও পদক্ষেপ নেয় না। দায়ের হয় না তাঁদের অভিযোগ। তথ্য সামনে না আসায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার উদাহরণও তৈরি হয় না।
মহিলা, প্রতিবন্ধী মহিলা, তার উপরে নির্দিষ্ট জাতি-ধর্ম-বর্ণের পরিচয়, পিছিয়ে পড়া শ্রেণী, সুবিধাবঞ্চিত আর্থ-সামাজিক অবস্থান – এইসবই তাঁদের উপরে ঘটতে থাকা লিঙ্গভিত্তিক হিংসার কথা আড়ালে রেখে দেয়। প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের বহুস্তরীয় প্রান্তিকতা এভাবেই তাঁদের উপর লিঙ্গভিত্তিক হিংসা একদিকে যেমন বাড়াতে থাকে, তেমনি এই নিয়ে তাঁদের অভিযোগকেও অদেখা করে দেয়। সব মিলিয়ে প্রতিবন্ধী নারীদের সঙ্গে ঘটতে থাকা লিঙ্গভিত্তিক হিংসা ও বৈষম্যর বিষয়টি রয়ে যায় অদৃশ্য, অনথিবদ্ধ, অনালোচিত। তাঁদের কথাগুলো বৃহত্তর পরিসরে অকথিত, অশ্রুত রয়ে যায়।
সেই কারণেই প্রতিবন্ধী অধিকার আন্দোলনের বহু অ্যাডভোকেসি সত্ত্বেও ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর মহিলাদের সঙ্গে ঘটা সহিংসতার পরিসংখ্যানেও আলাদা করে প্রতিবন্ধী মহিলাদের পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। এবং এই দৃশ্যমানতা না থাকা, তথ্য না থাকাই পুলিশ, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থায় প্রতিবন্ধী নারীর সঙ্গে ঘটা সহিংসতার কেস নথিবদ্ধ হওয়া ও ন্যায় পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা তৈরি করে।
লিঙ্গভিত্তিক হিংসার মধ্যে ঋতুস্রাব, প্রজনন স্বাস্থ্য ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী মহিলাদের যেভাবে অত্যাচারিত হতে হয় তা সামনে আসে না। যাতে গর্ভধারণ করতে না পারে তারজন্য বিনা অনুমতিতে, তাঁকে না জানিয়েই জরায়ু বাদ দিয়ে দেওয়া, ঋতুকালীন সময়ের স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তাঁকে অস্বাস্থ্যকর ভাবেই রেখে দেওয়া ইত্যাদি এ দেশের প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের জীবনের বাস্তব। এছাড়া ধরে নেওয়া হয় তাঁর যৌন চাহিদা, বিয়ে করা ও সন্তান ধারণের ইচ্ছা থাকবে না।
বৃহত্তর মহিলা আন্দোলনে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত নারীদের সঙ্গে ঘটতে থাকা বহুস্তরীয় লিঙ্গভিত্তিক হিংসার বিষয়টি আমাদের দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আলোচনার বাইরে রয়ে যায়। অন্যদিকে সামগ্রিকভাবে প্রতিবন্ধী আন্দোলনের পরিসরের মধ্যেও প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের দাবি-দাওয়া, বৈষম্য, লিঙ্গভিত্তিক হিংসা, যৌন নির্যাতন, কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ইত্যাদি বিষয়গুলি সামনের সারিতে আসে না। লিঙ্গ সংবেদনশীলতা (জেন্ডার সেনসিটিভিটি) বিষয়টি এক্ষেত্রে অনুপস্থিত বলেই মনে হয়।
প্রতিবন্ধী মহিলাদের প্রতি সংঘটিত লিঙ্গভিত্তিক হিংসা ও বৈষম্য প্রতিরোধে যা বলছে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষা আইন
আমাদের দেশে ২০১৬ থেকে রয়েছে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষা আইন, সেখানে নারীদের জন্য বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য প্রণিধান রয়েছে। মনে রাখা প্রয়োজন প্রতিবন্ধকতা রাজ্যের বিষয়। উল্লেখযোগ্য প্রণিধানগুলি হল:
১) সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ নেবে যাতে সুনিশ্চিত হবে যে প্রতিবন্ধী মহিলা ও শিশুরা অন্য সকলের সঙ্গে নিজেদের সমান অধিকার পাবেন।
২) প্রশনন স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে সঠিক তথ্য আছে তা সরকার সুনিশ্চিত করবে।
৩) কোনও প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তিকে (মহিলা, পুরুষ) তাঁর স্বাধীন সম্মতির বিরুদ্ধে ও সঠিক ও পর্যাপ্ত তথ্য না দিয়ে এমন কোনও চিকিৎসা করা যাবে না যাতে তাঁর সন্তানহীনতা তৈরি হয়।
৪) সরকার যখন বিভিন্ন প্রকল্প ইত্যাদি তৈরি করবে তখন প্রতিবন্ধকতা, লিঙ্গ পরিচিতি, বয়স, আর্থ-সামাজিক অবস্থান ইত্যাদির বৈচিত্র্যের প্রতি নজর দিতে হবে।
৫) সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে, বেঞ্চমার্ক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য স্কিম তৈরি করার সময়ে মাথায় রাখতে হবে –
ক) সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প ও সংশ্লিষ্ট স্কিমে ৫% সংরক্ষণ কৃষিজমি ও হাউজিং দেওয়ার সময়ে, বেঞ্চমার্ক প্রতিবন্ধকতা থাকা মহিলাদের ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে।
খ) সমস্ত দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচী ও উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ৫% সংরক্ষণ, বেঞ্চমার্ক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের অগ্রাধিকার দিয়ে।
৬) যারা বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে সহিংসতার ঘটনা সংঘটিত করবেন তারা শাস্তির আওতায় পড়বেন, যার মধ্যে থাকতে পারে কারাবাস, যা ছ’মাসের কম নয় কিন্তু যা পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়তেও পারে, ও জরিমানাও হতে পারে। যারা এই শাস্তির আওতায় আসতে পারেন:-
ক) জনপরিসরে একজন প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তিকে যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করা হয় বা ভয় দেখান।
খ) কেউ যদি প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তির বা মহিলার অসম্মান করার জন্য বা প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলার গায়ে হাত দেন বা বল প্রয়োগ করেন।
গ) একজন প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তির দায়িত্বে থেকে বা তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরে কেউ যদি মাঝেমাঝেই বা জেনেশুনে তাঁকে খাবার বা পানীয় দিতে অস্বীকার করেন।
ঘ) একজন প্রতিবন্ধকতাযুক্ত শিশু বা নারীর ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারার মতো অবস্থানে থেকে কেউ যদি তাঁকে যৌন শোষন করে।
ঙ) একজন প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তির সহায়ক কোনও বস্তুকে যদি খারাও করে দেওয়া, সরিয়ে রাখা, ক্ষতি করার মতো কাজ কেউ করেন।
চ) কেউ যদি কোনও প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলার উপর এমন কোনও চিকিৎসা প্রয়োগ করেন বা করার নির্দেশ দেন যাতে তাঁর সম্মতি জ্ঞাপন ছাড়াই তাঁর গর্ভপাত করা হয়। একমাত্র ব্যতিক্রম হতে পারে – গুরুতর প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে গর্ভপাত করতে হয়েছে, নথিভুক্ত কোনও চিকিৎসকের মতামত মেনে ও প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলার অভিভাবকের সম্মতিতে।
প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মহিলাদের সঙ্গে ঘটতে থাকা লিঙ্গভিত্তিক হিংসার চিত্রটি বাস্তব। অথচ লিঙ্গভিত্তিক হিংসার বিরুদ্ধে আন্দোলনে, সমীক্ষায় বাদ পড়ে যান তাঁরা। প্রতিবন্ধী মহিলাদের বিষয়ে উপযুক্ত ও যথেষ্ঠ তথ্য, পরিসংখ্যান না থাকা নারী হিংসা বিষয়ক আলোচনা, অ্যাডভোকেসির মধ্যেও তাঁদের প্রতি ঘটতে থাকা লিঙ্গভিত্তিক হিংসা ও বৈষম্য নিয়ে উদাসীনতা, সরকার-বিরোধী দু’পক্ষের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডায় তা অর্ন্তভুক্ত না হওয়া, নীতি নির্ধারণ, প্রকল্প তৈরিতে তাঁদের বাদ পড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। গণমাধ্যমেও বিষয়টি উপেক্ষিতই রয়ে যায়। এই সবকিছুই বাধা হয়ে দাঁড়ায় পুলিশ ও আইনি সহায়তা পেয়ে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ঘটনায় প্রতিবন্ধী নারীদের ন্যায় পাওয়ার ক্ষেত্রে। আইন আছে, প্রয়োজন তার সদ্ব্যবহার ও সচেতনতা।
Cover Image courtesy: Amnesty International.
( এই প্রতিবেদনটি লাডলি মিডিয়া ফেলোশিপ ২০২৪-এর অধীনে প্রকাশিত। )