বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা, বিচারকের আচরণ এবং ব্যাঙ্গালোর প্রিন্সিপল অব জুডিসিয়াল কন্ডাক্ট


  • January 20, 2024
  • (0 Comments)
  • 339 Views

“কেন সাম্প্রতিককালে মহামহিম বিচারপতিদের আচরণ নিয়ে প্রায়শই প্রশ্ন উঠছে জনপরিসরে। বস্তুত, উচ্চতর আদালতের মহামান্য বিচারপতিদের ব্যক্তিগত জীবনচর্যাতেও স্বীকৃত কিছু অবশ্য পালনীয় কর্তব্য রয়েছে, তাঁদের বাকস্বাধীনতার অধিকার তথা ব্যক্তিগত জীবনযাপনও নির্দিষ্ট নৈতিকতার নিগড়ে বাঁধা। কী সেই নৈতিকতা যাকে মান্যতা দিতে হয় মহামান্য বিচারপতিদের?”সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেন পার্থ সিংহ

 

“Justice must not only be done, but must also be seen to be done”

Lord Hewart, Chief Justice of England
(In the case of Rex v. Sussex Justices, [1924] (1) KB 256)

 

রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন আর স্বৈর-ক্ষমতার স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণে ন্যায়বিচার চাইতে নিরুপায় সাধারণ মানুষকে আস্থা রাখতে হয় স্বাধীন, পক্ষপাতহীন, ন্যায়পরায়ণ বিচারব্যবস্থার প্রতি। ন্যায়াধীশদের কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনচর্যাও সম্পৃক্ত আছে নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার সঙ্গে।

সম্প্রতি শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি, মহাত্মা গান্ধীর জীবন এবং আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মন্দির দর্শনে বেরিয়ে গুজরাতে পরিভ্রমণ করলেন, উদ্দেশ্য বর্তমানে বিচারব্যবস্থাকে যে চ্যলেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তার সমাধানসূত্র চিহ্নিত করা। জানুয়ারির ৬ তারিখে (০৬/০১/২০২৪) তিনি সস্ত্রীক স্বনামধন্য হিন্দু তীর্থ দ্বারকা ও সোমনাথ মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। দ্বারকা মন্দিরের চূড়ায় উড়ন্ত ধ্বজাটিতে তিনি যারপরনাই অনুপ্রাণিত হয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই একই রকম ধ্বজা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরেও দেখা যায়। এ ধ্বজা আমাদের দেশের ঐতিহ্যের বিশ্বজনীনতার নিদর্শন, যা আমাদের সকলকে  একসাথে বেঁধে রেখেছে। এই ধ্বজা আমাদের জন্য এক গভীর অর্থ বহন করে, তা হল— আমদের উপর তার ঐক্যবদ্ধ করার শক্তি… এবং আইনের শাসন ও সংবিধান চালিত যে ঐক্যবদ্ধ শক্তিই আমাদের মনুষ্যত্ব [Referring to the dhwaja atop Dwarka and Somnath temples which he visited during his two-day visit to Gujarat, the CJI said, “I was inspired this morning by the dhwaja at Dwarkadhish ji, very similar to the dhwaja, which I saw at Jagannath Puri. But look at this universality of the tradition in our nation, which binds all of us together. This dhwaja has a special meaning for us. And that meaning which the dhwaja gives us is– there is some unifying force above all of us, as lawyers, as judges, as citizens. And that unifying force is our humanity, which is governed by the rule of law and by the Constitution of India,” he said.](১)

 

এ বিষয়ে অগ্রগণ্য গান্ধী গবেষক, ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ জানাচ্ছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে পেশাদারি জীবন শুরুর আগে বছর খানেক ধরে এবং পরে সমাজকর্মী ও রাজনীতিক হিসেবে গান্ধী কখনও ট্রেনে তৃতীয় শ্রেণির কামরায়, গাড়িতে, গরুর গাড়িতে, কখনও-বা পায়ে হেঁটে সারা ভারত ঘুরে বেরিয়েছিলেন এ দেশকে জানতে, তার মানুষকে জানতে। যে কোনও মানুষ— ধনী-দরিদ্র, খ্যাত-অখ্যাত, নারী-পুরুষের দেশ ঘুরে বেড়াতে চাওয়া অবশ্যই গান্ধীর মতানুসারী। কিন্তু, তিনি কি কখনও, একজন কর্মরত প্রধান বিচারপতির জনসমক্ষে হিন্দু মন্দির ভ্রমণ, ছবি তোলানো এবং সাক্ষাৎকার দেওয়া, মেনে নিতে পারতেন। বস্তুত, গান্ধী কোনও দিনও হিন্দু মন্দিরে যাননি— দলিতদের মন্দিরে প্রবেশের অধিকার দেওয়ার পরে, ১৯৪৬ সালে একবারই মাত্র গান্ধী মাদুরার মীনাক্ষী মন্দিরে গিয়েছিলেন। গান্ধী একজন ঘোষিত হিন্দু ছিলেন, কিন্তু মন্দিরে গিয়ে উপাসনার পরিবর্তে তাঁর উপাসনার ধরন ছিল হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, পার্সি ইত্যাদি সর্বধর্মের মানুষদের নিয়ে উন্মুক্ত স্থানে সকল ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা। এ দেশ যে সব ধর্মের মানুষদের আশ্রয়, এটা নিশ্চিত করার, গভীরভাবে উপলব্ধি করার এই-ই ছিল তাঁর প্রকৃত চলার পথ। লক্ষ্যণীয়, মহামান্য প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে তিনি, একদিকে মহাত্মা গান্ধী এবং অপরদিকে ধ্বজার ঐতিহ্যে অনুপ্রাণিত, যা নাকি আমাদের সকলকে মানবতার বন্ধনে বেঁধে রেখেছে। সত্যিই কি তাই। বহু উদাহরণ রয়েছে, হিন্দু মন্দিরগুলো কখনোই সকল মানুষকে মানবতার বাঁধনে বেঁধে রাখেনি, বরং বহু বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরে দলিতরা আজও অচ্ছুৎ। এমনকি নারীদের (বিশেষ করে ঋতুকালীন সময়ে) প্রতি এখনও বহু ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। শ্রীগুহ আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন, অস্পৃশ্যতা বিরোধী আন্দোলন করার পর, গান্ধীর নেতৃত্বে আন্দোলনের জেরেই দলিতদের মন্দিরে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা ওঠাতে তৎকালীন ত্রিবাঙ্কুর রাজ্যে “মন্দির প্রবেশ ঘোষণাপত্র” জারি করতে হয়েছিল (বৈকম সত্যাগ্রহ)। সেসময় পুরীর শঙ্করাচার্য তৎকালীন ভাইসরয়কে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, গান্ধীর উদ্যোগে সবর্ণ ও দলিতদের একসঙ্গে উপাসনার জন্য সনাতনীদের ধর্ম নির্দেশিত পথে নিশ্চিন্ত ও শান্তিময় উপাসনা পদ্ধতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। লক্ষ্যণীয়, সংবিধানে অস্পৃশ্যতার বিলোপ সাধন করা হলেও, দশকের পর দশক ধরে বহু বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরগুলোয় দলিতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল, এখনও কিছু মন্দিরে আছে। আজ দেশের ইতিহাসের বিশেষ এক সন্ধিক্ষণে, দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির জনসমক্ষে পূজার্চনা করার ব্যাপারে তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তটি জনপরিসরে অস্বস্তিকর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বলে শ্রীগুহ-র অভিমত(২)

 

হিন্দু মন্দির শীর্ষের গেরুয়া পতাকা অবশ্যই একটি ধর্মীয় নিশান। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ এই গেরুয়া পতাকা বা ভাগোয়া ঝান্ডাকেই তাদের গুরু বলে অভিহিত করেছে, এটিই তাদের সংগঠনের স্বীকৃত পতাকা। ভাগোয়া ঝান্ডা সম্পর্কে তাদের ভাবনা, তাদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে(৩)। আর এই ভাগোয়া ঝান্ডা সাথে নিয়ে আরএসএস-এর মিলিশিয়া বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সারা দেশে, ঘটে চলেছে একের পর এক ভয়াবহ দাঙ্গা, গণহত্যা, অহিন্দু মানুষদের উপর নারকীয় অত্যাচার। সংবাদপত্রের পাতায়, কখনও টিভির পর্দায় দেখা গিয়েছে, সেই গুন্ডা বাহিনী অহিন্দু মানুষদের উপাসনাস্থল ধ্বংস করে টাঙিয়ে দিয়েছে ওই ভাগোয়া ঝান্ডা। গেরুয়া পতাকা সত্যিই মানুষে-মানুষে বন্ধনের প্রতীক হয়ে উঠছে, নাকি বীভৎস (অ)ন্যায়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে, তা প্রতিনিয়ত বিদ্বেষ, হানাহানি, মৃত্যুর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে বুঝতে পারছে দেশের মানুষ, বিশেষত অহিন্দুরা। শীর্ষ আদালতের প্রাজ্ঞ, শ্রদ্ধেয় প্রধান বিচারপতি জনসমক্ষে ধর্মীয় (অবশ্যই সংখ্যাগুরু ধর্মের) উপাসনাই নয়, তিনি আবার বিদ্বেষ, সীমাহীন অত্যাচার, হানাহানির প্রতীক হয়ে ওঠা ভাগোয়া ঝান্ডার মধ্যে দেশের আপামর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার শক্তি প্রত্যক্ষ করেছেন, তাকে ন্যায়ের প্রতীক বলে মনে করেছেন(১) মনে পড়বে, সঙ্ঘীদের পিতৃসম মাধব সদাশিব গোলওয়ালকর, নাগপুরে গুরুপূর্ণিমার (১৯৪৬) সমাবেশে প্রদত্ত ভাষণে বলেছিলেন,ভারতীয় সংস্কৃতির সামগ্রিকতাকে প্রতিনিধিত্ব করে এসেছে ভাগোয়া ঝান্ডা, এটি ঈশ্বরের মূর্ত প্রতীক, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একদিন সমগ্র দেশ এই ভাগোয়া ঝান্ডার সামনে অবনত হবে। সেই সঙ্গে স্মরণে আসবে, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে আরএসএস তাদের সদর দফতর নাগপুরে তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা টাঙিয়েছিল(৪)। জানা আছে দেশের তেরঙ্গা জাতীয় পতাকার প্রতি তাদের গভীর এবং মূলগত ঘৃণার কথা(৫)। কী অদ্ভুত সাদৃশ্য ফুটে উঠেছে দুই বক্তার ভাবনায়, এক জন দেশের সাংবিধানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভের প্রধান এবং অপরজন দেশের সর্ববৃহৎ তথাকথিত সমাজ-রাজনৈতিক সংগঠনের (যার রাজনৈতিক শাখা দেশের সরকার পরিচালনা করছে) সর্বোচ্চ পরিচালক।

আর একটি উদাহরণ উল্লেখ করা যায় প্রসঙ্গক্রমে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতি তাঁর মামলার স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে একের পর এক মন্তব্য করে চলেছেন, কখন অভিযুক্ত সম্পর্কে, কখনও রাজ্যে ঘটে যাওয়া এক অপরাধমূলক কাজকর্মের উপর। অতি সাম্প্রতিককালে, কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্তদলকে মারধোর, হয়রানির একটি অপরাধমূলক ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি ‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে এবং রাজ্যপাল কেন তা ঘোষণা করছেন না সেজন্য উষ্মা প্রকাশ করেছেন’, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একই সুরে বলেছেন ‘আক্রমণকারীরা নাগরিক নাকি নৌকায় এদেশে ঢুকেছে’, সাংবাদিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সে বিষয়ে(৬)। ইতিপূর্বে ‘ধেড়ে ইঁদুর’ বলে সম্ভাব্য অভিযুক্ত সম্পর্কে তাঁরই বিচারাধীন মামলায় মন্তব্য করেছেন(৬)। একটি বাংলা নিউজ চ্যানেলকে তাঁরই বিচারাধীন বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন এবং যে কারণে শীর্ষ আদালত তাঁর এজলাস থেকে সেই মামলা সরিয়ে দিয়েছিল(৬)

 

কেন সাম্প্রতিককালে মহামহিম বিচারপতিদের আচরণ নিয়ে প্রায়শই প্রশ্ন উঠছে জনপরিসরে। বস্তুত, উচ্চতর আদালতের মহামান্য বিচারপতিদের ব্যক্তিগত জীবনচর্যাতেও স্বীকৃত কিছু অবশ্য পালনীয় কর্তব্য রয়েছে, তাঁদের বাকস্বাধীনতার অধিকার তথা ব্যক্তিগত জীবনযাপনও নির্দিষ্ট নৈতিকতার নিগড়ে বাঁধা। কী সেই নৈতিকতা যাকে মান্যতা দিতে হয় মহামান্য বিচারপতিদের?

 

স্বাধীন, পক্ষপাতহীন, ন্যায়বিচারের দায়বদ্ধতা, বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের মর্যাদা, আস্থা, বজায় রাখতে, ২০০৬ সালে জাতিসঙ্ঘের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিষদ একটি রেজলিউশনের (২৩/২০০৬) মাধ্যমে “ব্যাঙ্গালোর প্রিন্সিপল অব জুডিসিয়াল কন্ডাক্ট” গ্রহণ করেছিল (এদেশও ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ শরিক)। যাতে বিধৃত হয়েছিল উচ্চতর আদালতের বিচারপতিদের কর্মজীবন এবং ব্যক্তিজীবনে পালনীয় আচরণ এবং কর্তব্যের বিধিসমূহ।

 

বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বিধিসমূহের কয়েকটি উল্লেখ করা যেতে পারে,

 

2.2.  A judge shall ensure that his or her conduct, both in and out of court, maintains and enhances the confidence of the public, the legal profession and litigants in the impartiality of the judge and of the judiciary.(৭)

 

4.2. As a subject of constant public scrutiny, a Judge must accept personal restrictions that might be viewed as burdensome by the ordinary citizen and should do so freely and willingly. In particular, a Judge shall conduct himself or herself in a way that is consistent with the dignity of the judicial office.(৭)

 

4.6. A Judge, like any other citizen, is entitled to freedom of expression, belief, association and assembly, but, in exercising such rights, a judge shall always conduct himself or herself in such a manner as to preserve the dignity of the judicial office and the impartiality and independence of the judiciary.()

 

ব্যাঙ্গালোর প্রিন্সিপল গৃহীত হওয়ার অনেক আগেই ১৯৯৭-এর ৭ মে ভারতের শীর্ষ আদালতে, স্বাধীন, পক্ষপাতহীন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে, বিচারকদের পালনীয় ১৬টি কোড গৃহীত হয়েছিল, যা “Restatement of Values of Judicial লিফে” (৮) বলে পরিচিত। এই ১৬টি কোড বা বিধির মাধ্যমে মাননীয় বিচারপতিদের ব্যক্তিগত জীবনযাপনে পালনীয় কিছু নৈতিক আচরণের কথা বলা হয়েছিল।

 

এই বিধিসমূহের প্রথমটিতেই উল্লেখিত রয়েছে: “Justice must not merely be done but it must also to be seen to be done. The behaviour and conduct of members of the higher judiciary must reaffirm the people’s faith in the impartiality of the judiciary. Accordingly, any act of a Judge of the Supreme Court or a High Court, whether in official or personal capacity, which erodes the credibility of this perception, has to be avoided.”

ইতিহাসে বার বারই দেখা গেছে, গণতন্ত্রের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে সমাজের ন্যায়পরায়ণতার ধারণা তথা ন্যায়বিচারের ব্যবস্থাটি আর গণতন্ত্র ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে সেই নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থাটি ধসে পড়তে থাকে। দেশের অন্যান্য বিধিবদ্ধ ও সাংবিধানিক সংস্থাগুলির সঙ্গে ন্যায়ালয়ও খুব দ্রুত সামিল হয়ে পড়ে স্বৈরাচারী ক্ষমতার সঙ্গে। মনে পড়বে ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫-এ হিটলারের নাজি শাসনের সময়কালে কীভাবে ধীরে ধীরে ভেঙ্গে পড়েছিল পশ্চিমি গণতন্ত্রের দীর্ঘ প্রচলিত নিরপেক্ষ ন্যায়ব্যবস্থার ইমারতটি। একই পরিস্থিতি হয়েছিল ইতালিতে মুসোলিনির, চিলির পিনোচেতের জমানাতেও।

 

বর্তমানে এদেশের বিধিবদ্ধ সংস্থাগুলো তো বটেই, সাংবিধানিক সংস্থাগুলোর উপর মানুষ ভরসা হারাচ্ছে, দেশের পতনোন্মুখ ফেডেরাল গণতন্ত্রে মানুষের মৌলিক অধিকার আদৌ সুরক্ষিত থাকবে কি না তা প্রশ্নের মুখে। এমনই আতঙ্কজনক সময়ে যখন সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান (বেশ কিছু চূড়ান্ত বিতর্কিত রায় সত্ত্বেও) সাধারণ মানুষের মধ্যে যৎসামান্য আশা ভরসার রুপোলি রেখা দেখা গিয়েছিল, এমন সন্ধিক্ষণে গণতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভটির সর্বোচ্চ ন্যায়াধীশ এবং কিছু ন্যায়াধীশদের আচরণ নিয়ে উত্তরহীন বিরক্তিকর এবং নাছোড় প্রশ্নগুলো বারংবার উঠে আসছে নাগরিক পরিসরে।

 

সূত্রঃ

১) After temple visits, CJI DY Chandrachud flags ‘dhwaja of justice’ to district court lawyers, Indian Express, 07 Jan, 2024

২) Ramachandra Guha: The Chief Justice and the Father of the Nation, Scroll, Jan 08, 2024

৩) Basic FAQ on RSS, rss.org

৪) Insulting the Tricolour, Shamsul Islam, Frontier Vol.53, No.33, Feb 14-20, 2021, Tri-colour hoisted at RSS HQ after 52 years, Times of India, 26/02/2002

৫) The RSS doublespeak: Bhagwa for itself, Tricolour for the ‘others’, Sabrang, 07/03/2016

৬) আনন্দবাজার পত্রিকা, ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১ ডিসেম্বর ২০২২, ২৮ এপ্রিল ২০২৩।

৭) The Bangalore Principles of Judicial Conduct

৮) Restatement of Values of Judicial Life

 

Share this
Leave a Comment