প্রহসনের পঞ্চায়েত, খর্ব হচ্ছে ক্ষমতা, বাড়ছে স্বজন-পোষণ ও দুর্নীতি 


  • July 7, 2023
  • (0 Comments)
  • 535 Views

দীপ্যমান অধিকারীর প্রতিবেদন 

 

আজ আমরা এক চরম দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক (এমনটাই দাবি করা হয়) দেশের নাগরিক হয়েও আমরা এমন এক মেকি গণতন্ত্রের মধ্যে বাস করি যেখানে জনগণ আছে কিন্তু তাঁদের কোন অধিকার নেই। আইন আছে কিন্তু তা মান্যতা নেই। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের দাপট আমরা প্রত্যেকেই লক্ষ্য করে থাকি। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েতের উপর এই দলীয় চাপ সবসময়ই দেখা যায়। এমনটাই মনে করে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেতমজুর সমিতি। ২০১৮ সালের শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে, গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪৮,৬৫০টি পদ, জেলা পরিষদে ৮২৫টি পদ এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে ৯,২১৭টি পদের জন্য পর্যায়ক্রমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

 

এই সময় শাসক দল প্রায় ৩৪ শতাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিনিয়ে নিয়েছিল অর্থাৎ প্রতি তিনটি আসনের মধ্যে একটা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে ছিল। পৌরসভা নির্বাচনে ১০৮টি পৌরসভায় আবার ৩০ আসনে কোনো বিরোধী প্রার্থী ছিল না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার পিছনে রয়েছে ভয়, হিংস্রতা এবং ঘুষের গল্প। আবার বিরোধী প্রার্থীদের কোনো মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে দেওয়া হয়নি। বিরোধী দলগুলি পঞ্চায়েত এবং পৌর নির্বাচনে পেশিশক্তি ও রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার করে শাসকদলের বিরুদ্ধে ভোট লুঠের অভিযোগ করেছে। বিজয়ী শাসকদল এই কঠিন সত্যটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে যে, ভোটারদের তাদের ভোটাধিকার থেকে বিরত রাখতে তারা বন্দুক, বুথ দখল এবং সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। এর ফলে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে, বাড়ছে দলবাজি ও দুর্নীতি।

 

পঞ্চায়েতিরাজের মূল ভাবনাই ছিল সাধারণ মানুষের সাথে সরকারের সম্পর্ক স্থাপন ও জনগণের দ্বারা সরকারের নিয়ন্ত্রণ। দলের নয়, পঞ্চায়েত হবে জনগণের। কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে থাকে বলে সংবিধান সংশোধন করে পঞ্চায়েতকে স্থানীয় সরকার হিসাবে গঠন করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় সরকার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া দূরের কথা, পঞ্চায়েতের হাতে সীমিত ক্ষমতাও আস্তে আস্তে খর্বিত করা হয়। অধুনা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প পঞ্চায়েতকে সম্পূর্ণ বাইরে রেখেই কার্যকরী করা হচ্ছে। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প বিশেষভাবে উল্লখযোগ্য। এই প্রকল্পে পঞ্চায়েতকে শিখণ্ডী খাড়া করিয়ে সমস্ত দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে শাসক দলের কর্মীদের হাতে। এইভাবেই পঞ্চায়েতকে স্বাবলম্বী না করে দিনে দিনে তার ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে এক অকেজো প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার চেষ্টা চলেছে।

 

সংবিধানে স্থানীয় শাসন পঞ্চায়েত বা গ্রাম সভাগুলি প্রাচীন ভারতে স্বতন্ত্র এবং সুনির্দিষ্ট কার্যাবলী সহ স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ্যমান ছিল। পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র জনগোষ্ঠীর যৌথ ইচ্ছাই নয়, সমগ্র গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত প্রজ্ঞার প্রতিনিধিত্ব করে। ব্রিটিশ শাসনে প্রশাসনের কেন্দ্রিকতা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির পরিস্থিতির পরিবর্তন করে এবং এই ব্যবস্থার ক্ষতিসাধন করে। যদিও ১৯৯২ সালে সংবিধান সংশোধন হওয়ার অনেক আগে ভারতে পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব ছিল। তবে নিয়মিত নির্বাচনের অনুপস্থিতি, কায়েমি নেতৃত্বের রমরমা সহ বেশ কয়েকটি কারণে এই প্রতিষ্ঠানগুলি কার্যকর এবং জনগণের সংস্থার মর্জাদা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং মহিলাদের অপর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব, ক্ষমতার অপর্যাপ্ত হস্তান্তর এবং আর্থিক সংস্থানের অভাব পঞ্চায়েতি রাজকে অকেজো করে তুলেছিল। এই সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার জন্য পঞ্চায়েতকে স্থানীয় স্বশাসিত সরকার হিসাবে গড়ে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৭৩ তম এবং ৭৪ তম সংবিধান সংশোধনী নিয়ে আসে যথাক্রমে ১৯৯২ ও ১৯৯৩ সালে। এই আইনগুলি ১৯৯২ সালে উভয় কক্ষে পাশ করা হয়েছিল এবং যথাক্রমে ২৪ এপ্রিল ১৯৯৬ এবং ২০ এপ্রিল ১৯৯৬ থেকে কার্যকর হয়েছিল।

 

১৯৭৩ সালের আইন অনুসারে ১৯৭৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিকেন্দ্রীকরণ, সামাজিক ন্যায় অনুন্নতের উন্নয়নের লক্ষ্যে। পরবর্তীকালে পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থায় গ্রাম সংসদ ও গ্রামসভার সংস্থান করা হয়। উল্লেখ্য যে, এই আইনের পূর্বে, ভারতের সংবিধানের নির্দেশমূলক অংশে অনুচ্ছেদ ৪০-এ পঞ্চায়েতগুলির প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু প্রতিনিধিত্বের বিধান দেয়। রাজ্য অর্থ কার্যকারিতা সহজতর করার কথা বলা হয়েছে। সুতরাং পঞ্চায়েত সংস্থাগুলির কোন রাজনৈতিক দলের উদারতার উপর নির্ভরশীল হওয়ার কথা নয় বরং পঞ্চায়েতের ক্ষমতা সংবিধান প্রদত্ত। ৭৩ তম সংবিধান সংশোধনী আইন কী ছিল? আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি নীচে উল্লেখ করা হলঃ

 

এই আইনটি সংবিধানে পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানগুলিকে দেশের সাংবিধানিক সংস্থাগুলির একটি অংশে পরিণত করেছে।

অনুচ্ছেদ ২৪৩-বি এর অধীনে, প্রতিটি রাজ্যের জন্য তাদের অঞ্চলগুলিতে পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ২৪৩-জি রাজ্য সরকারগুলির জন্য ক্ষমতা, দায়িত্ব এবং পঞ্চায়েতগুলির কর্তৃত্ব পঞ্চায়েতের কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

(ক) অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্য পরিকল্পনা প্রনয়ণঃ

 

(খ) কৃষি ও কৃষি সম্প্রসারণের মতো একাদশ তফসিল তালিকাভুক্ত বিষয়গুলি সহ তাদের উপর অর্পিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সহ ক্ষুদ্র শিল্প গ্রামীণ আবাসন, পানীয় জল এবং রাস্তা, নারী ও শিশু উন্নয়ন দুর্বল শ্রেণীর কল্যাণ বিশেষ করে তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতি-র শিক্ষা ইত্যাদি। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির নির্দিষ্ট মেয়াদ ৫ বছর এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলিকে পঞ্চায়েতগুলিতে স্বতন্ত্র নির্বাচন পরিচালনা করার কথা। অনুচ্ছেদ ২৪৩-ডি নারী এবং তপসিলি জাতি তপসিলি উপজাতিদের কমিশনেরও দায়িত্ব প্রতি পাঁচ বছরে পঞ্চায়েতগুলির আর্থিক অবস্থার মূল্যায়ন করা ও আর্থিক বরাদ্দ স্থির করা।

 

৭৩ তম সংবিধান সংশোধনের সমালোচনা

 

স্থানীয় কল্যাণ ও যথাযথ প্রতিনিধিত্বের কথা মাথায় রেখে স্থানীয় সংস্থা গঠন করা হলেও সেটি হয় স্থানীয় শাসনের নামে প্রহসন মাত্র। স্থানীয় সংস্থাগুলি কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়ের করুণায় রয়েছে কারণ তহবিল বরাদ্দ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া দড়ি দিয়ে বাঁধা।

 

৭৩ তম সংবিধান সংশোধনীর প্রথম ব্যর্থতা ছিল যে বিভিন্ন শাসন কার্যের হস্তান্তর যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন এবং জলের বিধান বাধ্যতামূলক ছিল না। পরিবর্তে সংশোধনীটি হস্তান্তর করা যেতে পারে এমন কাজ গুলিকে তালিকাভুক্ত করে এবং বাস্তবে হস্তান্তর করার জন্য এটিকে রাজ্য আইনসভার কাছে ছেড়ে দেয়। গত ২৫ বছরে কর্তৃত্ব ও কাজগুলি খুব কম হস্তান্তর হয়েছে।

 

৭৩ তম সংশোধনীর দ্বিতীয় ব্যর্থতা হল পঞ্চায়েতের জন্য অর্থের অভাব। স্থানীয় সরকার হয় স্থানীয় করের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব রাজস্ব বাড়াতে পারে বা আন্তঃসরকারি স্থানান্তর পেতে পারে। ৭৩ তম সংশোধনী পাবলিক ফাইন্যান্সের উভয় বিষয়কে করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে, কিন্তু আদেশ দেয়নি। রাজস্ব উৎপাদনের অন্যতম একটি উপায় হল আন্তঃসরকারি স্থানান্তর, যেখানে রাজ্যসরকার গুলি তাদের রাজস্বের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করে। সাংবিধানিক সংশোধনী প্রতি ৫ বছরে রাজ্য এবং স্থানীয় সরকারগুলির মধ্যে রাজস্ব ভাগের সুপারিশ করার জন্য রাজ্য অর্থ কমিশনগুলির জন্য বিধান তৈরি করেছে। যাই হোক, এগুলি নিছক সুপারিশ মাত্র, রাজ্য সরকারগুলির কোন আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। যদিও নেওয়ার অধিকার জনসাধারণের যথাযথ অর্থ কমিশন, প্রতিটি স্তরে, তহবিলের বৃহত্তর হস্তান্তরের পক্ষে কথা বলেছে অথচ তহবিল হস্তান্তরের জন্য রাজ্য গুলির দ্বারা খুব কম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

 

ফলস্বরূপ পঞ্চায়েতগুলি তহবিলের জন্য এতটাই নির্ভরশীল যে তারা প্রায়শই এমনকি বেতনের বাধ্যবাধকতাও পূরণ করতে পারে না। তারা এমন প্রকল্পগুলি গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক যেগুলির জন্য আর্থিক ব্যয়ের প্রয়োজন হয় এবং প্রায়শই এমনকি সবচেয়ে মৌলিক স্থানীয় শাসনের সমাধান করতেও অক্ষম হয়।

 

পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেতমজুর সমিতির প্রস্তাব :

 

পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী বছরে অন্ততপক্ষে দুটি করে গ্রাম সংসদের সভার আয়োজন করার কথা, কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। তাই সমিতির প্রস্তাব – পরবর্তীকালে প্রতি মাসে একটি করে গ্রাম সংসদের সভার আয়োজন করতে হবে। গ্রাম সংসদের থেকে অনুমোদন না করিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত আর্থিক বরাদ্দ সহ কোনো কাজ করতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত আইনের ধারা ১৬এ এবং বিধি ৬৯ অবশ্যই সংশোধন করতে হবে যাতে গ্রাম সংসদের সভা বাধ্যতামূলক করা যায়, গ্রাম সংসদের সভার কোরাম কমপক্ষে ২৫ শতাংশ হতে হবে যা আগে ১০ শতাংশ ছিল। যার মধ্যে তিনভাগের একভাগ মহিলা হওয়া বাধ্যতামূলক এবং মুলতবি সভার প্রথা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। স্থানীয় সরকার হিসেবে পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে।

 

প্রত্যাহারের অধিকার

 

যদি পঞ্চায়েতের কোন সদস্য দুর্নীতিগ্রস্থ বা নিষ্ক্রিয় বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে সেই সদস্যের জনপ্রতিনিধিত্ব ফিরিয়ে হাতে রাখতে হবে। এই মর্মে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে হবে৷ শুধুমাত্র কথায় নয়, কাজেও ১৯৯২ সালের ভারতীয় সংবিধানের ৭৩ নং সংশোধনী সম্পূর্ণ রূপে বাস্তবায়িত করতে হবে।

 

রাজ্য ও কেন্দ্রের বাজেটের ৪০ শতাংশ পঞ্চায়েতের বাজেটে রাখতে হবে এবং সেই তহবিলকে পঞ্চায়েতের বাজেটে হস্তান্তর করতে হবে। কর আদায় ও স্থানীয় পরিকল্পনার জন্য পঞ্চায়েতকে যুক্ত করতে হবে এবং গ্রাম সংসদের অনুমোদন ছাড়া কোনো বাজেট বা ব্যয় অনুমোদন করা হবে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সুষ্ঠ ভাবে করানোর জন্য সকল দায়িত্ব রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতেই রাখতে হবে। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার উপর রাজ্য সরকারের কোনরকম হস্তক্ষেপ করা চলবে না। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ধাঁচে রাজ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কমিশন মনোনয়নের জন্য কমিটিতে থাকতে পারেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের খরচ রাজ্য তহবিল থেকে ব্যয় করা উচিৎ। প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিতে হবে।

 

১৯৯২ সালের সংবিধান সংশোধনী ৭৩ নং ও ১১ নং তপশিলী মেনে ২৯টি সরকারি দপ্তরকে (যেমন কৃষি ও কৃষি সম্প্রদায়, ক্ষুদ্র শিল্প ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পানীয় জল, গ্রামীণ আবাসন, জ্বালানী ও পশুখাদ্য, নারী ও শিশু কল্যান, পরিবার কল্যান, অপ্রচলিত শক্তি, দারিদ্র দূরীকরণ, গণ বণ্টন ব্যবস্থা, গোষ্ঠী সম্পদ সংরক্ষণ ইত্যাদি) অবিলম্বে পঞ্চায়েতের হাতে তুলে দিতে হবে। অনুরূপে ১৯৯৩ সালের সংবিধান সংশোধনীর ৭৪ নং ও ১২ নং তপশীলী মেনে ১৮টি সরকারি দপ্তরকে পৌরসভার হাতে তুলে দিতে হবে।

 

গ্রাম সংসদ এবং গ্রাম সভাকে অবশ্যই বাজেটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং তাদের সংশ্লিষ্ট এলাকার আয় ব্যয় সংক্রান্ত হিসাব নিকাশ ও সামাজিক নিরীক্ষণের কাজও করতে হবে। পঞ্চায়েতকে সার্বিকভাবে স্বাবলম্বী করার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে এবং তার আইনী ক্ষমতা পঞ্চায়েতকে দিতে হবে। পঞ্চায়েতের আয় ব্যয়ের স্বচ্ছতা আনার জন্য এক স্বাধীন নিরীক্ষণ কমিটি রাখতে হবে ও তার হিসাব গ্রাম সংসদের সভায় সবার সামনে উল্লেখ করতে হবে৷ পঞ্চায়েতের কাজ গ্রাম সংসদের সভায় নির্বাচিত কমিটি মারফৎ করাতে হবে।

 

(লেখাটি ‘পৌর ও গ্রামীণ সংবাদ’ পত্রিকার ‘বিশেষ বুলেটিন : পঞ্চায়েত নির্বাচন’ সংখ্যায় ১৬ জুন, ২০২৩ তারিখে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল)

 

 

Share this
Leave a Comment