বিশ্বের বৃহত্তম শিক্ষাব্যবস্থার দাবিদার ভারতেই স্কুলশিক্ষার করুণ হাল, পশ্চিমবঙ্গ সামনের সারিতে


  • February 25, 2023
  • (0 Comments)
  • 1032 Views

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে স্কুল ড্রপআউট পড়ুয়ার সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে দেশের কয়েকটি রাজ্যে, এর সামনের সারিতেই আছে পশ্চিমবঙ্গ। এ বছর পশ্চিমবঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে গত বছরের তুলনায় ৪ লক্ষ কম পরীক্ষার্থী। দেশ জুড়ে এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির ছবি তুলে ধরেছেন অর্ণব দত্ত

 

মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার আগের কয়েক বছর কাটাতে হয় প্রাথমিক স্তরের স্কুলজীবন। স্কুলে পড়াশোনা করাটা জীবন গঠনের জন্যে অত্যন্ত জরুরি কাজ। কেবল পাশ করাই নয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুলজীবনে পড়ুয়াদের জীবনের বুনিয়াদও গড়ে ওঠে। তাছাড়া স্কুলশিক্ষার অধিকার সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারগুলির ভিতর একটি অন্যতম অধিকার।

 

কিন্তু খবর হল, ভবিষ্যতে দেশের যারা প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হবে,  তাদের একটা বড় অংশ স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। খবর হিসেবে এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনকই। এর অন্যতম প্রধান কারণ অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া চালানো কার্যত বিলাসে পর্যবসিত হয়েছে। তার চেয়ে বরং শিশুশ্রমিক বনে গেলে সংসারের খানিক আর্থিক সুরাহা হয়।

 

কেন্দ্রীয় সরকারি এবং দেশের রাজ্যগুলির রিপোর্টে এই বিষয় চর্চিতও। এ ছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও স্কুলছুট ছেলেমেয়েদের নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে। এতে যে তথ্য ধরা পড়েছে, যে কোনও দেশের ভবিষ্যতের পক্ষে তা উদ্বেগজনক।

 

২০২০ সালে করোনা ভারতে হানা দেওয়ায় দীর্ঘ লকডাউনের জেরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। আক্রান্ত শৈশব, কৈশোরও। সরকারি ও বেসরকারি নানা সমীক্ষায় স্কুলছুট প্রসঙ্গে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা ভয়াবহ। ব্রিটিশ প্রভুরা এদেশ থেকে ৭৫ বছর আগে বিদায় নিয়েছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ঘটা করে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালন করলেও, স্কুলে যাওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতিটুকু না থাকায় স্কুলশিক্ষার মতো জরুরি অধিকার থেকেই স্পষ্টতই বঞ্চিত শৈশব-কৈশোর। শিক্ষালাভের অধিকার মৌলিক অধিকার হলেও সেই অধিকার ব্যাপকক্ষেত্রে বাস্তবায়িত না হওয়া যে কোনও সমাজ সচেতন মানুষের মনে দুশ্চিন্তা জাগাবে।

 

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে স্কুল ড্রপআউট পড়ুয়ার সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে দেশের যে কয়েকটি রাজ্যে, এর সামনের সারিতেই আছে পশ্চিমবঙ্গ। এ বছর পশ্চিমবঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে গত বছরের তুলনায় ৪ লক্ষ কম পরীক্ষার্থী। এ ব্যাপারে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ খতিয়ান পেশ করে সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২২ সালে ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৭৫ জন মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে মোটে ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬২৬ জন।

 

বিষয়টি নিয়ে চলেছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। বামেদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার যতই ‘কন্যাশ্রী’ নিয়ে ঢালঢোল পেটাক না, প্রকৃত পরিস্থিতি কী এতেই মালুম! কেবল মাধ্যমিক স্তর নয় স্কুলছুটের ভয়াবহ ছবি প্রাথমিক স্তরেও।

 

কেন চলতি বছরে ২০২২ সালের তুলনায় বাংলায় একলাফে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমে গেল, এ ব্যাপারে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের যুক্তি হল, করোনার প্রভাবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেছেন, প্রতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর হার বাড়ছে। ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ লক্ষ কমে যাওয়ায় প্রমাণিত হচ্ছে, সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার হাল তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

 

আরেকটি বিষয় হল, করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার অনলাইনে পঠনপাঠন চালু রেখেছিল। বহু দরিদ্র পড়ুয়াদের অভিভাবক ছেলেমেয়ের হাতে দামি মোবাইল তুলে দিতে পারেননি সঙ্গতি না থাকাতে। ফলে বহু পড়ুয়াই লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। এ ব্যাপারে নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইনের অভিয়োগ, যে ৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী এবার মাধ্যমিকে বসছে না তাদের বেশিরভাগই সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির অন্তর্গত। বলাবাহুল্য, এরা দরিদ্র তো বটেই।

 

তিনি আরও বলেছেন, রাজ্য সরকারকে বারংবার সতর্ক করা হয়েছিল, করোনা পরিস্থিতিতে যেভাবে অনলাইনে পঠনপাঠন চালানো হচ্ছে, তাতে বহু পড়ুয়াই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি এর পরিণতিতে ড্রপআউট হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে বলে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। কারণ ওই দরিদ্র পড়ুয়াদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল নেই, কম্পিউটার নেই। পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে যে আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছিল, সত্য হয়েছে সেই আশঙ্কাই। আর এর জন্যে দায়ী রাজ্য সরকার।

 

যদিও স্কুল ড্রপআউটের মতো ভয়াবহ ব্যাপার কেবল পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাই নন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতাসীন নানা রাজনৈতিক দলের সরকার এবং ক্ষমতাসীন রাজনীতিকরা ঢাক পিটিয়ে ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্যে নানা প্রকল্প ঘোষণা করছেন। তবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে একই দস্তুর।

 

‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ রিপোর্ট ফাইভ’ অনুসারে, ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সের ছাত্ররা মাঝপথে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে লেখাপড়া ছেড়ে দিচ্ছে লেখাপড়ায় কোনও আগ্রহ না থাকার কারণে। প্রতিবছর যত সংখ্যক পড়ুয়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলি থেকে ড্রপআউটের তালিকায় নাম লেখাচ্ছে, এর এক-তৃতীয়াংশ পড়ুয়াই আবার ছাত্র। একই বয়সের লক্ষ লক্ষ ছাত্রীও একইসঙ্গে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের লেখাপড়ায় মাঝপথে ছেদ টানছে — অভিভাবকরা ওদের গেরস্থালির কাজে জুতে দেওয়ার জন্যে কিংবা বেআইনিভাবে ওই নাবালিকাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়ায়। এ ছাড়া ছাত্রীদের একাংশ মাঝপথে স্কুলের লেখাপড়া ছাড়ছে বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ার কারণেও।

 

‘ইউনিসেফ’-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে সমস্ত ছাত্র প্রাথমিক স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুলের লেখাপড়ায় ছেদ টানছে, পরিবারের খানিক আর্থিক সুরাহা করতে গিয়ে ওরা শিশুশ্রমিক বনে যাচ্ছে। ৩৩ শতাংশ ক্ষেত্রে নাবালিকাদের বেআইনিভাবে গৃহ পরিচারিকার মতো পেশায় লাগানো হচ্ছে। অথবা ঘাড় থেকে কন্যাসন্তানের বোঝা নামাতে ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকরা।

 

২০০৯ সালে সংসদে পাস হয়েছে ‘রাইট টু এডুকেশন অ্যাক্ট’। এই আইন অনুসারে, ৪ থেকে ১৪ বছর বয়সের শিশু-কিশোর-কিশোরীদের স্কুলে যাওয়াটা বাধ্যতামূলক এবং শিক্ষার পুরো ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব রাষ্ট্রেরই। তবুও এই করুণ পরিস্থিতি! ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভ’-এ করে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সেস’ বা আইআইপিএস। তাদের সমীক্ষানুসারে, কিশোর-কিশোরীদের স্কুলে পড়াটা অনেক ক্ষেত্রে যেমন বিলাসিতা, উপরন্তু ১০ থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে যথাক্রমে ৬.১ শতাংশ থেকে ৮.৯ শতাংশের মৃত্যু হচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি ওই রিপোর্টে ওদের মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণগুলি উল্লেখ করা হয়নি।

 

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের যে পড়ুয়ারা মাঝপথে লেখাপড়া ছাড়ছে এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্র। ‘ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস’-এর সর্বশেষ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফাইভের ছাত্রদের মধ্যে ড্রপআউটের ঘটনা বাড়ছে। দেশজুড়ে উচ্চ প্রাথমিক স্তরেও হাল একই। এর পাশাপাশি রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, সারা দেশে মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়াদের মধ্যে ড্রপআউটের হার ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে, প্রাথমিক স্তর এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের ড্রপআউটের হার যথাক্রমে ১.৫ ও ১. ৮ শতাংশ। এ ছাড়া প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ড্রপআউটের হার ছাত্রদের ক্ষেত্রে বেশি। ছাত্রীদের ড্রপআউটের হার ১.২ শতাংশ হলেও ছাত্রদের ক্ষেত্রে তা ১.৭ শতাংশে এসে ঠেকেছে। তবে ছবিটা অন্যরকম উচ্চ প্রাথমিক স্তরে। এ ক্ষেত্রে ছাত্রীদের ড্রপআউটের হার ২.২ শতাংশ। ছাত্রদের ক্ষেত্রে এই হার ১.৪ শতাংশ।

 

ভারতের স্কুলশিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তম। প্রি-প্রাইমারি স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত দেশে মোট ১৫ লক্ষ স্কুল রয়েছে। সেখানে ৯৭ লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত। আর মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২৬ কোটির বেশি।

 

প্রি-প্রাইমারি এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পডুয়ার সংখ্যা গত ১০ বছরে এক কোটিরও বেশি বেড়েছে। ২০১২-২০১৩ সালের ‘ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন অন স্কুল এডুকেশন’-এর রিপোর্টে উল্লিখিত শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যার তুলনায় গত ১০ বছরে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যাও অন্তত ১২ লক্ষ বেড়েছে। এদিকে স্কুলশিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিশু-কিশোর-কিশোরীর সংখ্যাবৃদ্ধির অঙ্কটা প্রদীপের নীচের অন্ধকারের মতোই কঠোর বাস্তব। প্রসঙ্গত, বর্তমানে স্কুল ড্রপআউটের জাতীয় গড় ১৪.৬ শতাংশ।

 

উত্তর-পূর্ব ভারতের কয়েকটি রাজ্যে যেমন, ত্রিপুরা, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অসম এবং অরুণাচল প্রদেশে স্কুল ড্রপআউটের হার এখন ২৫ শতাংশ। তাছাড়া দেশের ১৯টি রাজ্যে এবং একাধিক কেন্দ্রশাসিত এলাকায় মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের ড্রপআউটের হারও জাতীয় গড়ের তুলনায় বেশি। যেমন, রাজধানী দিল্লিতেই স্কুল ড্রপআউটের হার ২০ শতাংশে এসে ঠেকেছে।

 

পশ্চিমবঙ্গেও মাধ্যমিক স্তরে স্কুল ড্রপআউটের হার জাতীয় গড়ের তুলনায় বেশি বলে দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘প্রোজেক্ট অ্যাপ্রুভাল বোর্ড স্ট্যাটিসটিক্স’-এর। বাংলার ১০টি জেলায় মাধ্যমিক স্তরে স্কুল ড্রপআউটের হার ১০ শতাংশের চেয়ে বেশি। তাছাড়া সারা দেশে ২০২১-২০২২ আর্থিক বছরে প্রাথমিক স্কুল পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ড্রপআউটের হার ২০২০-২০২১ আর্থিক বছরের তুলনায় বেড়ে ০.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমানে ১.৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে।

 

অন্যদিকে, সবচেয়ে কম স্কুল ড্রপআউট হয় পঞ্জাবে। ছাত্রীদের ক্ষেত্রে পঞ্জাবে স্কুল ড্রপআউট নেই বললেই চলে। যদিও ছাত্রদের ক্ষেত্রে এর হার ১.৫ শতাংশ। তাছাড়া কেরল, তামিলনাড়ু, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর এবং চণ্ডীগড়ে স্কুল ড্রপআউটের হার ১০ শতাংশের নীচে।

 

স্বেচ্ছাসেবীদের দাবি, করোনা পরিস্থিতির পরে স্কুল ড্রপআউটের হার বেড়েছে। ‘ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস’-এর সর্বশেষ সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ১২ শতাংশ সরকারি স্কুলে বর্তমানে ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা মিলবে না।

 

করোনাকালে অনলাইন পরিষেবার মাধ্যমে পড়াশোনা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে অগুন্তি কচিকাঁচা। এ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় শিক্ষা দফতরের পেশ করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে করোনা ঢুকে পড়ার পরে ২০২০-২০২১ এবং ২০২১ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সময়সীমাতে ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস এইটের ৩৪ লক্ষ পড়ুয়া স্কুল ড্রপআউটের তালিকায় নাম লিখিয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ভারতে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সের নাবালক-নাবালিকার সংখ্যা ১১ কোটি ৭৮ লক্ষ ৪২ হাজার জন। ১১ থেকে ১৩ বছর বয়সি ছেলেমেয়ের সংখ্যা ৭ কোটি ২৩ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮০০ জন। আর ১৪ থেকে ১৫ বছর ও ১৬ থেকে ১৭ বছরের কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা যথাক্রমে ৪ কোটি ৮৪ লক্ষ ২৫ হাজার এবং ৪ কোটি ৯৬ লক্ষ ৪৭ হাজার জন। আরেকটা কথা হল, এই ছেলেমেয়েদের মধ্যে অধিকাংশই এ দেশের গ্রামীণ এলাকাগুলির বাসিন্দা।

 

বিশ্বের বৃহত্তম শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের দেশে চালু থাকা সত্ত্বেও এর সুফল আদৌ মিলছে না সকলের। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করেছে, ২০২২-২০২৩ আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে গত আর্থিক বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।

 

তাহলে কেনই বা এই করুণ হাল, ভুক্তভোগী মাত্রই কি জানে তার উত্তর?

 

প্রচ্ছদ ছবি: নীলাঞ্জন কর্মকার

 

Share this
Leave a Comment