নদী মায়ের শপথ নিয়ে আমরা আশ্রম ছাড়লাম।গোড়ালি ভিজিয়ে নদী পার করে, নদীমাকে বাঁয়ে রেখে পদযাত্রা চলল।ইটভাটার ভিতর দিয়ে কিছু পথ পার হতে নজরে এল অন্য পাড়ে আর একটি ইটভাটা। শ্রমিকেরা কৌতূহলী চোখে দেখছেন, মালিকের স্বার্থরক্ষায় যে নদীকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে তাঁরা জীবিকা নির্বাহ করছেন— সেই নদীকে বাঁচিয়ে তুলতে এক মিছিল চলছে। স্লোগান তুলে, “নদী দখলদার নিপাত যাক।” লিখলেন পদযাত্রী তাপস দাস।
“একমাত্র মহিলারাই পারবেন নদীকে বাঁচাতে”, চপ উল্টোতে উল্টোতে বললেন বছর পঞ্চাশের এক মহিলা। স্বামী অসুস্থ দূরে কাজে যেতে পারেন না। এ বছর চাষ নেই তাই গ্রামেও কাজ নেই। সারাদিন জন খেটে সন্ধ্যায় এই চপ-ঘুগনি বেঁচে দিন গুজরান হয়।
প্রশ্ন করি, আপনার ঘুগনিতে এত গুড়োলংকার ঝাল কেন?
মদ খায় যারা তারা এটাই পছন্দ করে যে – উত্তর দেন প্রবীণা। হরিপুরের এই কথোপকথন আসলে শুধু হরিপুরের চিত্র নয়।
বীরভূমের রাজনগর ব্লকের প্রাণপ্রবাহী কুশকর্ণী নদী মাত্র এক দশকে শীর্ণ মজা নদী হয়ে উঠেছে। হল কীভাবে? তার মতো করে এর উত্তর দিলেন পদমপুরের এক দোকানি, “যবে থেকে বালি তোলা শুরু হয়েছে তবে থেকে এই দশা । আগে রাজনগর বাজারের সব্জির সিংহ ভাগ যেত পদমপুর থেকে। আর তা হত কুশকর্ণী নদীর জলে। এখন গ্রামে প্রায় সকলে পরিযায়ী ঠিকা শ্রমিক।” জানালেন পদমপুরের দোকানি।
কথায় বলে তিন মাথা যেখানে বুদ্ধি নাও সেখানে। বয়োবৃদ্ধ সাথির কাছে জানতে চাওয়া হল কীভাবে এই মরা নদীকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব? তার সহজ উত্তর, “সকলে মিলে যদি নদীর পলি তুলে ফেলা যায় তবে আবার এই নদী প্রাণপ্রবাহী হয়ে উঠবে।”
‘কুশকর্ণী নদী সমাজ’, ‘নদী বাঁচাও জীবন বাঁচাও আন্দোলন’ এবং সমভাবাপন্ন সাথি সংগঠনের আহ্বানে ৩-৪ ডিসেম্বর ২০২২ দু’দিনের কুশকর্ণী নদী-পদযাত্রায় রাজনগরের একের পর এক গ্রাম পার হয়ে চললাম। হরিপুরের কিংবা পদমপুরের দোকানির নাম জানা হয়নি। সারা বাংলার শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি তো তাঁরাই। আমরা তো সব সময় আমাদের প্রতিনিধি খুঁজি যিনি আমাদের কথা বলবেন, আমাদের সমস্যার সমাধান করবেন। কিন্তু আমরা কখনও কী ভাবি ? আমরা নিজে কী করতে পারি? ব্যক্তি আমার দায়দায়িত্ব কি শুধু সমস্যা মোকাবিলাতে? যদিও এই কথার উল্লেখের মধ্য দিয়ে আমি সংগঠিত লড়াইকে অবহেলা করে চাইছি না। আমি বলতে চাইছি যে, রাষ্ট্র প্রতি মুহূর্তে আমাদের গিলে খেতে চাইছে। আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা, বেঁচে থাকার নিজস্বতা হরণ করতে চাইছে নানা পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে আরো দৃঢ় করে তোলার জন্য তার বিরুদ্ধে একজন শ্রমজীবী মানুষের কোনও প্রতিবাদ-প্রতিরোধ থাকবে না? আমি বলতে চাইছি এই সমগ্র লড়াইয়ে আমার ভুমিকা কী হবে? সে কথা বুঝে নিতে হবে।
পূর্বঘোষণা মতো ৩-৪ ডিসেম্বর কুশকর্ণী নদী পদযাত্রা শুরু হল বীরভূম-ঝাড়খণ্ড সীমান্ত গ্রাম সাহাবাদ থেকে। গ্রামের মানুষের কাছে এই নদী ‘ঘাঘা’ নামে পরিচিত। এর সঙ্গে করঙ্গা পাড়ায় উৎপন্ন হয়ে আসা ছোট্ট ধারা পাশের গ্রাম ‘ক্ষুদ্র মল্লিকা’র কাছে এসে মিশে, নাম নিয়েছে কুশকুর্ণী নদী। ছাত্র-ছাত্রী, অল্প কিছু বিভিন্ন পেশার মানুষ আর আমরা ক’জন মিলে জনা তিরিশেক মানুষ গ্রামের পথে নদী বাঁচানোর আওয়াজ তুলে চললাম। গ্রাম শেষ হয় সাহাবাদ জঙ্গলে। জঙ্গলের পথ দেখিয়ে নিয়ে চললেন সনৎ লোহার। “লোহার” অর্থাৎ সেই জনজাতি গোষ্ঠী যাঁরা পারতেন পাথুরে লোহা থেকে ‘ধাতু লোহা’ নিষ্কাশন করতে। ব্রিটিশ যুগে একের পর এক জনজাতি বিদ্রোহে এঁরাই জুগিয়েছিলেন অস্ত্র। তাই এক সময় ব্রিটিশরা এঁদের ‘অপরাধী জনজাতি’ ঘোষণা করে। এই সনৎদা গ্রামে এক মাত্র জৈব উপায়ে কৃষিকাজ করেন। সংঘর্ষ-নির্মাণের পথে যথার্থ আমাদের পথপ্রদর্শক। আমাদের দলের বাচ্চারা জঙ্গলে চলতে চলতে বনের কুল খুঁজে পেল, সংগ্রহ করে আমরাও প্রাতঃরাশে ফলাহার করলাম। ক্ষুদ মল্লিকার মোহনা দেখে কুশকর্ণী আশ্রমে পৌঁছালাম। অনিরুদ্ধদা বলেন, ‘আ-শ্রম’। আসো শ্রম দান করো। পিনাকী আচার্যদার কাছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিকল্প জীবনযাপন।প্রতিরোধের হাতিয়ার। নরেন মুর্মু, কেনারাম মুর্মু অপেক্ষা করছিলেন। দু’জনে স্বেচ্ছায় আ-শ্রমের অংশ হয়ে উঠেছেন। তির-ধনুক নিয়ে, ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তাঁরাও দলে যুক্ত হলেন। এবার সামনে তাঁরাই। তার উপর পিনাকীদা বুকে জড়িয়ে নিয়েছেন সাদা কাপড়ে জড়ানো এক প্রতীকী নদী মায়ের মৃতদেহ। নদী মায়ের শপথ নিয়ে আমরা আ-শ্রম ছাড়লাম। গোড়ালি ভিজিয়ে নদী পার করে, নদী মাকে বাঁয়ে রেখে পদযাত্রা চলল। ইটভাটার ভিতর দিয়ে কিছু পথ পার হতে নজরে এল অন্য পাড়ে আর একটি ইটভাটা। শ্রমিকেরা কৌতূহলী চোখে দেখছেন, মালিকের স্বার্থরক্ষায় যে নদীকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে তাঁরা জীবিকা নির্বাহ করছেন সেই নদীকে বাঁচিয়ে তুলতে এক মিছিল চলছে। স্লোগান তুলে, “নদী দখলদার নিপাত যাক।”
ছোট বাজার ব্রিজের কাছে সন্তোষ কর্মকার-সহ সিউড়ি থেকে আর কিছু সঙ্গী যুক্ত হলেন। এবার আমাদের পথ গ্রামের ভিতর থেকে। ছোটবাজার পার করে আড়ালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে। সেখানে আগে থেকেই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কাজি ফিরোজ। স্কুল মাঠে দীর্ঘদিনের বিজ্ঞান আন্দোলনেন সংগঠক জয়দেব দে,স্থানীয় ছাত্র শুভম গ্রামের মানুষের সমানে সংক্ষিপ্ত বার্তা রাখালেন। এর পর প্রাতঃরাশ শেষ করে বহিলা পাড়া, খোদাইবাগ পার করে রাজনগর সিউড়ি রোডে পৌঁছাল দল। এখানে আরো কিছু বার্তা। শেখ ইরফান এগিয়ে এলেন আমাদের কথা শুনে। বললেন, স্থানীয় দুর্নীতি আর অব্যবস্থা জন্য পরিবেশ, নদী আর নদী পাড়ের মানুষের জীবনের কষ্টের কারণ। এও বললেন এমন কাজে ভবিষ্যতে ওঁকে পাওয়া যাবে। পদমপুর পর্যন্ত দু’দিকে কৃষিজমি আর গাছগাছালি। পদমপুরে ফুল ছড়িয়ে শঙ্খ বাজিয়ে গ্রামের মহিলা শিশু-সহ গ্রামবাসী পদযাত্রীদের অভ্যর্থনা জানালেন। মিছিল এগিয়ে চলল লাউজোড়ের দিকে। মাইকে শোনা যাচ্ছে কুশকর্ণী নদীর বার্তা। মিছিল পৌঁছালে এখানেও ফুল আর শঙ্খধ্বনি পদযাত্রীদের পক্ষে কিছু বার্তা রেখে আবার চলা শুরু। এবার বড় রাস্তা ছেড়ে আবার গ্রামের পথ। আবার শোনা যাচ্ছে শঙ্খধ্বনি। যেন এক উৎসবের ডাক দিয়েছে কুশকর্ণী নদী সমাজ। তরুণ মালি-সহ গ্রামের মহিলা-শিশু কয়েকজন পা মেলালেন। স্লোগান উঠল, ‘কুশকর্ণী নদী সমাজ জিন্দাবাদ’, ‘নদী বাঁচাও জীবন বাঁচাও আন্দোলন জিন্দাবাদ’, ‘আমার নদী আমার গাঁ কর্পোরেটের হবে না-হবে না’। লাউজোড় গ্রাম ছেড়ে আবার নদী পার হলাম।
মধ্যাহ্ণভোজনের বিরতি গোলাপগঞ্জে। ভাত, মুগ ডাল,পাঁচ মেশালি তরকারি, চাটনি। ব্যবস্থাপনায় থাকা সাথিরা পরিবেশন করতে করতে জানালেন সব ব্যবস্থাই গ্রামে মাধুকরী করে হয়েছে। গোলাপগঞ্জকে বিদায় জানিয়ে আবার পথ চলা। জয়দেবদা, বিশিষ্ট নদী আগ্রহী শিক্ষক আর সিউড়ি থেকে আসা কয়েকজন এখন থেকে বিদায় নিলেন অন্য কাজ থাকায়। নতুন সাথিদের সঙ্গে আমরা এগোলাম। রৌদ্র যেমন প্রখর সৌরভে (রায়) শ্লোগান তেমনি তীব্রতার সঙ্গে গর্জে উঠছে আকাশে-বাতাসে। শুধু নদী বাঁচানোর শ্লোগান, সঙ্গে ভোট নয়, রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল নয়, নদী পাড়ের মানুষের অধিকার সুনিশ্চিত করার ডাক। আগামী প্রজন্মের জন্য পরিবেশ প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার শপথ। অচেনা এই গর্জন গ্রামবাসীদের আগ্রহী করে তুলবে নিশ্চয়ই এই আশায় আমাদের পথ চলা নিরন্তর। নদী পরিবেশের ডাকে বাংলা তথা দেশ জুড়ে প্রচার কর্মসূচিতে অংশ হতে গিয়ে বুঝেছি দেশের মানুষ অদ্ভুত এক দর্শন হীনতায় ভুগছে। দুর্নীতি আর বিশ্বাসভঙ্গের এক করুণ কাহিনি কানে কানে ঘুরে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। এই সময় পল্লি পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে জীবন-যাপন সংস্কৃতির নির্মাণ করা প্রয়োজন। কিন্তু তা কীভাবে? কে করবে? জানা নেই। অন্য কথায়ে ফেরা যাক, পদযাত্রী দলে বয়োজ্যেষ্ঠ সাথি কালো কোড়া। একবার করে সঙ্গে থাকা গাড়িতে তাকে তুলে দেওয়া হয় যাতে এত হাঁটার ধাকলে অসুস্থ হয়ে না পড়েন। কিন্তু কিছুক্ষণ পড়েই নেমে আসেন। বলেন, “হাঁটতে ভালোই লাগছে” ‘মিছিলে’ ‘মিছিল’ মেলায়,‘পথে’ পথ’। গোলাপগঞ্জ থেকে আবার হাঁটা শুরু হল। গুরকাটা মোড়ের পথকে বাঁয়ে রেখে কবিলাসপুর, পেরুল,।বেলেড়া, আমলাচাতুরি পেরিয়ে দল পৌঁছাল গণেশপুর। কয়েকশো বছরের তেঁতুলগাছের ছায়ায় ক্ষণিকের বিরাম। সঙ্গে জুড়লেন মঙ্গল দলুই ও আরো একজন। প্রায় কুড়ি কিমি পথ পার হয়েছে দল। ক্লান্তি আসছিল সকলের। আরো একবার বিশ্রাম প্রয়োজন। এতক্ষণ চলছিল এই তো এসে গিয়েছি, আর আধ/এক কিমি, আর দশ মিনিট। এবার কল্লোল দাদা(রায়) বেশ জোরের সঙ্গে বলে উঠল, ঐ এক কিমির গল্প বুঝেছি এবার একটু বসা দরকার। যদিও তার নিজের জন্য এই জোর নয়। পিছিয়ে পড়া সঙ্গীদের একত্রিত করে আবার এগোবে বলেই এমন জোর। ক্ষণিকের বিশ্রাম নিয়ে সকলে আবারও সৌরভের তোলা স্লোগানে গলা মেলালেন। পরের গ্রাম গামারকুণ্ডু । স্থানীয় কয়েকজন অপেক্ষা করছিলেন, তাঁদের সঙ্গে আলাপ সেরে চা পানের বিরতি। প্রশান্ত সিংহ- সহ আরও কয়েকজন জুড়লেন দলে। প্রশান্তদা স্থানীয় বামপন্থী কর্মী। দেওয়াল লিখন, আর নানা প্রচারে শুরু থেকেই পদযাত্রার সঙ্গে। দুই দিকে চাষের মাঠ স্থানীয়রা জানালেন বেশির ভাগ জমিতে চাষ নেই এবার। বৃষ্টি নেই, নদী মৃতপ্রায়, জল ছাড়া চাষ হবে কীভাবে? প্রায় বিকেল গড়িয়েছে, গৌরাঙ্গ সাধু স্কুল শিক্ষক সকালে স্কুলের কাজে জুড়তে পারেননি। অন্তত কিছু পথ হাঁটতে হবে প্রাণের নদী কুশকর্ণীর জন্য। তাই টোটো ভাড়া করে এসেছেন তিনিও গলা মেলালেন, “নদী দখলদার নিপাত যাক।” দল ধীরে ধীরে হরিপুর পৌঁছাল। নাটমন্দিরে সতরঞ্চি পাতা হল, পদযাত্রীদের বিশ্রামের জন্য। ভোলাদা , কৈলাসভাই ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত। বারেবারে চা, টিফিন সেবা গ্রহণ করল দল। যেন এই সেবা করার জন্য গ্রাম কত বছর অপেক্ষা করছে । নাটমঞ্চে নিতাই বাউল আসছেন। নদীর জন্য কথা গানে হরিপুর মুখরিত হয়ে উঠবে আজ সন্ধ্যায়। লোকজন অনেক হয়েছে সৈকতদা (চৌধুরী) চিন্তিত হয়ে সন্তোষদার কাছে জানতে চাইলেন, “এত লোকের খাবার সংকুলান হবে তো?” দাদা, স্বভাব ভঙ্গিতে হেসে বললেন, “হবে হবে রে আমি এমনটা হবে ভেবেই ওদের জোগাড় রাখতে বলেছি।” দূরদর্শী মানুষ নেতৃত্বে থাকলে যেকোনও কঠিন কাজ সহজ হয়ে যায় আবার সে কথা প্রমাণ হল।
রাত অনেক হল, রাত্রিবাস ,’হরিপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেড’-এর অফিসে। গ্রামের অন্য দিকে। ভোজন শেষে সেখানেই যেতে হল দলকে। শীতের রাত। লেপ কম্বল সঙ্গে থাকা গাড়ি থেকে নামিয়ে শুয়ে পড়তে খুব দেরি হল না। সকলেই ক্লান্ত। গ্রাম কাঁপিয়ে নাসা গর্জনে মুখরিত করে সকলে ঘুমিয়ে পড়লেন। যাঁরা রাতের বেলায় আমাদের আগমন টের পায়নি সকাল হতেই তাঁরা জুটলেন সমিতির সামনে। আগ্রহী চোখ নিয়ে আমাদের দেখছেন। অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্যদা ছুটে নিয়ে এলেন প্রচারপত্র, হাতে হাতে পৌঁছে গেল সকলের। আগ্রহী চোখ এখন সেখানেই আটকাল। ওঁদের সামনে কিছু বার্তা দিয়ে পথ চলা শুরু হল। সন্তোষদা গান ধরলেন। গান শুধু গান নয় মনের গভীরে থেকে সমস্ত আবেগকে পুঞ্জীভুত করে বের করে নিয়ে আসা। গলা মেলালেন সকলে যে যেমন ভাবে পারেন। এমন ভাবেই তো নগর সংকির্তন করে প্রেমের বাণী ছড়িয়ে ছিলেন চৈতন্যদেব এই বাংলায়। তেমনি প্রতিবাদ আন্দোলন চলতেই থাকে যুগ যুগ ধরে। নদিয়ার যুগবার্তার সাংবাদিক সঞ্জিত কাষ্ঠ দু’দিন ধরে আমাদের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলেছেন। দলের কয়েকজনের ইন্টারভিউ নিয়ে আমাদের বিদায় নিলেন। রাজনগরের ফজু ভাই ওঁকে এগিয়ে দিতে গেলেন। কেন্দুলি-লাঙ্গুলিয়া পার করে খটঙ্গা পঞ্চায়েত অফিসের সামনে শুরু হল পথসভা। মৎস্যজীবীদের সমস্যা এবং নদী-খাল-বিল গবেষক বর্ষীয়ান প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ডঃ সুর্যেন্দু দে, কৃষি বিজ্ঞানী ডঃ দেবাশিস পাল-সহ নদী-পরিবেশ কর্মীরা নদী বাঁচানোর গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ করে ছোট নদী না বাঁচলে বড় নদীর জীবন সংকট অনিবার্য সেই কথা সমগ্র প্রচারে উঠে আসে। পথসভায় বিভিন্ন শিল্পীরা গানের মাধ্যমে নদীর কথা তুলে ধরেন। আর চিরন্তন-গণকণ্ঠের যৌথ প্রযোজনায় পথ নাটিকা “নদী” উপস্থিত করলেন ঝুম্পা মণ্ডল দাস, দেবাশিস দত্ত, মানস মজুমদর। রচনা নির্দেশনা দেবাশিস দত্ত। কুশকর্ণী নদী সমাজ গড়ে তোলার অঙ্গীকার নিয়ে পথ সভা শেষ হল।
লেখক একজন নদীকর্মী।
নদী সমাজ জিন্দাবাদ