ধোঁয়া আর ছাইয়ের স্তুপে ধুঁকতে থাকা লক্ষ লক্ষ জীবন 


  • July 20, 2022
  • (0 Comments)
  • 1522 Views

রাঁচি আর গিরিডি জেলাতে বায়ুদূষণ-এর সংস্পর্শে আসা ১২০০ জনের ওপর করা এক স্বাস্থ্য-সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়, গিরিডি জেলায় ৫৭ শতাংশ প্রৌঢ় ব্যক্তি শ্বসন সম্পর্কিত অসুখের শিকার। ৪৬ শতাংশ শিশুর মধ্যে কাশি ও ৪৩ শতাংশ শিশুর মধ্যে গলার শুষ্কতার লক্ষণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে গিরিডি জেলায় ৬১ শতাংশ মানুষের হাঁচির সমস্যা রয়েছে। ৭০ শতাংশ প্রৌঢ়ের মধ্যে দীর্ঘ নিঃশ্বাসের সমস্যা দেখা গেছে। ৬১ বছর বয়সের বেশি ৭৮ শতাংশ মানুষ ঘুমানোর সমস্যার শিকার। বায়ু দূষনের জন্য এই সমস্ত এলাকায় অ্যাজমা এবং সিওপিডি অসুখের পরিমাণ দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৭ জুলাই গ্রেপ্তার হওয়ার আগে এটিই ছিল ঝাড়খণ্ডের সাংবাদিক রূপেশ কুমার সিংএর শেষ প্রকাশিত রিপোর্ট।

 

“যখন এই অঞ্চলে কল-কারখানা আসা শুরু হল, তখন আমার বয়স ছিল প্রায় ৪০ বছর। গ্রামবাসীরা সবাই খুশি ছিল এবার আমাদের রোজগারের জন্য অন্য রাজ্যে যেতে হবে না। আমাদের এলাকায় নতুন নতুন হাসপাতাল আর স্কুল খুলবে, ঝকঝকে রাস্তা তৈরি হবে। কিন্তু আজ ৩০ বছর পরে যখন অতীতে ফিরে দেখি, তখন বুঝতে পারি বিকাশের নামে আমাদের এলাকার বিনাশ করা হয়েছে। আমাদের চাষের জমি বন্ধ্যা হয়ে গেছে। আমাদের গ্রামবাসীরা অনেক রকমের রোগে জর্জরিত। আর আমাদের বাচ্চাদের এখনও রোজগারের জন্য অন্য রাজ্যে যেতে হয়। এই এলাকা কারখানা থেকে নিঃসৃত ধোঁয়া আর ছাই ছাড়া কিচ্ছু পায় না।” কলহামানঝো গ্রামের ৭০ বছর বয়সি ভিখারি রায় বলতে গিয়ে কান্না চেপে গেলেন।

 

ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি থেকে প্রায় ২৯০ কিলোমিটার দূর গিরিডি জেলার এই গিরিডি শহর। রাঁচি থেকে রামগড়, হাজারিবাগ, বিষ্ণুগড়, বগোদর, ডুমরি, পিরটাঁড় হয়ে গিরিডি যাওয়ার পথে রাস্তার দু-দিকের পাহাড় আর জঙ্গল আপনাকে সম্মোহিত করে দেবে। কিন্তু গিরিডি শহর থেকে টুন্ডির দিকে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার যাওয়ার সাথে সাথেই ধুলো আর ছাইয়ের কালো আস্তরণ নেমে আসবে গাড়ির উপর। মোটর বাইকে যাওয়ার সময় হেলমেট না পরলে রাস্তায় এগোনো মুশকিল, আবার হেলমেট থাকলেও জামা কাপড়ের ওপর ধুলোর আস্তরণ থেকে রেহাই নেই। এবার ভাবুন এই এলাকায় মানুষ কীভাবে বাস করেন?

 

ধুলো আর ছাইয়ে দম বন্ধকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমি ১১ জুলাই ২০২২-এ এখানে পৌঁছলাম। আবহাওয়া সকাল থেকে ভালোই ছিল, এমনকি সকালে বৃষ্টিও হয়েছে। এজন্যই ধুলোও কম উড়ছিল। গিরিডি টুন্ডি রোডে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার চলার পরেই ধুলো উড়িয়ে এগিয়ে আসা ট্রাকের মিছিল আর রাস্তার দু’দিকে ধোঁয়া উগরে দেওয়া কারখানার সারি দেখা গেল। আমি গিরিডি শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে চতরৌ নামের জায়গায় পৌঁছেছি, যেখানে বালমুকুন্দ স্পঞ্জ অ্যান্ড আইরন প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি আছে। রাস্তার দু’দিকেই সারিসারি ট্রাক দাঁড়িয়ে। রাস্তার ধারে থাকা দোকানগুলো ধুলো আর ছাইয়ে আগাগোড়া মোড়া।

আমি সবার আগে বালমুকুন্দ স্পঞ্জ অ্যান্ড আয়রন প্রাইভেট লিমিটেডের সীমানা থেকে প্রায় ২৫০ মিটার দূরে মহুয়াটাঁড় নামের গ্রামটিতে গেলাম। এই গ্রামে সাঁওতাল ও কোল আদিবাসীদের ৫০ থেকে ৬০টি পরিবার বসবাস করে। গ্রামের প্রবেশপথেই একটা বাড়ির সামনে লাল পতাকা উড়ছিল, আসলে এটা ‘মজদুর সংগঠন সমিতি’র দপ্তর। ওই সময় দপ্তরে মজদুর সংগঠন সমিতির গিরিডি শাখার অধ্যক্ষ কমরেড হুবলাল রায়, বিনোদ মরীক, নবীন পান্ডে, লখন্ কোল, রঞ্জিত রায়, কানাই পান্ডেরা উপস্থিত ছিলেন। কমরেড হুবলালই জানালেন, “এটা আগে ‘মেহনতকশ মহিলা সংঘর্ষ সমিতি’র কার্যালয় ছিল। কিন্তু ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ তে ঝাড়খণ্ড সরকার মজদুর সংগঠন সমিতির ওপর ভাকপা (মাওবাদী)-র প্রকাশ্য সংগঠন হওয়ার অভিযোগ এনে সংগঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং কার্যালয় সিল করে দেয়। কিছুদিন আগেই ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২-এ রাজ্যের হাই কোর্ট সংগঠনের ওপর করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে কিন্তু এখনও কার্যালয় খোলা সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরকেও এই কার্যালয় থেকে নিজেদের সাংগঠনিক কাজ করতে হচ্ছে।”

 

মহুয়াটাঁড়-এর স্থানীয় বাসিন্দা লখন্ কোল জানান, “১৯৯০ এর পরেই এই এলাকায় পুঁজিপতিরা আসা শুরু করে। সেই সময় বাজার মূল্য ১০ হাজার টাকা প্রতি একর হিসেবে আমাদের জমি কিনে নেওয়া হয়। আমাদের আশ্বস্ত করা হয় যে এখানে চাকরি হলে আপনাদের কোন ক্ষতি হবে না, বরং উল্টে লাভই হবে। এখানে আমরা স্কুল আর হাসপাতাল বানাব। আমরা পুঁজিপতিদের চক্রান্তের শিকার হয়ে অনাবাদি জমির পাশাপাশি চাষের জমিও তাদের দিয়ে দিয়েছিলাম। এছাড়াও তারা বন বিভাগ, অনাবাদি ও সরকারি জমির উপরও প্রশাসনের সাথে যোগসাজশ করে দখল করে নেয়। কারখানা আসার সাথে সাথেই তার বর্জ্য পদার্থের জন্য আমাদের চাষের জমির উৎপাদন ক্ষমতা কমতে শুরু করে। আমার গ্রামের আশেপাশে সব জলের উৎস শুকিয়ে যায়। টিউবওয়েলও গরমের জন্য শুকোতে শুরু করে। কোনো কোনো বছর তো এমনও হল যে গ্রামের কুয়োতে ট্যাঙ্কার থেকে জল ঢালার দরকার পড়ল। আমার গ্রামবাসীরা অনেক আন্দোলন করেছে, বিক্ষোভের পরে কিছুদিন অবধি দূষণ নিয়ন্ত্রণে থাকত, কিন্তু তারপর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যেত।”

 

“আমি কোম্পানি থেকে বেরোনো নোংরা জল পর্যবেক্ষণ করার দাবি জানালে, তারা আমাকে বালমুকুন্দ স্পঞ্জ অ্যান্ড আয়রন প্রাইভেট লিমিটেডের প্রাচীরের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে প্রাচীরের মধ্যে বড় বড় ছিদ্র করা আছে। আর সেটা থেকে দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা জল বাইরে বেরিয়ে আসছে। সেখানে উপস্থিত এক আদিবাসী কৃষক জানালেন, এখন এই জল নিকাশির জন্য বাইরে নর্দমার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে নর্দমার পথ ধরে সোজা নদীতে গিয়ে মিশতে পারে। প্রথম প্রথম এই জল চাষের জমির মধ্য দিয়েই যেত, যার জন্য আমাদের চাষের জমি বন্ধ্যা হয়ে যায়। এই জল খাওয়ার জন্য অনেক গৃহপালিত পশু মারা গেছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও কোম্পানি এই জল নিকাশির জন্য কোনও সুরক্ষিত রাস্তা বের করার প্রয়োজন বোধ করেনি।”

 

প্রথম প্রথম কোম্পানিগুলো তাদের আবর্জনা যেখানে খুশি ফেলে দিত, কিন্তু এই অঞ্চলের গ্রামবাসীদের আন্দোলনের জন্য তারা এখন আবর্জনার স্তুপ করতে জমি কিনতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোম্পানিগুলো তাদের আবর্জনা প্রশাসনের সাথে যোগসাজশ করে যেখানে সেখানে ফেলে দেয়। এই রকমই প্রায় হাজার টন আবর্জনা আমি গিরিডি থেকে টুন্ডি যাওয়ার রাস্তায় উশ্রি নদীর বাম দিকে সরকারি জমির উপর স্তুপ করা দেখেছি।

 

আসলে ১৯৯০-এর পরে উদারীকরণ, বেসরকারিকরণ, বিশ্বায়নের নীতি আসার পর গিরিডি জেলার এই অঞ্চলে স্পঞ্জ আয়রন, স্টিল, কেবল, সিমেন্ট ইত্যাদি অনেক বেসরকারি কোম্পানি খুলেছে। যদিও ১৯৮০-তেই মোঙ্গিয়া স্পঞ্জ অ্যান্ড আয়রন প্রাইভেট লিমিটেড নামের ফ্যাক্টরি এই এলাকায় এসে গেছিল। কিন্তু ১৯৯০ সালের পরে কারখানা আসার হার বৃদ্ধি পায় আর ২০০৬ নাগাদ এই এলাকায় প্রায় ৬০টা ফ্যাক্টরি খুলে যায়। আজ এই এলাকায় প্রায় ১০০টা ছোট বড় কোম্পানি আছে। যার মধ্যে সর্বনিম্ন ২০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০০ অবধি শ্রমিক কাজ করে। বালমুকুন্দ স্পঞ্জ অ্যান্ড আয়রন প্রাইভেট লিমিটেড, মোঙ্গিয়া স্পঞ্জ অ্যান্ড আয়রন প্রাইভেট লিমিটেড, ভেঙ্কেটেশ্বর স্পঞ্জ অ্যান্ড আয়রন প্রাইভেট লিমিটেড, অতিবীর স্পঞ্জ আয়রন হাইটেক পাওয়ার প্ল্যান্ট, শিবম রোলিং মিল, ল্যাংটা বাবা স্টিল প্লান্ট, কস্তুরি রাইস মিল, বালাজি রিং প্লান্ট, শৈলপুত্রী রোলিং মিল, গণপতি টার মিল, মোঙ্গিয়া রোলিং মিল, অ্যালুমিনিয়াম প্ল্যান্ট, ভরদ্বাজ রোলিং মিল, চায়না রোলিং মিল, সালুজা স্পঞ্জ অ্যান্ড আয়রন প্রাইভেট লিমিটেড, সুন্দরম ফ্যাক্টরি, মুদ্রা রাইস মিল, আলকাতরা বিপ প্ল্যান্ট, লাল স্টিল রোলিং মিল, অতিবীর বার ফ্যাক্টরি, সর্বমঙ্গলা কুট ফ্যাক্টরি, জয় স্টিল টার ফ্যাক্টরি, অতিবীর রোলিং মিল, স্বাতী পিক অভ্রন ফ্যাক্টরি, মোঙ্গিয়া পাওয়ার প্ল্যান্ট, বালাজি হার্ড কোক প্ল্যান্ট, নিরঞ্জন হাইটেক পাওয়ার প্ল্যান্ট, সিমেন্ট প্ল্যান্ট, আদিশক্তি রোলিং মিল, কোহিনুর রোলিং মিল, লাল ফেরো রোলিং মিল, শিবশক্তি হার্ডকোক ফ্যাক্টরি, অঞ্জনি হার্ডকোক ফ্যাক্টরি, বীরশিখা ইন্ডাস্ট্রি, লক্ষ্মী রাইস মিল, রেনু এন্টারপ্রাইজেস, নারায়ণী বরদে এন্টারপ্রাইজেস, রুবি মাইকা ইত্যাদি হল এই এলাকার বিশিষ্ট কোম্পানির তালিকা। এই কোম্পানিগুলো প্রধানত : স্পঞ্জ আয়রন, সিলিকন ম্যাঙ্গানিজ, সেন্টর, আলকাতরা, সিমেন্ট, টায়ার গলিয়ে তেল নিষ্কাশন করার কোম্পানি। সেখান থেকে নির্গত দূষণ গ্রামবাসীদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে রেখেছে। এই কোম্পানিগুলো প্রধানত গিরিডি ভূখণ্ডের পাঁচটা পঞ্চায়েত যথা মোহনপুর, পুরনানগর, গাদি শ্রীরামপুর, মঙ্গরুডিহ এবং উদনাবাদে অবস্থিত।

 

টিকোডিহর পাশে শিবশক্তি হার্ডকোক ভট্টা নামক ফ্যাক্টরি আছে, যেখানে টায়ার গলিয়ে তেল বের করা হয়। এই ফ্যাক্টরি থেকে নিঃসৃত ধোঁয়ার জন্য গ্রামবাসীদের নাকে-মুখে দূষিত পদার্থের আস্তরণ তৈরি হয়ে যায়। লক্ষ্মী রাইস মিল থেকে অনবরত বেরোনো নোংরা জল এখানকার জমিকে বন্ধ্যা করে দিয়েছে আর এত দুর্গন্ধ যে দাঁড়িয়ে থাকা দুষ্কর। আবার এই জলই উশ্রি নদীতে ফেলা হয়। এই এলাকায় অবস্থিত অনেক কোম্পানির নোংরা জল উশ্রি নদীতে গিয়ে মেশে, অথচ এই নদীতেই মানুষজন স্নান করে আর খাওয়ার জলের উৎস হিসেবেও এটা ব্যবহার করা হয়।

 

গাদি শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের কলহামানঝো গ্রামের দিকে যাওয়ার পথে রাস্তায় ধারে ছোট ছোট পাহাড় দেখেছিলাম, যেটা ছিল বালমুকুন্দ আর অতিবীর স্পঞ্জ অ্যান্ড আয়রন ফ্যাক্টরি থেকে বেরোনো আবর্জনার পাহাড়। সেখানে উপস্থিত মানুষজন জানাল, শুরুর দিকে এখান থেকে যাওয়া মুশকিল ছিল কারণ বাতাসে চারিদিকে আবর্জনা উড়তে থাকত। গরমকালে আপনি এই রাস্তা দিয়ে যেতেই পারবেন না। কিন্তু পরে ‘মজদূর সংগঠন সমিতি’র নেতৃত্বে ব্যাপক আন্দোলনের ফলে এই আবর্জনাকে মাটি দিয়ে ঢাকতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অনেকদিন ধরে বৃষ্টির ফলে আবার আগের মত অবস্থায় ফিরে এসেছে। যখন কলহামানঝো পৌঁছলাম, সেখানে দালানে বসে থাকা গ্রামবাসী ভিখারি রায়, সাধু যাদব, কাশীনাথ হাজারী, বাসুদেব যাদব, প্রভুদয়াল মাহাতো, রামু কোলদের দেখা পেলাম। ভিখারি রায়ের বক্তব্য আপনারা প্রথমেই পড়েছেন। ৬০বছর বয়সি সাধু যাদব জানালেন, “আমার দু-বিঘা জমি আছে, কিন্তু গত দু’বছর ধরে আমি চাষবাস বন্ধ করে দিয়েছি কারণ এখন জমি থেকে সামান্য খরচটুকু উঠে না। এই পরিস্থিতি গ্রামের প্রায় সমস্ত কৃষকদের। জমির পাশেই আবর্জনার ঢিপি থাকার জন্য বৃষ্টির জল ধুয়ে সেই জল আমাদের খেতে যেত, যার ফলে আমাদের জমি নিষ্ফলা হয়ে গেছে।”

 

পাশেই বসে থাকা আদিবাসী রামু কোল বলেন, “১৬ বছর আগে কোম্পানি খোলার জন্য আমাদের ১৫ হাজার টাকা প্রতি একর দামে কিনে নেওয়া হয়েছে। সেই সময় আমাদের জানানো হয়নি এখানে আবর্জনার ডাম্পিং ইয়ার্ড বানানো হবে। তখন আমরা জানলে কখনোই জমি দিতাম না।”

 

কাশীনাথ হাজারী আরও জানান, “যতটা জমি আবর্জনা ফেলার জন্য কেনা হয়েছে, তার দ্বিগুণ জমিতে আবর্জনা ফেলা আছে, এই অতিরিক্ত জমি আসলে সরকারি, অনাবাদি ও বন বিভাগের জমি। এবার যখন আমরা এই অতিরিক্ত জমিতে আবর্জনা ফেলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে যাই, কর্তৃপক্ষ বলে আপনার আটকানোর কে আর আমাদের হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।”

 

আলোচনা চলতে চলতেই সাধু যাদব বললেন “এই আবর্জনা ডাম্পিংয়ের জন্য আমার গ্রামে অনেক লোক অসুস্থ হয়েছে। ছয় মাস আগেও যে বাচ্চা মেয়েটা হেসে খেলে বেড়াত, তার অবস্থা দেখে আপনি শিউরে উঠবেন।” এটা শুনেই আমি মেয়েটার সাথে দেখা করার কথা তুললাম। তারপর ওখানে বসে থাকা সকলের সাথে আমিও গ্রামের একটা বাড়িতে গিয়ে পৌছালাম। ১১ বছর বয়সি ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ে খুশবু যখন তার মায়ের সাথে উঠোনে বেরিয়ে এলো, তার বীভৎস ভয়ানক চেহারা দেখে আমার শরীরের রীতিমতো শিহরণ বয়ে গেল। খুশবুর মুখটাও বোঝা যাচ্ছিল না। তার মা বলল “আগে এই অবস্থা ছিল না। সে পড়াশোনা করত, গরু চড়াতে যেত আর আবর্জনা ডাম্পিং-এর পাশ থেকে পাশের গ্রামে দুধ পৌঁছাতেও যেত। ছয় মাস আগে একদিন বলল ভীষণ মাথায় যন্ত্রণা করছে আর হঠাৎ করেই পরের দিন থেকে তার চেহারার পরিবর্তন হতে শুরু হল। আমি রাঁচি, বোকারো, গিরিডিতেও ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। গত দু’মাস ধরে শুধু জুস আর দুধের ওপর বেঁচে আছে মেয়েটা। আমার বাচ্চা মেয়েটাকে দূষণ তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে।”

 

খুশবুর বাবা ৩৫ বছর বয়স বয়সি চৈয়া মাহাতো নিজেও অজ্ঞাত অসুখের শিকার আর ধীরে ধীরে এখন ৬০ বছর বয়সি দেখতে লাগে ওঁকে। খুশবুর দাদু ৭৫ বছর বয়সি লক্ষণ মাহাতোর কেশে কেশে অবস্থা শোচনীয়। গ্রামবাসীদের কথা অনুযায়ী দূষণের জন্য একটা হাসিখুশি পরিবার আজ তিলে তিলে মৃত্যুপথযাত্রী। এটা শুধু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এখানকার বেশিরভাগ পরিবারের এই অবস্থা।

 

কলহামানঝো থেকে বেরিয়ে পাশের গ্ৰাম হেঠ পহরি এসে পৌঁছলাম আমি। ভোলানাথ পাণ্ডে, গোবর্ধন পণ্ডিত, নারায়ণ রায়, ঝগড়ু রায়, চমরু রায়েরা তখন মন্দির চত্বরে বসে। ভোলানাথ পাণ্ডের কথায়, “যে জমিতে আগে ১০ মন ধান হতো, এখন সেখানে ২ মন করে ফসল উঠছে। চালের রঙও এখন কালো হয়ে গেছে। যখন ধান ফুটতে শুরু করে তখন তার মধ্যে ছাই ঢুকে, অধিকাংশ গাছে ধানই আসে না, এলেও তা কালসিটে হয়ে থাকে। আমাদের এলাকায় জলস্তরও অনেক নীচে নেমে গেছে। পাশের রুবি মাইকা ফ্যাক্টরি থেকে কয়েক হাজার ফিট নীচে ডিপ বোরিং করানো হয়েছে, যা থেকে প্রতিদিন শয়ে শয়ে ট্যাঙ্কার জল তোলা হয়। এইজন্য জলস্তরের এই অবস্থা।”

 

আমি মহুয়াটাঁড়, গঙ্গাপুর, মনঝলাডিহ, গাদি শ্রীরামপুর, তুরুকডিহা, চতরৌ, কোলহরিয়া, কলহামানঝো, হেঠ পহরি, পুরনি পটরিয়া ইত্যাদি গ্ৰামের শতাধিক গ্ৰামবাসীর সাথে দেখা করেছি আর প্রায় সকলেই ভিখারি রায়ের বক্তব্যের সাথে সহমত। গ্ৰামবাসীদের সাথে কথা বলতে বলতে আরও একটা কথা স্পষ্ট হল যে, “এই কোম্পানিগুলোতে স্থানীয় বাসিন্দার সংখ্যা মাত্র ২০ শতাংশ। এরা বিহার, বাংলা, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, পঞ্জাব, হরিয়ানার মতো রাজ্য থেকে শ্রমিক আনে, কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের কাজে রাখে না। এই কোম্পানিগুলোতে সব কাজের জন্য আলাদা আলাদা ঠিকাদার আছে, অর্থাৎ সব কাজ ঠিকাদারির মাধ্যমেই হয়। ক’জন শ্রমিক নূন্যতম মজুরি পায় তা সন্দেহের। অধিকাংশ ঠিকাদারও ভিনরাজ্যের, তাই তারা সেখান থেকেই শ্রমিক আনে, আর তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও কোম্পানি গেটের ভেতরেই হয়। শ্রমিকরা বাইরে বের হতে পারে কিনা তাও সন্দেহের। ট্রান্সপোর্ট, চড়াই, বর্জ্য পদার্থ ছাঁটাইয়ের মতো কাজই কেবল স্থানীয় ঠিকাদার আর মজুররা পায়। এই ঠিকাদাররা আবার সাধারণত উঁচু জাতের স্থানীয় লোক। কোম্পানিগুলোতে কাজের সময় ১২ ঘণ্টা। কোনও শ্রমিকের কাছে পরিচয়পত্র‌ অবধি নেই। সব গ্ৰামগুলো থেকে একটা কথা স্পষ্ট ভাবে সামনে আসে, “আমাদের এই কোম্পানিগুলোতে কাজ এই জন্য দেওয়া হয় না যে আমরা কোম্পানিতে ঢুকে শ্রমিকের অধিকারের কথা বলব।” গ্ৰামগুলোতে ঘুরতে ঘুরতে সড়কপথের শোচনীয় অবস্থাও চোখে পড়ল।

 

 

আমি গ্ৰামবাসীদের বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করতে গেলে কোম্পানির গেটে থাকা দারোয়ান জানাল যে মালিক আজ আসেননি, কাল আসবেন। সময়ের অভাবের জন্য দ্বিতীয় দিনে যেতে পারিনি আমি। দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের অফিস তো আবার গিরিডিতেই নেই, আছে হাজারীবাগে।

 

মজদুর সংগঠন সমিতির গিরিডি শাখার অধ্যক্ষ, যাঁর বাড়ি এই এলাকার পুরনি পেটরিয়া গ্ৰামে, কমরেড হুবলাল রায় জানালেন, “এমনটা নয় যে দূষণের বিরুদ্ধে এখানকার জনগণ লড়াই করেনি। আমরা দীর্ঘ লড়াই চালিয়েছি। ২০০৬-এ চতরৌতে ১০ দিনের ধরনা প্রর্দশনী হয়েছিল, যাতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সামিল হতেন। ২০০৭-এ দূষণের বিরুদ্ধে এই এলাকার ৩০-৪০টা স্কুলের বাচ্চারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল করে, সকলে মোহনপুরের দুর্গা শিশু নিকেতনে জমা হয় আর সভা করে দূষণের বিরুদ্ধে আওয়াজ শক্তিশালী করে।

 

২০০৮ সালে হাজার হাজার লোক গিরিডি সদর হাসপাতালে দূষণ জনিত রোগের উচিত চিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ২০১০-এ প্রায় দশ হাজার গ্ৰামবাসী একত্রে গিরিডি ব্লক কার্যালয়ে দূষণের বিরুদ্ধে প্রদর্শন করে। আমরা বুদ্ধিজীবীদেরকেও শামিল করেছিলাম। আমাদের আন্দোলনের ফলে অনেকবার তদন্তকারী টিম আসে। দূষণের উপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হয়, কিন্তু আমাদের সংগঠনের উপর প্রতিবন্ধকতা লাগার পর কোম্পানিগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা আবার শুরু হয়। এখন আমাদের সংগঠনের উপর থেকে প্রতিবন্ধকতা সরে গেছে আর আমরা আবার নতুন করে লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করছি। আমরা সর্বপ্রথমে ডিসি, অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনার, এসডিও এবং সমস্ত কোম্পানিতে আমাদের দাবিপত্র পেশ করছি এবং শ্রমিক ও গ্রামবাসীদের মধ্যে লিফলেট বিলি করছি। যদি ১৫ দিনের মধ্যে আমাদের দাবিদাওয়ার ওপর চর্চা শুরু না হয় তখন আমরা পথে নামব।”

 

গিরিডির এই পাঁচ পঞ্চায়েতে দূষণের জন্য সাধারণ মানুষের দম বন্ধ হয়ে আসছে। এই এলাকাগুলোতে অ্যাজমা, টিবি, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, স্ক্লেরোসিস, কনজাঙ্কটিভাইরাস, ক্যান্সার এর মতো মারণ রোগের সংখ্যাধিক্য রয়েছে। এমনটাও নয় যে এই এলাকায় অবস্থানকারী কোম্পানিগুলোর কার্যকলাপ সম্পর্কে রাজ্য সরকার অবগত নয়।

 

২৮-২৯ নভেম্বর, ২০২০ তে ঝাড়খণ্ড বিধানসভার নিবেদন কমিটি এই এলাকায় দু’দিনের পর্যবেক্ষণ চালায়। এই কমিটিতে সভাপতি বিধায়ক উমাশঙ্কর যাদব অকেলা, বিধায়ক পূর্ণিমা সিং, বিধায়ক ইন্দ্রজিৎ মাহাতো এবং গিরিডি বিধায়ক সুদিব্য কুমার সোনু প্রমুখরা উপস্থিত ছিলেন। এই সমিতি জানায়, কোম্পানিগুলো নির্দিষ্ট প্রোটোকল ও নিয়মকানুন পালন করছে না। এই সমিতি আধিকারিকদের র্ভৎসনা করে যে কোম্পানিগুলোকে সমস্ত প্রোটোকল ও নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে, অন্যথায় রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেবে।

 

এর পর ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ গিরিডি বিধায়ক সুদিব্য কুমার সোনুর নেতৃত্বে এক রাজ্যস্তরীয় আধিকারিকদের টিম, যার মধ্যে রাজ্য উদ্যোগ বিভাগ রাঁচির ডাইরেক্টর, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ হাজারীবাগের রিজিওনাল অফিসার, ডিএফও, অ্যাডিশনাল কালেক্টর ও বিভাগের অফিসার উপস্থিত ছিলেন, এই এলাকার পর্যবেক্ষণ করে। এই টিম জানায় যে এই বিষয়ে একটি বিস্তৃত রিপোর্ট রাজ্য সরকার আর কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দিষ্ট বিভাগে পাঠিয়ে দূষণের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য একটি গাইডলাইন ও সমস্ত নিয়ম পালনের জন্য একটা কড়া আইনি প্রক্রিয়া শুরুর উপর জোর দেওয়া হবে।

 

দু’বছরে দু’বার রাজ্যস্তরীয় টিম আসার পরেও এখানকার পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। একজন গ্রামবাসী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান যে ‘দীপাবলি, দুর্গাপূজা আর হোলির সময় সমস্ত কোম্পানিতে নেতা মন্ত্রী, আধিকারিক আর সাংবাদিকদের ভিড় লেগে থাকে। এদের সকলের গাড়ি আপনি কারখানার গেটে পাবেন। এই কোম্পানিগুলো সব জায়গায় পর্যাপ্ত পরিমাণে নজরানা পাঠিয়ে দেয়, তাই এদের কোনওরকম ক্ষতি হয় না।”

 

গ্রামবাসীরা এও জানায় যে এই এলাকায় কোম্পানিগুলো দালালদের আখড়া বানিয়ে রেখেছে। যদিও ২০১৭ পর্যন্ত ‘মজদুর সংগঠন সমিতি’র আন্দোলনের জন্য কারখানার শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি, আট ঘণ্টার কাজ, প্রতি মাসে তিন কিলো চিড়া আর দু-কিলো গুড়, জুতা, দস্তানা, হেলমেট, কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হলে উচিত ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের জন্য চাকরির বন্দোবস্ত ইত্যাদির সুযোগ-সুবিধা পেত, কিন্তু মজদুর সংগঠন সমিতির ওপর প্রতিবন্ধকতা আসার পর ৫ বছরে শ্রমিক ও গ্রামবাসীদের ব্যাপক শোষণ হচ্ছে।

 

শ্রমিক নেতা কানহাই পাণ্ডে জানান, “প্রথমে তো ডিউটির সময়ে শ্রমিকের মৃত্যু হলে বাইরের রাস্তায় মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হত। আমাদের আন্দোলনের ফলেই ১০-১৫ লাখ ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের সদস্যদের চাকরি পাওয়া শুরু হল। উনি আরও জানালেন যে ১৫ মার্চ ২০২২ সালে যখন আমরা মজদুর সংগঠন সমিতির উপর থেকে প্রতিবন্ধকতা সরে যাওয়ার খুশিতে বিজয় মিছিল বের করছি, তখনই জানা গেল সর্বমঙ্গলা কুট ফ্যাক্টরির দেওয়াল ধসে তিন জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং সকল মজদুরের পরিবারকে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং একজন সদস্যকে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।”

 

২ মে ২০২২, বিশ্ব অ্যাজমা দিবসের আগের সন্ধ্যায় রাঁচিতে আয়োজিত এক সেমিনারে এশিয়ান মেডিক্যাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং সাউথ এশিয়া মেডিক্যাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর সহযোগিতায় ‘সুইচ অন ফাউন্ডেশন’ দ্বারা একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এই রিপোর্টটি রাঁচি আর গিরিডি জেলাতে বায়ুদূষণ-এর সংস্পর্শে আসা ১২০০ জনের ওপর করা এক সমীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি। এই রিপোর্টে বলা হয় যে গিরিডি জেলায় ৫৭ শতাংশ প্রৌঢ় ব্যক্তি শ্বসন সম্পর্কিত অসুখের শিকার। ৪৬ শতাংশ শিশুর মধ্যে কাশি ও ৪৩ শতাংশ শিশুর মধ্যে গলার শুষ্কতার লক্ষণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে গিরিডি জেলায় ৬১ শতাংশ মানুষের হাঁচির সমস্যা রয়েছে। ৭০ শতাংশ প্রৌঢ়ের মধ্যে দীর্ঘ নিঃশ্বাসের সমস্যা দেখা গেছে। ৬১ বছর বয়সের বেশি ৭৮ শতাংশ মানুষ ঘুমানোর সমস্যার শিকার। বায়ু দূষনের জন্য এই সমস্ত এলাকায় অ্যাজমা এবং সিওপিডি অসুখের পরিমাণ দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

গিরিডি জেলার উপরোক্ত পাঁচ পঞ্চায়েতে অবস্থিত প্রায় ১০০টি কোম্পানি যেভাবে লক্ষাধিক মানুষকে ধোঁয়া আর ছাইয়ের ভিতর তিলে তিলে কষ্ট পেতে বাধ্য করেছে, প্রায় একই পরিস্থিতি ঝাড়খণ্ডের আরও অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল অঞ্চলে দেখা যায়। কোম্পানিগুলো নিজেদের মুনাফার জন্য আশেপাশের গ্রাম্য জীবনের সাথে ছেলেখেলা করে। এরা বিকাশের সোনালি স্বপ্ন দেখিয়ে বিনাশের অন্ধকার নামিয়ে আনছে। বিকাশের এই জনবিরোধী মডেলের বিরুদ্ধে গিরিডির জনগণের আক্রোশ এখন ভীষণ ঝড়ের আগের নিস্তব্ধতার মতো। আগামী দিনে এই স্তব্ধতা কোন প্রলয়ের সূচনা করে সেটা সময়ই বলবে।

 

[রূপেশ কুমার সিং ঝাড়খণ্ডের একজন স্বতন্ত্র সাংবাদিক।গত রবিবার (১৭/০৭/২০২২) ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা থানার পুলিশ সকাল ৫:২৫-এ তাঁর বাড়িতে হানা দেয় এবং প্রায় ৯ ঘণ্টা তল্লাশির পর, গত বছর নভেম্বর মাসে ঝাড়খণ্ডে ধৃত সিপিআই (মাওবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রশান্ত বোস ও শীলা মারান্ডি-সহ পাঁচ জনের নামে যে এফআইআর দাখিল করা হয়, তাঁকেও একই এফআইআর-এর ভিত্তিতে মাওবাদীদের সাহায্য করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। হিন্দি জনচৌক সংবাদপত্রে প্রকাশিত, গ্রেফতার হওয়ার আগে লেখা এটি তার শেষ গ্রাউন্ড রিপোর্ট। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় শিল্পায়ন নিয়ে যে “উন্নয়ন”/”বিকাশ” এর মডেল ফেরি করে বেড়ায় রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, পুঁজিপতিরা, জনমানসে তা উন্মোচন করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে বাংলায় অনুবাদ করছেন সৈকত মাইতি]

 

https://janchowk.com/jalvayu/pollutiona-have-taken-several-lives-in-giridih-due-to-its-unplanned-factories/

 

Share this
Leave a Comment