ধিনকায়া গ্রামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ওয়েলিংটন থেকে গ্রেফতার ছাত্র ছাত্রীরা


  • January 20, 2022
  • (0 Comments)
  • 627 Views

 বামগণতান্ত্রিক প্রতিবাদধারা স্তব্ধ করতে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বদ্ধ পরিকর তাই, কখনো বা গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সিমিতির পদযাত্রা স্তব্ধ করে, কখনো বা ছাত্রছাত্রীদের মিছিলে পুলিশি হামলার মধ্য দিয়ে, কখনো বা প্রতিবাদকারীদের ডিএম এক্ট আরোপ করে, বর্তমান শাসক গোষ্ঠী তাঁদের অসহিষ্ণু অগণতান্ত্রিক মনোভাব জারি রেখেছেন  

 

১৯ শে জানুয়ারি কলকাতার বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং সচেতন নাগরিকরা উড়িষ্যার ধিনকিয়া গ্রামে ঘটে চলা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কলকাতার উৎকল ভবনে বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি নেন। মিছিল ওয়েলিংটন থেকে ছাড়তেই জানা যায় বিক্ষোভকারীদের পুলিশ গ্রেফতার করে।

উড়িষ্যার নবীন পট্টনায়কের সরকার জিন্দাল কর্পোরেট গোষ্ঠীর হাতে জমি তুলে দেওয়ার জন্য ধিনকিয়ার গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ করবার দিকে এগোচ্ছে। এর আগেও এই একইরকম চেষ্টা তাদের করতে দেখা যায় সেই সময় পোসকো কোম্পানির হাত ধরে। কিন্তু তার বিরুদ্ধেও জোর আন্দোলন গড়ে তোলেন গ্রামবাসীরা। ফলে সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়। এবারও তারা সেই একই ছক সাজিয়ে মাঠে নেমেছে গ্রাম উচ্ছেদ করতে। তবে উড়িষ্যার সরকারের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে চুপ করে নেই ধিনকিয়ার গ্রামবাসীরাও। তাঁরা জোর আন্দোলনে নেমেছেন। তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে সেই আন্দোলনকে দমাতে ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নামানো হয়েছে গোটা গ্রামে।

 

কলকাতার বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং ফেমিনিস্ট ইন রেজিস্টেনসের সদস্যা ঝেলাম রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, পুলিশ তাঁদের মিছিল কিছু দূর এগোতেই গ্রেফতার করে। এবং তাঁদের  বউবাজার থানায় নিয়ে আসা হয় । প্রায় ৩২ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই ভূমিকা ছাত্র-ছাত্রীদের মনে তাঁর সরকারের অবস্থান নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করছে বলেই জানা যায়। প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র ফেডারেশনের প্রতিনিধি শিল্পক জানান, “আজকের গ্রেফতারের ঘটনা নতুন কিছু না; রাজ্যের যে কোনও প্রতিবাদী স্বরকে গত একটা পর্যায় জুড়ে দমন করতে করতে এগোচ্ছে তৃণমূল সরকার। একদিকে শাসক দলের যে কোনও রাজনৈতিক-ভোটের কর্মসূচী চলছে; ভোটের প্রচারে বাকি সংসদীয় দলগুলোও ছাড় পাচ্ছে। কেবল রাজ্যের প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মীদের বারবার নেমে আসছে রাষ্ট্রীয় আঘাত। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর মমতা ব্যানার্জী আসলে যে কোনও বিরুদ্ধ স্বরকে অঙ্কুরে বিনাশ করে দিতে চেয়ে গোটা দেশের কাছে নিজের রাজ্যের ‘শান্তিপূর্ণ’ বাতাবরণকে একদিকে তুলে ধরতে চাইছে; অন্যদিকে পুঁজির প্রিয়পাত্রী হিসেবে নিজের ভাবমূর্তি বানাতেও উদ্যত।”

 

যদিও আটক ছাত্রছাত্রীদের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়, ঘটনাটি আরেকবার জানান দিয়ে যায় যে বাম -গণতান্ত্রিক প্রতিবাদধারা  স্তব্ধ করতে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বদ্ধ পরিকর । তাই, কখনো বা গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সিমিতির পদযাত্রা স্তব্ধ করে, কখনো বা ছাত্রদের মিছিলে পুলিশি হামলার মধ্য দিয়ে, কখনো বা প্রতিবাদকারীদের ডিএম এক্ট আরোপ করে, বর্তমান শাসক গোষ্ঠী তাঁদের অসহিষ্ণু ও অগণতান্ত্রিক মনোভাব জারি রেখেছেন।

 

প্রতিবেদক : পীযুষ দত্ত, ছবি : শঙ্খদীপ ব্যানার্জী

Share this
Tags :
Leave a Comment