গ্রাউন্ডজিরোর প্রতিবেদন।
পরিবেশের তোয়াক্কা না করে, গ্রামসভার বিনা অনুমতিতে রেলপথ নির্মাণের অভিযোগ উঠল ফের। হিমালয়ান ফরেস্ট ভিলেজার্স অর্গানাইজেশন বা এইচএফভিও ১১ ফেব্রুয়ারি এই অভিযোগ তোলে। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার সম্পাদক লীলাকুমার গুরুং বলেন, বনবাসীদের আইনি ও সাংবিধানিক অধিকারকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে জবরদস্তি সেভক-রংপো রেলপথের কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর ফলে কালিম্পং এলাকার তিস্তানদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ২৪টি বনগ্রামের ১০ হাজার বাসিন্দার জীবন-জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এবং রংপো বনগ্রামের একটি সেতু নির্মাণের জন্যই ৭৫টি পরিবার উচ্ছেদের মুখে।
পরিবেশ আন্দোলনকর্মী সৌমিত্র ঘোষ উত্তরাখণ্ডে পাহাড় ও বন ধ্বংস করে উন্নয়ন কার্যের ফলে সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, কালিম্পং পাহাড়েও পরিবেশের পক্ষে বিপজ্জনক নির্মাণ কাজ চলছে। তাঁর মতে সিকিম পাহাড়ে হিমবাহপুষ্ট জলাধার রয়েছে। প্রাকৃতিক কিংবা মনুষ্যসৃষ্ট কোনও কারণে তা উত্তরাখণ্ডের মতো ভেঙে পড়লে, তিস্তা নদীখাত বরাবর, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং গ্রামগুলি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তাঁর আরও অভিযোগ, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং লকডাউনের সুযোগে খোদ মহানন্দা অভয়ারণ্যেই লাগামহীন নির্মাণ ও গাছকাটা হয়েছে। পরিবেশ কিংবা বনদপ্তরের কোনও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি সরকারি নির্মাণ সংস্থা। তিনি জানান, বনাধিকার আইন, ২০০৬ মানা তো দূরের কথা বন সুরক্ষা আইন, ১৯৮০-ও মানা হচ্ছে না। ভিলেজ অর্গানাইজেশনের আরও অভিযোগ, প্রতিবাদ জানালে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের একটি অংশ নির্মাণ সংস্থা ও ঠিকাদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ কিংবা গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে চলেছে।
ইতিমধ্যেই গ্রামসভাগুলির হয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংস্থার দাবি, অবিলম্বে তিস্তা এলাকায় সব ধরনের বেআইনি নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে হবে। এবং বন অধিকার আইনের মাধ্যমে বনবাসীদের জল-জমি-জঙ্গলের উপর সমস্ত অধিকারের আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে।

