ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (একতা উগ্রহন)-এর প্রতিষ্ঠাতা যোগিন্দর সিং উগ্রহনের একটি সাক্ষাৎকার


  • February 4, 2021
  • (0 Comments)
  • 820 Views

নভেম্বর ২০২০-এ যখন দিল্লি বর্ডারে কৃষকদের অবস্থান শুরু হয়, তখন থেকেই প্রতিবাদকারী কয়েকশ’ কৃষক সংগঠনের মধ্যে সবচাইতে বড় ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (একতা উগ্রহন) খানিকটা স্বতন্ত্র ভূমিকা নিয়ে চলেছে। অন্য সংগঠনগুলি যেখানে বর্ডার বরাবর নানান অঞ্চলে প্রতিবাদ জানিয়েছে, বি.কে.ইউ. (ই.ইউ.) শুধু টিকরি বর্ডারেই তাদের অবস্থান জারি রেখেছে। এটিই একমাত্র বড় সংগঠন, যা প্রতিবাদ চলাকালীন জেলবন্দী বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক কর্মীদের মুক্তির দাবিতে স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছে – মিডিয়া হাউজগুলি এই নিয়ে কৃষকদের সম্বন্ধে বাঁকা মন্তব্য করলেও তাঁরা সে বক্তব্য থেকে সরে যাননি

 

যোগিন্দর সিং উগ্রহন ২০০২ সালে বি.কে.ইউ. (ই.ইউ.) প্রতিষ্ঠা করেন; মূলত পাঞ্জাবের মালওয়া অঞ্চলে তাঁরা কাজ করতেন। প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এবং একজন সুবক্তা হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। তিনি সাংরুর জেলার সুনাম শহরের বাসিন্দা এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন। ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক শিব ইন্দর সিং জানুয়ারি ২০২১-এ তাঁর একটি সাক্ষাৎকার নেন। তাতে উগ্রহন বি.কে.ইউ. (ই.ইউ.)র মতবাদ, অন্যান্য কৃষক সংগঠনের সাথে তাঁদের কাজের সম্পর্ক এবং বর্তমান আন্দোলনের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।

 

 

শিব ইন্দর সিং: তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন এখন চলছে, তাতে সরকার ও কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে ঠিক কী চলছে, সে নিয়ে কিছু বলুন।

যোগিন্দর সিং উগ্রহন: আমার মতে, কৃষিমন্ত্রীকে [নরেন্দ্র সিং তোমর] তাঁর উপরওয়ালারা যা বলতে বলছেন, তিনি ঠিক তাইই বলছেন। হতে পারে, মোদী সাহেব তোমরজিকে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতাই দেননি। ৪ জানুয়ারি তারিখে সরকারের সাথে কৃষকদের সপ্তমবার বৈঠক হয়েছিল। কোনো ফল হয়নি। মন্ত্রীরা মিটিং-এ বসে সেই একই কথার জাবর কাটেন – “এই আইনগুলিতে কৃষকদের উপকার হবে,” “আইনি সংশোধনগুলি মেনে নিন,” “দেশের নাগরিকরা এই আইনগুলি লাগু হওয়ায় অত্যন্ত খুশি,” – আমরা যেন দেশের নাগরিকই নই, এমনি-এমনিই আইনগুলো তুলে নিতে বলছি।

 

সরকার জেদ ধরে থাকুক, সত্যিটা এটাই – আন্দোলন এখন এতটাই এগিয়ে গেছে যে, সরকারের উপর চাপ খুব বেড়ে গেছে। এই ধারণাটাই ভেঙে গেছে যে, মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের নড়চড় হয় না।

 

রাজনৈতিক ভাবে দেখলে, সরকারের বেশ ক্ষতি হয়েছে। বিজেপি-কে পাঞ্জাব থেকে কার্যত বার করে দেওয়া হয়েছে। হরিয়ানা আর বিহার সরকারও চাপে রয়েছে। কৃষি আইনের বিরুদ্ধে পাটনা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক আর মহারাষ্ট্রে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। যেসব রাজ্যে কোনোদিন সরকারবিরোধী টুঁ শব্দটিও শোনা যায় না, সেখানেও মানুষ মুখ খুলছেন। কৃষক আন্দোলন দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, জন-আন্দোলন হয়ে উঠেছে, আন্তর্জাতিক স্তরেও আলোচনা চলছে।

 

শিব: কৃষক সংগঠনগুলিকে বাইরে থেকে দেখে তো বেশ ঐক্যবদ্ধই মনে হচ্ছে, যদিও তাঁদের বক্তব্যের তারতম্য থাকতে পারে। এসব তারতম্য কি মতবাদের পার্থক্যের জায়গা থেকে হচ্ছে?

যোগিন্দর: বক্তব্যের তারতম্যগুলি ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জায়গা থেকে আসছে না, মতবাদের বিরোধ থেকেই আসছে – এবং সেসব বিরোধকে একেবারেই ছোট করে দেখা যাবে না। কোনো কোনো সংগঠনের মতে ওয়র্ল্ড ট্রেড অরগ্যানাইজেশন যে আপসের প্রস্তাব দিয়েছে, তা সঙ্গত ও তাকে মেনে নেওয়াই উচিত [আদতে মেনে নেওয়া হয়নি]। আন্দোলন চলার ভিতরেই মতবাদজনিত নানা বিরোধ উঠে এসেছে, কিন্তু আমরা সেসব সত্ত্বেও একটি সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচি (কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম) মেনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পেরেছি। এইটাই আশার কথা।

 

শিব: বি.কে.ইউ. (ই.ইউ.) অন্যান্য সংগঠনের থেকে আলাদা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আবার ৪০০ কৃষক সংগঠনের মিলিত সিদ্ধান্তগুলিও মেনে চলেছে। যেমন, ২৬ নভেম্বর ২০২০-তে বেশ কিছু সংগঠন পাঞ্জাব রাজ্যের শম্ভু আর খানাউরি বর্ডার পেরোয়, কিন্তু আপনারা পেরোন একদিন পরে। কেন?

যোগিন্দর: এই ব্যাখ্যাটা একেবারেই ভুল। কারো চাপে পড়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া আর মানুষ কী চাইছেন, সেটা বুঝে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্যে তফাত আছে। ২৬ নভেম্বর বর্ডার না পেরোবার সিদ্ধান্তটা ৪০০ কৃষক সংগঠন মিলে নেয়। আমরা এই মোর্চার অংশ নই, তাও আমরা সিদ্ধান্তটি মেনে নিই। ঠিক করা হয় যে, পুলিশ যেখানে বলবে, সেখানেই বসে আমরা জোরের সাথে অবস্থান বিক্ষোভ দেখাব। কিন্তু ২৬শে নভেম্বর অন্যান্য সংগঠন ব্যারিকেড ভেঙে পাঞ্জাব-হরিয়ানা বর্ডার পার করে এগিয়ে যায়, আমরা রাত ৮ টার সময়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিই যে পরেরদিন ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাবো।

আমরা আমাদের সংগঠনে শৃঙ্খলা মেনে চলেছি। যেকোনো কাউকে মঞ্চে তুলে দিইনি।

 

শিব: আপনি জাতীয় কৃষক মহাদল সংযুক্ত কিসান মোর্চার (এস.কে.এম.) ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন যে, তাঁরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিজেদের মঞ্চে আসতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, কিন্তু হালে আপনারাও তো স্বরাজ ইন্ডিয়া পার্টির নেতা যোগেন্দ্র যাদবকে নিজেদের মঞ্চে ডেকেছিলেন।

যোগিন্দর: আপনার প্রশ্নটা ঠিক জোরদার হল না। শুধু যোগেন্দ্র যাদব নন [ইনি এস.কে.এম.-এর সদস্য], আমরা আন্দোলনে যোগদানকারী সকলকে বলছি, একে অন্যের মঞ্চে গিয়ে বক্তব্য রাখুন। সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচি অনুযায়ী আমরাও তো এস.কে.এম.-এর মিটিং-এ যেতে পারি, তাহলে যোগেন্দ্র যাদব এলে আমাদের সমস্যা থাকবে কেন? অন্যান্য কৃষক সংগঠনকেও আমরা আমাদের মঞ্চে আসতে স্বাগত জানাব।

 

একটা কথা স্পষ্ট করে বলি – আমরা ৫০০ কৃষক সংগঠনের মিলিত দলের অংশ নই, ২৬০ বা ১৫০ কৃষক সংগঠনের মিলিত দলেরও অংশ নই, সংযুক্ত কিসান মোর্চা বা পাঞ্জাবের ৩২ কৃষক সংগঠন মিলে তৈরি দলেরও অংশ নই। কিন্তু আমরা এই সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচিটি মেনে চলি এবং মিটিংগুলিতে থাকি। বাকিদের মঞ্চে গিয়ে বক্তব্য রাখা বা বাকিদের এসে আমাদের মঞ্চে বক্তব্য রাখা – এর কোনোটা নিয়েই আমাদের সমস্যা নেই।

 

শিব: তাহলে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করার দরকার কী? মোর্চায় যোগ দিলেই তো হয়।

যোগিন্দর: কেন? আমরা আমাদের স্বাধীনতা [আজাদি] বিসর্জনই বা দেব কেন?

আমরা কেন স্বতন্ত্র সেটা বলি। সরকারের সাথে ছ’নম্বর দফা কথা হবার পরে যখন খানিকটা সাফল্য এল, অন্য সংগঠনগুলি ৩১ ডিসেম্বরের ট্র্যাক্টর র‍্যালি পিছিয়ে দিল। আমাদের সংগঠন কিন্তু ২ জানুয়ারি ২০২১-এ ট্র্যাক্টর মার্চ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং তা থেকে সরেও আসেনি। আমরা আমাদের ক্ষমতাটুকু নিজেদের হাতের মুঠোয় ধরে রেখেছি – কারো হাতেই আমাদের সিদ্ধান্ত বদলের ক্ষমতা তুলে দিইনি। কিন্তু হ্যাঁ, পাশাপাশি আমরা কিন্তু আবার অন্যদের সাথে সাথ মিলিয়েই কাজটা করছি।

 

শিব: ১০ ডিসেম্বর ২০২০-র আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে আপনারা একটি অনুষ্ঠান করেন, যেখানে প্রতিবাদীরা ইউ.এ.পি.এ. [আনলফুল অ্যাক্টিভিটিজ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট] ও অন্যান্য কিছু কঠিন আইনে জেলবন্দী সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মীদের ছবির পোস্টার হাতে নিয়ে বিক্ষোভ জানান। ভারতীয় মিডিয়ার একটি বড় অংশ এই ঘটনা নিয়ে বিরূপ প্রচার চালায়।

 

যোগিন্দর: মিডিয়ার না, এটা ছিল মোদী সরকারের করা বিরূপ প্রচার, কারণ এতে কৃষক আন্দোলনকে “আরবান নক্সাল” ছাপ্পা মেরে দেওয়া যায়। যখন গোডি মিডিয়া [শাসকদলের পোষা মিডিয়া] এসব নিয়ে কুৎসা রটায়, তখন বুঝতে হবে, এসব সরকারি তরফে প্রচারিত হচ্ছে।

 

সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মীদের পক্ষ নিয়ে আওয়াজ তোলাটা এই আন্দোলনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এইসমস্ত জেলবন্দী সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মীরা এই ফ্যাসিস্ট সরকারের মুখোশ খুলে কর্পোরেটের পা-চাটা নীতি নিয়ে বহুদিন ধরেই আমাদের সতর্ক করে আসছেন। এঁরাই কৃষকদের বোঝাবার চেষ্টা করেছেন, কর্পোরেট কীভাবে কৃষি ও গণ-পরিষেবা ক্ষেত্রকে ডুবিয়ে চলেছে। এঁদের জেল হয়েছে সত্যি কথা বলবার দোষে। এঁদের জন্য আজ আমরা আওয়াজ না তুললে কে তুলবে?

 

আমার সংগঠনের ১০টি মূল দাবির মধ্যে মোদী সরকারের হাতে গ্রেফতার হওয়া এই সামাজিক-রাজনৈতিক-মানবাধিকার কর্মীদের মুক্ত করার কথা রয়েছে। এই মানবাধিকার বিষয়টি অন্য সংগঠনের কর্মসূচিতেও ছিল, কিন্তু তাঁরা শেষ অবধি আওয়াজ তোলেননি, আমরা তুলেছিলাম।

 

শিব: কিন্তু পাঞ্জাবে কিছু কিছু মানুষ আপনাদের সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁরা বলছেন যে, আপনারা বামপন্থীদের পোস্টার হাতে নিয়েই শুধু প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন, পাঞ্জাবের জেলবন্দী বা শিখ বন্দীদের কথা তোলেননি।

যোগিন্দর: পাঞ্জাবে যখনই কোনো ফেক এনকাউন্টার হয়েছে, আমাদের সংগঠন তাতে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমরা অবশ্যই খালিস্তানি মতবাদের বিরুদ্ধে, কিন্তু খালিস্তানপন্থীদের উপরেও যখনই রাষ্ট্র বাড়াবাড়ি দমনপীড়ন করেছে, আমরা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসেও আমরা ইউ.এ.পি.এ. সমেত সমস্ত কালা কানুন তুলে নেবার এবং এইসব আইনে গ্রেফতার হওয়া পাঞ্জাবের মানুষ সমেত সমস্ত মানুষের মুক্তির দাবি জানিয়েছি। কাদের ছবি হাতে নিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম, সে প্রসঙ্গে এটাই বলার যে, আমরা সেইসব মানুষদের ছবি হাতে নিয়েছিলাম, যাঁরা কর্পোরেট ও সরকারের ফ্যাসিস্ট নীতির মুখোশ খুলে দিয়েছেন; পাঞ্জাবের কর্মীদের মধ্যে তেমন কেউ নেই।

 

শিব: শ্রমিকরা এই আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন না। কেন?

যোগিন্দর: এটা আপনি ঠিকই বলেছেন। শ্রমিক নেতাদের আরো সচেতনতা বাড়াবার কাজ করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে যে, এই আন্দোলন কেবল কৃষকদের ব্যাপার মাত্র নয়। কৃষকদের জমির সাথে বিষয়টি যুক্ত হবার ফলে এটি কৃষকদের সরাসরি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কৃষি নীতিগুলি শ্রমিকদেরকেও কঠিন সমস্যায় ফেলবে – বিষয়টা আসলে খাদ্য সুরক্ষার, পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (পি.ডি.এস.) ততদিনই চালু থাকবে, যতদিন সরকার কৃষকদের কাছ থেকে শস্য কিনছে। সরকার কিনলে খাদ্যশস্য গুদামে থাকবে – এতেই শ্রমজীবী মানুষের লাভ, কারণ তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই পি.ডি.এস.-এর উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া, কৃষি শ্রমিকরা চাষের সাথে যুক্ত – জমি যদি কর্পোরেটের হাতে চলে যায়, তাহলে এতে তাঁদেরও ক্ষতি।

 

শিব: এই আন্দোলনটি এক নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি নির্মাণ করেছে। যেমন ধরুন, হরিয়ানা-পাঞ্জাবের মানুষ জত বেঁধে আন্দোলন করছেন; পাঞ্জাবের মানুষ যেসব রাজনৈতিক দলকে বহুদিন ধরে মেনে আসছেন, তাদের বিরোধিতা করছেন। এ নিয়ে আপনার কী মনে হয়?

যোগিন্দর: এটা যথার্থই এই আন্দোলনের একটা বড় পাওয়া। সমাজের সমস্ত অংশ এতে কোনো না কোনো ভাবে জুড়ে গেছে। এই আন্দোলন নিয়ে আমার অনেক আশা। এর ভিতর দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে এই বার্তাটা পৌঁছে দেওয়া গেছে, যে ‘লোকরাজ’ (গণতন্ত্র) ফ্যাসিস্ট নীতিকে কিছুতেই মেনে নেয় না।

 

শিব: আইনগুলি আসার আগেও পাঞ্জাবে তীব্র কৃষি সঙ্কট চলছিল। আবার আইনগুলি তুলে নিলেই যে সেই সঙ্কট দূর হবে এমনটাও মনে হয় না। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?

যোগিন্দর: এর একটা সোজাসুজি সমাধান আছে – ইনপুট কমালে আউটপুট বাড়বে। তার মানে, কর্পোরেট হাউজগুলোর লাভ কমানো, ডিজেলের দাম অর্ধেক করে দেওয়া, বিদ্যুৎ তৈরি করা, কীটনাশক, বীজ, ট্র্যাক্টর ইত্যাদির দাম কমানো। পাবলিক সেক্টরে জান এলে চাকরির বাজারেও জান আসবে – তাতে কৃষকেরও ভালো হবে।

 

শিব: যাদের বয়েস কম, তারা আপনার সাথে সেলফি তোলে, জন্মদিনের কেক কাটে – কেউ কেউ বলে আপনি হিরোগিরির চক্করে পড়ে গেছেন।

যোগিন্দর: যাঁরা এমন বলেন, তাঁরা যে ঠিক কী বলতে চান, তা আমার বোঝার বাইরে। আমি ৩৮ বছর ধরে এই কাজ করছি; খুব কঠিন সময়েও হাল ছাড়িনি। সেদিন হিরো হতে যাইনি, তো আজ কেন যাব?

 

শিব: আপনার মতে এই আন্দোলনের ফলে পাঞ্জাবে কৃষক আন্দোলনের রূপটি কেমন দাঁড়াবে?

যোগিন্দর: আমার মনে হয়, আমাদের ঝান্ডা তুলে ধরে রাখবেন যাঁরা, তাঁদের সাথে এই আন্দোলন আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে – আমাদের তরুণ প্রজন্ম আজ আমাদের পাশে এসে সমানে-সমানে রুখে দাঁড়িয়েছে। এই আন্দোলন একটা ভুল ভেঙে দিয়েছে, যে শুধু বয়স্করাই পাঞ্জাবে কৃষক আন্দোলনে অংশ নেন। আমাদের বুড়োদের আর চিন্তা রইল না। হুঁন সানু কোই মার কে ভী মার নহী সকদা – তাঁ এ সরকার তা কী চীজ হ্যায়।  [এখন আমাদের মেরে ফেললেও আমরা মরব না  – তা এই সরকার আর কী?]

 

  • এই সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ ও এডিট করা হয়েছে।
  • শিব ইন্দর সিং একজন স্বাধীন সাংবাদিক এবং ‘সুহি সবের’ নামক পাঞ্জাবি পোর্টালটির এডিটর-ইন-চীফ। 

 

To read the interview in English click :

 

https://caravanmagazine.in/agriculture/image-that-modi-government-doesnt-retract-statements-is-shattered-bku-ekta-ugrahan-joginder-ugrahan

 

Share this
Leave a Comment