অমিত শাহর শান্তিনিকেতন সফরের আগেই গৃহবন্দি বিশ্বভারতীর দুই ছাত্রনেতা


  • December 19, 2020
  • (0 Comments)
  • 1990 Views

আগামীকাল  (২০.১২.২০২০)অমিত শাহর শান্তিনিকেতন সফরের আগে রাতেই গৃহবন্দি করা হলো বিশ্বভারতীর দুই ছাত্র সোমনাথ সৌ ও ফালগুনী পানকে। বিশ্বভারতীর বর্তমান পড়ুয়া ও ছাত্রছাত্রী ঐক্যের প্রতিনিধি ফাল্গুনী সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত এক বার্তায় জানানআমরা যেহেতু বিশ্বভারতীর উপাচার্যের এই গেরুয়া রাজনীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি তাই উপাচার্য আগামীকাল যাতে তার গুরুদেবের (অমিত শাহর) যাতায়াতে কোনো অসুবিধা না তৈরি হয় আর যাতে বিদ্যুৎ বাবু সুবোধ বালক রূপে নিজের জায়গা বজায় রাখতে পারেন তাই,বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এবং সর্বোপরি বিজেপি সরকারের চাপে নত পুলিশ আমাদের হাউস আরেস্ট করেছে।

 

অমিত শাহকে যে বিশ্বভারতীতে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের মুখে পরতে হতে পারে তা গতকাল একটি বিক্ষোভ মিছিল ও তার শেষে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কুশপুতুল পোড়ানোর মাধ্যমে খুব পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দেয় ছাত্রছাত্রীরা। তাই শাহের সফর চলাকালীন ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ এড়াতে দুই ছাত্রনেতার বাসস্থানের বাইরে পুলিশ পোস্টিং বসানোর এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

 

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত  ফাল্গুনীর বার্তা :

 

আমি ফাল্গুনী পান। বিশ্বভারতীর বর্তমান ছাত্র। বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রী ঐক্যের প্রতিনিধি। আমাকে বর্তমানে বাড়িতে আরেস্ট করে রাখা হয়েছে।

 

আপনারা সকলেই জানেন আগামীকাল অমিত শাহ বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরে ভোটের প্রচার করতে আসছে। অমিত শাহ গোটা দেশ জুড়ে যে ফ্যাসিস্ট আগ্রাসন চলছে তার অন্যতম নায়ক। সে একই সাথে সংখ্যালঘু খুন এবং স্বতঃপ্রণোদিত দাঙ্গা লাগানোর অভিযোগে অভিযুক্ত। তার নেতৃত্বেই সারা দেশের কবি সাহিত্যিক শিল্পীদের জেলে বন্দী করা হচ্ছে, জার্নালিস্টদের খুন করা হচ্ছে। দেশের জমি, শিক্ষা, রেল, খনি সমস্ত কিছু বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে কর্পোরেট দস্যুদেএ হাতে। এই রকম একটি ব্যক্তি কাল গুরুদেবের শান্তিনিকেতনে পা দিচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ আজীবনকাল ফ্যাসিস্ট আগ্রাসনের বিরুদ্ধাচারন করে গেছেন। শান্তিনিকেতনে অমিত শাহের আসা সমস্ত শান্তিনিকেতনকে কলঙ্কিত করবে। বিশ্বভারতীর গেরুয়াকরণের প্রক্রিয়া বেশ অনেকদিন থেকেই শুরু হয়েছিল কাল সেটা একপ্রকার সম্পূর্ণ হবে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্ত্তী বিজেপির ক্যাডার বিশ্বভারতীর বুকে গেরুয়াকরণের প্রক্রিয়াকে নেতৃত্ব দিচ্ছে সে।

 

আজ আগামীকালের অমিত শাহের আসার বিরুদ্ধে আমরা মিছিল করি, সেখানে অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদী, বিদ্যুৎ চক্রবর্ত্তীর কুশপুতুল পোড়ানো হয়। তারপরই আমাদের উপর প্রশাসনিক চাপ আসা শুরু হয়, যাতে আগামীকাল আমরা কোনো আজিটেশন না করতে পারি। আমরা যেহেতু বিশ্বভারতীর উপাচার্যের এই গেরুয়া রাজনীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি তাই উপাচার্য আগামীকাল যাতে তার গুরুদেবের যাতায়াতে কোনো অসুবিধা না তৈরি হয় আর যাতে বিদ্যুৎ বাবু সুবোধ বালক রূপে নিজের জায়গা বজায় রাখতে পারেন তাই তার, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এবং সর্বোপরি বিজেপি সরকারের চাপে নত পুলিশ আমাদের হাউস আরেস্ট করেছে।

 

ইতিহাস বলে লাঠি গুলি আরেস্ট দিয়ে জনগনের ক্ষোভ, ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ কোনো ভাবেই ঢেকে রাখা যায় নি, যাবেও না। এই ফ্যাসিস্ট সরকারে বিরুদ্ধে দিকে দিকে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন, জনগণের প্রতিরোধই পারে এই ফ্যাসিস্ট শক্তিকে সমূলে উচ্ছেদ করতে। যারা এখনও চুপ আছে, তাদের এই হাউস আরেস্ট চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ফ্যাসিবাদ কাউকে ছাড়বে না, কাল আর ফেসবুকে পোস্ট করার সুযোগ ও কারো থাকবে না। আজ পক্ষ নিন, রবীন্দ্রনাথ নাকি অমিত শাহ।

 

ফাল্গুনী পান।

বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রী ঐক্য।

 

Share this
Leave a Comment