ইউএপিএ নিয়ে সীতারাম ইয়েচুরি-কে লেখা একজন রাজনৈতিক বন্দীর খোলা চিঠি


  • September 21, 2020
  • (0 Comments)
  • 1467 Views

এই চিঠিটি জেল থেকে লেখা, এবং এমন একটি সময়ে লেখা ,যখন দেশের সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহল উত্তাল হয়ে উঠেছিল সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির নাম দিল্লির দাঙ্গায় অভিযুক্তদের তালিকায় থাকা নিয়ে, যদিও দিল্লি পুলিশ পরে তা অস্বীকার করে। অথচ প্রাক্তন ছাত্রনেতা উমর খলিদ সহ বহু আন্দোলনকর্মীকে কিন্তু ওই একই অভিযোগে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার ও আটক করেছে। মহামারী পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে সরকার এনআরসি/সিএএ বিরোধী আন্দোলনের বহু বিশিষ্ট কর্মীকে দিল্লি দাঙ্গায় যুক্ত থাকার ভুয়ো অভিযোগে ইউএপিএ-র মতো সন্ত্রাসবাদী দমন আইনে আটক করে চলেছে।

 

 

প্রিয় কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি

লাল সেলাম,

 

আমি একজন বিচারাধীন বন্দী, মাওবাদী অভিযোগে বর্তমানে কেরালার ত্রিশূরের ভিয়্যুর-এর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী। তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাতুরের কাছে আমাকে, আমার স্ত্রী ও আরও তিন জনের সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ স্পেশাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (এপিএসআইবি) ২০১৫ সালের ৪ মে গ্রেফতার করে। তারপর আমাকে রিমান্ডে বিচারবিভাগীয় হেপাজতে পাঠানো হয়। বিচারবিভাগীয় হেপাজতে ৫ বছরেরও বেশি সময়ের জন্য আমায় আটকে রাখা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে কেরালা পুলিশ ২৬টি ইউএ(পি)এ কেস এনেছে। একটি সেশনস কোর্ট আমার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগকে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক বলে চিহ্নিত করার পর আমাকে রাজনৈতিক বন্দীর শ্রেণীভুক্ত করা হয়ে।

 

একটি বদ্ধ জেল কুঠুরি (কেরালার উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত ‘আন্ডা’ সেল) থেকে এই চিঠি লেখার উদ্দেশ্য, আন্তরিক অভিবাদন জানানো – ইউ(এ)পিএ নামক কঠোর আইনটির বিরুদ্ধে এবং বিভিন্ন ভারতীয় কারাগারে যে রাজনৈতিক বন্দীরা দীর্ঘদিন ধরে বন্দী হয়ে আছেন, তাঁদের মুক্তির দাবিতে সারা ভারত জুড়ে প্রচার কর্মসূচি শুরু করার জন্য, বিশেষত কোভিড ১৯ মহামারীকালীন সময়ে। একজন রাজনৈতিক বন্দী হয়ে গত পাঁচ বছর ধরে বিনা বিচারে কারারুদ্ধ হয়ে থাকার কারণে, এই প্রচার কর্মসূচি আমাকে নিশ্চিতভাবে রীতিমতো আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে, যাতে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়টি পেরিয়ে যেতে পারি।

 

গণতান্ত্রিক শক্তিগুলির মধ্যে এটি একটি তর্কাতীত ভাবে স্বীকৃত যে, ভারতীয় ফৌজদারি আইনের মধ্যে ইউএ(পি)এ সবচেয়ে কড়া আইনগুলির মধ্যে একটি। ঐতিহাসিকভাবে ইউএ(পি)এ অ্যানার্কিয়াল ও রেভোলিউশনারি ক্রাইমস আইনের (যা রাওলাট আইন নামেও পরিচিত ছিল) সম্প্রসারিত রূপ। ১৯৪৭ পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন নামে যেমন – ইউএ(পি)এ ১৯৬৪, টাডা, পোটা – এটি পরিচিত ছিল। ঔপনিবেশিকবাদীদের উদ্দেশ্য ছিল দেশাত্মবোধের ভাবনাটিকে অপরাধ বলে দেগে দেওয়া এবং ঔপনিবেশিক শোষণ ও দমনের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত জনমতকে দাবিয়ে দেওয়া। ইতিহাস সাক্ষী, ভারতের মানুষ এই দমনপীড়নমূলক ফৌজদারি আইনগুলির বিরুদ্ধে বারবার রাস্তায় নেমে লড়াই করেছেন। কুখ্যাত রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয় জনগণের জ্বলন্ত প্রতিরোধের ঐতিহাসিক উদাহরণ, জালিয়নওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ও তার পরবর্তী ঘটনাবলী। পরেও ভারতের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি টাডা ও পোটা-র বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, যাতে শাসক দল বাধ্য হয়েছে এই দমনপীড়নমূলক আইনগুলি বাতিল করতে, যদিও যাঁরা ইতিমধ্যেই এই আইনগুলির শিকার, তাঁদের মামলাগুলি নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্যই প্রায় করা হয়নি। ২০০৪, ২০০৮ ও ২০১৯-এর সংশোধনের পর সবচেয়ে কড়া ইউএ(পি)এ আইনের উদ্দেশ্যও এক – বিরুদ্ধ ভাবনাকে অপরাধের তকমা দেওয়া ও যেকোনো রকম বিরুদ্ধ মতের উপর চূড়ান্তভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাবার অনুমতিপত্র পাইয়ে দেওয়া। প্রতিবাদের সবরকমের বৈধ ধরনকেই এর সাহায্যে যখনতখন ‘বেআইনি’ বা ‘উগ্রপন্থা’ বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে, ‘ডিসঅ্যাফেকশন’ বা [দেশের প্রতি] ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ বলে চালানো হচ্ছে। এরই ফলে বিরাট সংখ্যক আদিবাসী, কৃষক, কমিউনিস্ট, ছাত্রছাত্রী, সংখ্যালঘু, জাতীয়তাবাদী ও এখন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মীদের দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী করা হচ্ছে। ইউএ(পি)এ-র ২০১৯-এর সংশোধনের পর ভারতের সংবিধানে যে মৌলিক অধিকারগুলির কথা বলা হয়েছে, তাকে খর্ব করা আরোই সহজ হয়ে গেছে। এতে পুলিশকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যাতে আদালতের রায় ব্যাতিরেকেও পুলিশ যে কাউকে উগ্রপন্থী বলে চিহ্নিত করতে পারে!

 

এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ইউএ(পি)এ-র বিরুদ্ধে ও রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবিতে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি-র এই প্রচার কর্মসূচি অভিনন্দনযোগ্য। নিশ্চিতভাবেই বিভিন্ন কারাগারে দীর্ঘদিন আবদ্ধ থাকা রাজনৈতিক বন্দীরা এর ফলে ব্যাপক আত্মবিশ্বাস ও আশ্বাস পাবেন। তাই আবারও বিরাট অভিবাদন জানাই, সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার্থে এরকম একটি সময়োপযোগী রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।

 

এখন কেরালায় কীভাবে অবাধে ইউএ(পি)এ প্রয়োগ করা হচ্ছে, সে বিষয়টি আপনার কাছে তুলে ধরার জন্য আমায় ক্ষমা করবেন; কেরালা, একমাত্র বামশাসিত রাজ্য, যেখানে সিপিআই(এম)-এর পলিটব্যুরো সদস্য পিনারাই বিজয়ন একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পদ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতার কথাই জানাচ্ছি।

 

আগেই উল্লেখ করেছি, পূর্বতন ইউডিএফ সরকার আমার বিরুদ্ধে ২৬টি ইউএ(পি)এ-র অধীন কেস দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমাকে কম শাস্তিযোগ্য ইউএ(পি)এ আইনের ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল, যেমন সেকশন ১০ ও ১৩। কিন্তু যখন এলডিএফ ক্ষমতায় এল, এগুলিকে ইউএ(পি)এ-র অধিক শাস্তিযোগ্য সেকশন ২০, ৩৮ ও ৩৯-এ বদলে ফেলা হল। একজন অভিজ্ঞ সাংসদ হিসেবে, ইউএ(পি)-র বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন প্রচার চালিয়ে যাওয়ার সুবাদে আপনি নিশ্চয় স্পষ্টই জানেন যে, ইউএ(পি)এ-র সেকশন ৪৫-এ ২০০৮ সালের সংশোধন অনুযায়ী, যখন আপনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন, পুলিশের লাগামহীন ক্ষমতায় রাশ টানার জন্য এবং রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মীদের হয়রানি ও হেনস্থা বন্ধ করার জন্য আইনানুগ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বৈধ সম্মতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পুলিশের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে এটা এক ধরনের বিচারবিভাগীয় সুরক্ষাকবচও বলা যায়। এর মাধ্যমে যেকোনো তদন্তকারী সংস্থাকে কঠোরভাবে বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়া মেনে চলতে বাধ্য। অতএব, বাস্তবে ইউএ(পি)এ-র সেকশন ৪৫-কে দুর্বল করে দেওয়ার যেকোনো চেষ্টা এই আইনটিকে আরও নির্মম ও হিংস্র করে তুলবে। সেকশন ৪৫-কে তুলে ধরার জন্য সংসদে যে বিতর্ক হয়েছিল, যেখানে আপনি সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন।

 

একটি সাধারণ আদেশানুসারে মাননীয় কেরালা হাইকোর্ট আমাকে তিনটি মামলা থেকে মুক্তি দেয়। এতে আবার জোরালোভাবে এই কথাটা উঠে আসে যে, যদিও সাংবিধানিক অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য ইউএ(পি)এ সম্পূর্ণ বাতিল করার দাবি রয়েছে, তবু সেকশন ৪৫-এ যেভাবে বিচারাধীন ব্যক্তির সুরক্ষা বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে, বিশেষত ইউএ(পি)এ-র মতো কড়া আইনের ক্ষেত্রে তা অবশ্যপ্রয়োজনীয়, যাতে এর অধীনে আটক রাজনৈতিক বন্দীরা অন্তত কিছুটা হলেও নিরাপত্তা পান।

 

দুর্ভাগ্যবশত পিনারাই বিজয়নের অধীনে রাজ্য পুলিশ ইউএ(পি)এ-র রাশ টেনে ধরার বদলে, মুক্তির আদেশগুলির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার সিদ্ধান্তই বেছে নিয়েছে।

 

দুঃখের কথা এই যে, বহু শতকের পুরনো সেই প্রশ্ন – ‘তুমি কোন্ দিকে?’ – আজও একইরকম প্রাসঙ্গিক। পুলিশের মূল ভয় হল, কেরালা হাইকোর্টের রায় যদি বহাল থাকে, ইউএ(পি)-এর অধীনে আটক আমার মতো আরও অনেকে এই কড়া আইনটির হাত থেকে ছাড়া পেয়ে যাবেন। তারা শুধু যে নির্মম ও কঠোর ইউএ(পি)এ আইনের ক্ষমতাবৃদ্ধি করতে আগ্রহী তাই নয়, ইউএ(পি)এ-র সেকশন ৪৫-এর নামে কোনওরকম বিচারবিভাগীয় বাধা এলে তাও তারা এড়িয়ে যেতে চায়।

 

খেয়াল করার মতো বিষয় হল, সুপ্রিম কোর্ট-এর কাছে কেরালা পুলিশ এই আবেদনটি পেশ করে কোভিড ১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পরে। মহামারীর কারণে সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত কাজকর্ম ব্যাহত হয়েছে। সেখানে শুধুই গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলির শুনানি হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের কাজকর্ম স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করার ধৈর্য পুলিশের নেই। কেরালার অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বাধ্য করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কাছে একটি অর্ন্তবর্তীকালীন আবেদন পেশ করার জন্য (চিঠির নম্বর টি৩ ১৯৭৭৮০/২০১৭, পিএইচও, তারিখ ১৩/০৮/২০২০)।

 

অ্যাডভোকেট জেনারেল, যিনি আইনমন্ত্রকের অধীন (যা আবার একজন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য এ কে বালান-এর নেতৃত্বাধীন) – তিনি রাজ্যের মুখ্য পুলিশ আধিকারিকের (যিনিও একজন সিপিআই(এম) সমর্থক) কাছ থেকে বার্তা পাওয়ার পর, বিষয়টি নিয়ে পরামর্শদাতাদের সঙ্গে কথা বলে সুপ্রিম কোর্টের একজন দামী আইনজীবীর সঙ্গে কথাবার্তা এগোন ও একটি আবেদন দ্রুত পেশ করতে নির্দেশ দেন (চিঠি নম্বর এস.সি. ২ সিআরএল আর.পি ৭৩২/১৯, তারিখ ১৯/৮/২০২০) – তাও যখন কোভিড ১৯ সংক্রমণ উর্ধমুখী, যখন কেরালা তার সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং যখন সরকার বাধ্য হচ্ছে সরকারি তহবিলের ঘাটতি মেটাতে এমনকি দৈনিক মজুর ও ভিক্ষুকদের ফান্ডও কাজে লাগাতে।

 

মুখ্য আধিকারিক, যিনি এনআইএ-র তৎকালীন উপ-প্রধান ছিলেন ও নিজে কমিউনিস্ট নন বলে স্বীকার করেন, তাঁর কথা ছেড়ে দিলেও বাকি তিনজন বরিষ্ঠ কমিউনিস্ট সম্পর্কে কী বলা যায়? তাঁরা কি সত্যিই ইউএ(পি)এ-র বিরুদ্ধে প্রচার কর্মসূচির অংশ? না কি রাজ্য হিসাবে কেরালা এজাতীয় কর্মসূচির বাইরে?

 

খেয়াল করার মতো বিষয় হল, আমি সম্প্রতি ৬/৮/২০২০ তারিখে নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় একটি খবর দেখি যার শিরোনাম ছিল – “এমসিওসিএ-র মতো আইন রাজ্যে প্রয়োগ করা হবে অপরাধ সিন্ডিকেটে-এর মোকাবিলায়।” এই প্রতিবেদনে বলা হয়, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বরিষ্ঠ আধিকারিকেরা টিএনআইই-কে জানিয়েছেন যে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সংগঠিত অপরাধচক্রের মোকাবিলায় একটি নতুন আইন তৈরির ক্ষেত্রে সম্মতি দিয়েছেন… পুলিশ ও ইন্টেলিজেন্স-এর সর্বোচ্চ স্তরের আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে, সংগঠিত অপরাধের মোকাবিলায় একটি কঠোর আইন প্রয়োজন।”

 

তাহলে এর মানে কী দাঁড়াচ্ছে? আমি জানি সিপিআই (এম), আদর্শগতভাবে অন্তত, মহারাষ্ট্রে এমসিওসিএ, কাশ্মীর ও অন্ধ্র প্রদেশে পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট ও কর্ণাটকে কেসিওসিএ-এর বিরুদ্ধে ছিল। তাহলে এই বৈপরীত্য কেন? তাহলে মোদী-শাহ্‌ প্রশাসন আর পিনারাই বিজয়নের প্রশাসনের মধ্যে তফাত কী রইল? দু’টিই সর্বদা পুলিশ/প্রতিরক্ষা বাহিনীর মনোবল বাড়াতে উদ্যোগী এবং মূলত কড়া ফৌজদারি আইনের উপর ভরসা রাখে।

 

পিনারাই বিজয়নের অধীনে পুলিশের হাতে আমি বহু ব্যক্তিদের আটক হতে দেখেছি ইউএ(পি)এ ধারায় – শুধুমাত্র পর্চা বিলি করা বা পোস্টার লাগানোর জন্য। অ্যালান ও থওয়াহা – দুজন পড়ুয়া, যারা কিছু প্যাম্ফলেট নিজেদের কাছে রাখার কারণে পিনারাই বিজয়নের সরকারের শাসনকালে গ্রেফতার হন – এখন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, কারণ মাননীয় আদালত দেখেছেন যে প্রমাণগুলি তাঁদের আটক করে রাখার জন্য যথেষ্ঠ নয়। প্রশ্ন হল, বিজেপি বা কংগ্রেস সরকারের আমলে তৈরি একটি ভুল নীতি কী করে কেরালায় সিপিআই(এম)-এর ক্ষমতাধীন সরকারের আমলে সঠিক হয়ে যায়? আপনার ইউএ(পি)এ-র বিরুদ্ধে ভারতব্যাপী প্রচার কর্মসূচি নিয়ে আশাবাদী হওয়ার জন্য গত চার বছরে পিনারাই বিজয়নের অধীন পুলিশের গুলিতে মৃত সেই সাত জন শহীদ যেন আমায় ক্ষমা করেন। এই মুহূর্তে এই প্রচার কর্মসূচিটি নিঃসন্দেহে প্রাসঙ্গিক, যদিও আপনার দল  যখনই যে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে, বারবার তার দুমুখো নীতি প্রমাণ করেছে। তবে আমি ইউএ(পি)এ-র বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবিতে লাগু করা এই প্রচার কর্মসূচিটির পেছনে আপনার যে সাধু উদ্দেশ্য রয়েছে, আমি আবারও তাকে অভিবাদন জানাই।

 

বিপ্লবী অভিনন্দন,

রূপেশ।

 

এই চিঠিটি প্রথম প্রকাশিত হয় ইংরাজিতে ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে ওয়েব পোর্টাল www.countercurrents.org -তে। মূল লেখাটি এই লিঙ্ক-এ। 

 

Share this
Leave a Comment