২০১৮ সালে ভারতে ঘৃণাপ্রসূত অপরাধের সংখ্যা ২১৮, উত্তরপ্রদেশ ফের শীর্ষে : অ্যামনেস্টি।


  • March 6, 2019
  • (0 Comments)
  • 1138 Views

গ্রাউন্ডজিরো: বিগত বছরে দেশের প্রান্তিক মানুষদের বিরুদ্ধে দুশোরো বেশি ‘হেট ক্রাইম’ বা ঘৃণাপ্রসূত আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংগঠনের ভারতীয় শাখাকে উদ্ধৃত করে একথা জানাচ্ছে সংবাদসংস্থা পিটিআই। বিশেষভাবে দলিতদের উপর এ ধরনের সবচেয়ে বেশি আক্রমণ সংগঠিত হয়েছে। ২০১৬-১৭ সালের মতো ২০১৮ সালেও সবচেয়ে বেশি এ জাতীয় অপরাধের ঘটনার শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ।

 

অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া তার ‘হল্ট দ্য হেট’ শীর্ষক ওয়েবসাইটে জানাচ্ছে, ঘৃণাপ্রসূত অপরাধের ঘটনা ঘটেছে প্রান্তিক মানুষদের উপর। তাঁদের মধ্যে যেমন আছে দলিতরা তেমনই আদিবাসী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ, ট্রান্সজেন্ডার ও অভিবাসী মানুষেরাও রয়েছেন।  মূলত ইংরেজি ও হিন্দি সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে।

 

ওয়েবসাইটটি ২০১৮ সালের যে ২১৮টি এ জাতীয় ঘটনা নথিভুক্ত করেছে তার মধ্যে দলিতদের বিরুদ্ধে ১৪২টি ঘটনা ঘটেছে। ৫০টি মুসলিমদের বিরুদ্ধে এবং খ্রিস্টান, আদিবাসী, ট্রান্সজেন্ডারদের বিরুদ্ধে সংগঠিত আক্রমণের ঘটনা আটটি করে। এর মধ্যে শারীরিক আক্রমণের ঘটনা ৯৭টি এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ৮৭টি। ৪০টি ঘটনায় হয় দলিত সম্প্রদায়ের মহিলা কিংবা ট্রান্সজেন্ডার গোষ্ঠীর কেউ যৌনহিংসার শিকার হয়েছেন। দলিত মহিলারাই সবচেয়ে বেশি এই যৌনহিংসার শিকার। এই ৪০ জনের মধ্যে ৩৩ জনই দলিত সম্প্রদায়ের।

 

যে যে রাজ্যে এ জাতীয় ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যাচ্ছে তাদের মধ্যে শীর্ষ পাঁচটি রাজ্য হল উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থান, তামিলনাড়ু ও বিহার। পর পর তিন বছর হেটক্রাইমের ঘটনায় প্রথম স্থান হল উত্তরপ্রদেশের। ২০১৮ সালে এ রাজ্যে ৫৭টি এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ ও ২০১৬ সালে যা ছিল যথাক্রমে ৫০ ও ৬০টি। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ভারতে এই প্রান্তিক মানুষদের উপর ঘৃণাপ্রসূত অপরাধের সংখ্যা ৭২১টি বলে মানবাধিকার সংগঠনটির রিপোর্ট জানাচ্ছে।

 

অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার প্রধান আকার প্যাটেল বলেন, “ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে হলে এবং অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়া আটকাতে হলে – যেখানে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর সদস্য বলেই লক্ষ করা হচ্ছে – প্রথমেই ঘটনাগুলিকে সবার সামনে তুলে ধরতে হবে।” তাঁর আক্ষেপ, “দুর্ভাগ্যবশত ভারতে হেটক্রাইমের প্রকৃত ব্যাপ্তি অজানা। কারণ হিসেবে তাঁর মত, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া হেটক্রাইম নির্দিষ্ট অপরাধ বলে ভারতীয় আইনে স্বীকৃত নয়। প্যাটেলের অভিমত, পুলিশের উচিত এই অপরাধের সুপ্ত বৈষম্যসূচক মতলবের মুখোস খুলে দেওয়া এবং রাজনৈতিক নেতাদেরও উচিত এ জাতীয় অপরাধের জোরালো নিন্দা করা।

 

Feature image courtesy : The Policy Times

Share this
Leave a Comment