আমেরিকান-নাইজেরিয়ান লেখক ফ্র্যাঙ্কি এডোজিয়েন, যিনি আফ্রিকান সমকামী মানুষদের বিষয়ে প্রথমবার একটি জীবনীমূলক বই লিখেছেন – লাইভস্ অফ গ্রেট মেন। ফ্র্যাঙ্কি বর্তমানে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের একজন জনপ্রিয় অধ্যাপক এবং তিনি দীর্ঘদিন নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এর সঙ্গে সাংবাদিক হিসাবে যুক্ত। সম্প্রতি তিনি এসেছিলেন কলকাতায়, নিজের বই নিয়ে আলোচনা করতে। লেখকের সাথে কথা বললেন এবং বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করছেন সুদর্শনা চক্রবর্তী।
বিনন্দন বলছিলেন – “আমি আর আমার সঙ্গী রবি সমকামী সম্পর্কে একসঙ্গে থাকি। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা কোনও প্রাইড ওয়াক-এ হাঁটিনি। চাইলেই যেতে পারি। কিন্তু উত্তরবঙ্গের মফস্বল শহর থেকে নিজেদের পরিবার, সমাজের কাছে অনেক অত্যাচার, হেনস্থা সহ্য করে আজ আমরা কলকাতার যে পাড়াটায় থাকি, সেখানে সকলে আমাদের সম্পর্কের কথা জানেন, আমরা প্রতিদিনের নিত্য-নৈমিত্তিক কাজে, একা বা একসঙ্গে ওই পাড়ায় মাথা উঁচু করে হাঁটতে পারি। আমাদের ব্যক্তি পরিচয়টাই সেখানে আসলে, যৌন পরিচয় নয়, সেটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। তাই এই রোজকার চলাফেরাটাই আমাদের প্রাইড ওয়াক।” উচ্চশিক্ষার পর আপাতত একটি সরকারি চাকরি করছেন বিনন্দন। রবি পলিটেকনিক-এর পড়াশোনা শেষ করলেও মাঝে বেশ কিছুদিন লেখাপড়ায় ছেদ পড়েছে। আবার নতুন উদ্যমে নিজের পছন্দের পেশা নিয়ে কেরিয়ার তৈরির পথে এগোচ্ছেন তিনি। অনেকটা পথ পেরিয়ে এসে আজ তারা থিতু, নিরাপদ বোধ করেন। সমকামী সম্পর্কের জন্য প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত পেয়েছেন, তারপরেও তাঁরা দু’জনেই এই সমাজকে একটিই কথা বলতে চান – “আমরা সমাজকে শত্রু মনে করি না। যৌন পরিচয় তো মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়, সেখানে হস্তক্ষেপ করবেন না। আমাদের ব্যবহার, কাজ দিয়ে বিচার করুন। মানবিকতার কথা ভাবুন। সব কিছুর উর্দ্ধে উঠে আমাদের মানুষ হিসাবে দেখুন। দেখবেন, আমরা সবাই একসাথে ভালো থাকব।”
বিনন্দন, রবি-র সঙ্গে কথা হচ্ছিল কলকাতার এক শীতের দুপুরে সমপ্রেমের গল্প শীর্ষক এক আলাপচারিতা আর কথোপকথনে। আয়োজনে প্রান্তকথা। একা ওঁরা নন এসেছিলেন সমকামী, রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের আরও অনেকেই। তবে নিজেদের কথা বলার উৎসাহ তখনই পাওয়া যায়, যখন দেখা যায় নিজের লড়াইটা একা লড়তে হলেও, সেই একইরকম লড়াই লড়ছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আরও অনেক মানুষ। তাঁরা যখন প্রেরণা হয়ে ওঠেন, স্পর্ধিত স্বরে বলেন সম্মান আর অধিকারের কথা, তখন পরিচয়ের লড়াই আরও জোটবদ্ধ হয়।
সেদিন যেমন মূল বক্তা হিসাবে হাজির ছিলেন আমেরিকান-নাইজেরিয়ান লেখক ফ্র্যাঙ্কি এডোজিয়েন। ফ্র্যাঙ্কি বর্তমানে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের একজন জনপ্রিয় অধ্যাপক এবং তিনি দীর্ঘদিন নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এর সঙ্গে সাংবাদিক হিসাবে যুক্ত। তিনি প্রথম যিনি আফ্রিকান সমকামী মানুষদের বিষয়ে একটি জীবনীমূলক বই লিখেছেন – লাইভস্ অফ গ্রেট মেন। এই বইটি নিয়ে ফ্র্যাঙ্কি ঘুরছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। পৌঁছে দিচ্ছেন সেইসব প্রান্তিক মানুষদের জীবনের কথা, যাঁরা শুধুমাত্র সমকামী হওয়ার অপরাধে জীবনের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। স্বাভাবিক কাঙ্খিত জীবন কাটাতে পারেন না। আফ্রিকার নানা দেশে যেমন তানজানিয়া, উগান্ডা, নাইজেরিয়াতে সমকামী মানুষদের এখনও অপরাধীর দৃষ্টিতে দেখা হয়। সেখানে বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলে ফ্র্যাঙ্কি লিখেছেন এই বই, যা পড়লে সেইসব অজানা জীবন আর তাঁদের পরিচয়ের অধিকারের লড়াই সম্পর্কে জানা যায়। সাংবাদিক হিসাবেও তিনি প্রান্তিক লিঙ্গ ও যৌন পরিচয়ের মানুষদের কথাই তুলে ধরার প্রয়োজন বোধ করেন।
খোলা মনের সেই আলাপচারিতায় ফ্র্যাঙ্কি জানাচ্ছিলেন তাঁর নিজের সমকামী জীবনের কথা। তাঁর পরিবারে এই বিষয়ে যথেষ্ঠ রক্ষণশীল পরিবেশ ছিল। কিন্তু তাঁর দীর্ঘ ১২ বছরের জীবনসঙ্গীর সঙ্গে প্রথম থেকেই এক স্বস্তিজনক আদান-প্রদানের পরিসর তৈরি হয়। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। ধীরে ধীরে তাঁর পরিবারের সঙ্গেও ফ্র্যাঙ্কি-র সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁর নিজের কথায়, “আমি সমকামী বোঝার পর একদিন একটি প্রার্থণাসভার শেষে আমি বাবাকে জানাই ‘তুমি বোঝ আর না বোঝ আমি যেমন আমাকে তেমনভাবেই সম্মানের সঙ্গে স্বীকার করতে হবে। নাহলে বাকি জীবনে আর আমাদের মধ্যে কোনওদিন কথা হবে না, তাতে আমার কোনও অসুবিধাও নেই।’ আমার চোখের মধ্যে বোধহয় রাগ আর দৃঢ়তা এমন ছিল, যাতে বাবা বুঝতে পারেন আমার নিজস্ব পরিচয়ের সম্মান রাখতে সবকিছু ছাড়তে পারি। সেটাই ছিল আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।” বর্তমানে ফ্র্যাঙ্কি ও তাঁর সঙ্গীর সঙ্গে দুই পরিবারের সম্পর্কই স্বাভাবিক ও সুন্দর। যদিও তিনি এখন মনে করেন, সমকামী মানুষদের নিজেদের বাবা, মা, অভিভাবক, পরিজনদের নিজেদের পরিচয় সম্পর্কে অনেক ধৈর্য নিয়ে বোঝাতে হবে। তাদের নিজেদের মধ্যেই কতরকম অর্ন্তদ্বন্দ্ব চলে, তাই মা, বাবার প্রাথমিক অস্বস্তি বা সচেতনতার অভাব পেরিয়ে আসতেও তাদেরই সাহায্য করতে হবে।
ফ্র্যাঙ্কি নাইজেরিয়া থেকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন তাঁর ১৯ বছর বয়সে। নিজের পড়াশোনা, নিজের কেরিয়ার তৈরির পাশাপাশি তিনি সব সময়েই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে কী ঘটছে সমকামী মানুষদের অধিকারকে কেন্দ্র করে তা জানতে ফিরে গেছেন। এবং দেখেছেন কীভাবে তাঁদের অধিকারবিরোধী বিভিন্ন আইন পাশ হচ্ছে আর তাতে সাধারণ মানুষের সমর্থনও থাকছে। রাষ্ট্র ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে এই চরম বৈষম্যমূলক ধারণাগুলি তাঁকে শুধু অবাকই করে না, তিনি আহতও বোধ করেন। সমকামিতাকে ঘিরে সচেতনতার অভাব ও বিদ্বেষের বিরূদ্ধেই কলম ধরেন তিনি। সাংবাদিক হিসাবে যেমন লিখতে থাকেন, তেমনি প্রয়োজন বোধ করেন বিভিন্ন সূত্রে পরিচিত সমকামী মানুষ ও তাদের পরিবারের সত্যি আখ্যানগুলিকে বইয়ে লিখে রাখার, যাতে তথ্যের অভাব না থাকে, এভাবেই তৈরি হয় – লাইভস্ অফ গ্রেট মেন।
নাইজেরিয়া-তে থাকাকালীন জীবনের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তাঁর মনে পড়ে যায় সেইসব দিনের কথা যখন তিনি জোর করে ভুলে থাকতে চাইতেন নিজের সমকামী সত্ত্বাকে, তা যেন এক বিষণ্ণ মনকেমনের স্মৃতি। কিন্তু নিউ ইয়র্ক-এ এসে পড়াশোনা, জীবিকা এই সবের মধ্যে দিয়ে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন নিজের প্রকৃত সত্ত্বাকে ত্বকের মতোই নিজের সঙ্গে জড়িয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা। এতে কোনও লজ্জা, অস্বস্তি নেই। যত দিন গেছে তিনি বুঝেছেন আফ্রিকার নানা দেশে আর কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশে যেখানে আইনের কাঠামো প্রায় এক সেখানে গিয়ে সমকামী, রূপান্তরকামী মানুষদের স্বাধীনতা ও অধিকারের কথা বলাটা কতটা গুরুত্বোপূর্ণ। সাংবাদিক হিসাবেও তিনি মনে করেছেন তাঁকে মানুষের কথা, তাঁদের বাস্তব তুলে ধরতে হবে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই লিখতে শুরু করেন এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের নানা ইস্যু ও ঘটনা বিষয়ে। ধীরে ধীরে যা তাঁকে এগিয়ে দিয়ে এই বইটি লেখার দিকে। “ভারতে এসে আমার এত ভালো লাগছে…এখানে অধিকার আন্দোলনের ফল হিসাবে সমকামিতাকে অপরাধের তকমা মুক্ত করা গেছে। এ এক বিরাট জয়,” আবেগঘন শোনায় ফ্র্যাঙ্কি-র কন্ঠ।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি – ‘ব্রেইন ড্রেইন’। সাধারণত এলজিবিটিকিউ ইস্যুর সঙ্গে এই বিষয়টিকে যুক্ত করে দেখাই হয় না। কিন্তু নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ফ্র্যাঙ্কি বললেন, যেসব দেশে সমকামিতাকে অপরাধ বলে দেখা হয় সেখানকার কত মেধাবী, উদ্যোগী মানুষ জীবন জীবিকা পালনের জন্য নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যেতে বাধ্য হন। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেই এমন উদাহরণ তিনি পেয়েছেন বিরাট সংখ্যায়। তাই নিজের তথাকথিত সুবিধাযুক্ত অবস্থানকে তিনি ব্যবহার করতে চেয়েছেন সাংবাদিক হিসাবে, লেখক হিসাবে এই বিষয়গুলিকে সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য। যেকোনও দেশের উন্নয়নেই সবচেয়ে জরুরি বিষয় হল তার মানবসম্পদ। যৌন পরিচয় বা লিঙ্গ পরিচয়ে বৈষম্য ও রাষ্ট্রের ভুল আইনের জন্য তা দেশ থেকে চলে গেলে তারচেয়ে হতাশাজনক কিছুই হতে পারে না।
আলাপচারিতার শেষে তাঁর সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার –
প্র: সারা পৃথিবীতে বর্তমানে এলজিবিটিকিউ মানুষদের অধিকার আন্দোলন যেন এখন এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে। আপনি আগামী দিনে কী আশা করছেন?
উ: আমি নির্দিষ্টভাবে কোনও দেশের কথা এক্ষেত্রে বলতে চাই না। আমি চাই সারা পৃথিবীতেই সমান অধিকারের বাতাবরণ তৈরি হোক। বলতে চাই যে, আপনার বন্ধু, প্রতিবেশী, প্রিয়জন, আত্মীয় বা অপরিচিত যে কেউই সমকামী, রূপান্তরকামী হতে পারেন। তাদের লিঙ্গ ও যৌন পরিচয় যা তাদের ব্যক্তিগত জীবনের অংশ তার উপর জোর না দিয়ে, দেখতে হবে মধ্যে আমাদের মধ্যে মানবতা রয়েছে তাকেই। আমি চাই পৃথিবীতে এমন পরিবেশ তৈরি হোক যেখানে এলজিবিটিকিউ পরিচয় আলাদা করে কোনও গুরুত্ব বহন করবে না। একজন মানুষকে বিচার করা হবে তার উল্লেখযোগ্য, গুরুত্বপূর্ণ কাজ, সাফল্য দিয়ে। যৌন পরিচয় শুধুমাত্র বিচার্য বিষয় হবে না। কেউ সমকামী হলে রাগ, অস্বস্তি, লজ্জা, হতাশা বয়ে বেড়াতে হবে না। আর এই বিষয়টি দেশ-মহাদেশের সীমানা পেরিয়ে সর্বত্র যেন হয়। আমি কমনওয়েলথ্-এর বিভিন্ন দেশে, ইওরোপ-এ ঘুরেছি, থাকি নর্থ আমেরিকায়, ট্যাবু কিন্তু সর্বত্রই আছে। এই বিষয়টি দূর হয়ে যৌন পরিচয় নয়, মানুষের পরিচয়ে মানুষকে চেনা হোক এই আশাই করি।
প্র: আপনি কী মনে করেন যে যারা শহরের নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত আর যারা গ্রাম বা মফস্বলে থাকেন, এলজিবিটিকিউ অধিকার আন্দোলনে তাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হচ্ছে? যদি হয় তাহলে তা দূর করা যায় কীভাবে?
উ: আমার মনে হয় এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষ সর্বত্র রয়েছেন। কারওর কাছে অর্থ আছে, কারওর কাছে নেই। কেউ শহরে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান, কেউ সে সুযোগটি পান না। কিন্তু লড়াইটা সবারই এক। কেউ ধনী ও সমকামী বলে তার যন্ত্রণা কমে যায় না। তা দরিদ্র সমকামী মানুষটিরই সমান। যেহেতু সমাজের দৃষ্টিভঙ্গী দু’জনের প্রতিই এক। আমার কাছে আরও কষ্টের হল, যাদের কাছে অর্থ রয়েছে তারা নিজের দেশ ছেড়ে বিভিন্ন দেশে নানা জায়গায় থাকেন। কিন্তু তা কেন হবে? এ তো কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাদের টাকা আছে বলে তারা এটা করতে পারছেন। কিন্তু যাদের আর্থিক সঙ্গতি নেই, তারা তো এমন করতে পারেন না, তা তাদের পক্ষে আরও যন্ত্রণার হয়।
প্র: আপনি কী মনে করেন যে বর্তমান বিশ্বের পরিস্থতিতে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়কে অন্যান্য সব অধিকার আন্দোলনের সঙ্গেই যুক্ত হতে হবে?
উ: আমি মনে করি যখন মানবাধিকারের লড়াই লড়া হচ্ছে, তখন আমাদের সবাইকে একে অপরের জন্য লড়তে হবে। এলজিবিটিকিউ আন্দোলনের কেউ যদি নারী অধিকার অন্দোলনকে সমর্থন না করেন বা যদি উল্টোটা হয়, তাহলে তা কি আদৌ সম্ভব! একটা বড় প্রেক্ষাপটে অধিকার আন্দোলনগুলিকে দেখতে হবে আর আমাদের প্রত্যেককে এক হয়ে আন্দোলন করতে হবে।
প্র: আপনি একাধারে সাংবাদিক ও অধ্যাপক। আপনার কাজের বিষয় প্রান্তিক মানুষেরা। তরুণ প্রজন্মের আপনার যারা পড়ুয়া তাদের সঙ্গে কীভাবে যোগসূত্র তৈরি করেন আপনি?
উ: আমি যে বইগুলি লিখি তা মূলত নন-ফিকশন এবং আমি একে আমার সাংবাদিকতার এক ধরনের বিস্তার হিসাবেই দেখি। আমি শিক্ষার্থীদের শেখাই গবেষণা করতে, স্বচ্ছভাবে ভাবতে শেখাই, শেখাই নিজের ভাবনাগুলি স্পষ্টভাবে গুছিয়ে লিখতে ও এমন ভাষায় লিখতে যা সাধারণ পাঠক সহজে বুঝতে পারে। যদি আমি তা ক্লাস-এ করতে পারি, তাহলে আমি তা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও করতে পারি।
প্র: আপনি কী মনে করেন সাংবাদিকরা এখন খুব ভয়ঙ্ক এক সময়ে বাস করছেন?
উ: সকলেই এক ভয়ঙ্কর সময়ে বাস করছে। শুধু সাংবাদিকেরা নন, প্রত্যেকের জন্যই এ এক ভয়ানক সময়। আমরা এক প্রচন্ড অনিশচয়তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আর এরকম সময়ে মানুষ পালাতে চায়। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আমরা এই সময়ে, এই মুহূর্তে আছি, বেঁচে আছি, সুতরাং আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। চেষ্টা করা বন্ধ হলে সব শেষ হয়ে যাবে। আপনাদের ভারতবর্ষের নিরিখে বলা যায়, এখানে লড়াই কখনও থামেনি। লাগাতার আন্দোলনে সমকামিতা আর অপরাধ নয়। এখন লড়াই চলছে ট্রান্সজেন্ডার বিল নিয়ে। এই লড়াইও নিশ্চয়ই সফল হবে।
সুদর্শনা ডকুমেন্টারি নির্মাতা এবং স্বতন্ত্র সাংবাদিক। ছবি: লেখক।