শিক্ষায় ‘স্বাধিকার’: কোন ‘স্বাধিকার’, এবং কার থেকে ‘স্বাধিকার’?


  • April 26, 2018
  • (3 Comments)
  • 5429 Views

নন্দিনী ধর

আমি পেশায় শিক্ষক। গত বিশ বছর সময় ধরে কোনও না কোনওভাবে পড়িয়ে এসেছি। সেই সুযোগে, শিক্ষকতা সম্পর্কে দুটো জিনিস এই কয়েকবছরে বুঝেছি। শিক্ষকতা থেকে উদ্ভূত যে মানবিক সম্পর্কসমূহ, তাকে পুঁজির সম্পর্কের খাতে বাঁধা যায় না। না, আমি কোন সামন্ততান্ত্রিক গুরুবাদের কথা বলছি না। বলছি একধরনের জটিল আদানপ্রদানের কথা, যা বেঁধে রাখে সকল শিক্ষক–ছাত্রছাত্রী সম্পর্ককে। যেমন ধরুন, আমার এক ছাত্রী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯ বছর বয়স। একলা মা দুই সন্তানের। রবিবার সন্ধ্যেবেলা আমি তার সন্তানদের পাহারা দিয়েছি। আমার-ই ক্লাস-এর জন্য ছাত্রীটির হয়ে পেপার লিখেছি। না, আমার চাকরি আমাকে বাধ্য করেনি একাজ করতে। একাজ করার জন্য আমার মাইনে বাড়েনি। কিন্তু, করেছি কারণ, আমি শিক্ষক। অন্যদিকে আবার এই একই শিক্ষক-ছাত্রছাত্রী সম্পর্কের অন্যতম ভিত্তি হলো স্বাধিকার, স্বাধীনতা। যেকোনো ছাত্রদরদী শিক্ষকমাত্রই জানেন, প্রতিটি ছাত্রের প্রয়োজন ভিন্নধারার মনযোগ, ভিন্নধারার প্রণালী। এক মাপের জামা যে সব্বার গায়ে কিছুতেই আঁটবে না! অন্যদিকে, প্রতিটি শিক্ষক এও জানেন যে এই স্বাধিকার বিষয়টিই মেলে না আমাদের শিক্ষকজীবনে। মেলে না কারণ আমরা প্রায় সকলেই শিক্ষকতা করে থাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্দরে। সেখানে থাকে বাঁধাধরা সিলেবাস, গতে বাঁধা পরীক্ষা ও প্রশ্নপত্র, ছাত্রছাত্রীদের পাশ করিয়ে দেওয়া ও ভালো রেজাল্ট করানোর দায়িত্ব। এই পরিপ্রেক্ষিতে, এই স্বাধিকার বিষয়টিকে নিয়ে ইউজিসি–র সাম্প্রতিকতম প্রস্তাব “স্বাধিকার” শব্দটিকে নিয়ে একধরণের ন্যাক্কারজনক খেলাধূলার উদাহরণ হয়ে আমাদের সামনে এসে দেখা দেয়।

গত ২০শে মার্চ ২০১৮, ইউজিসি ঘোষণা করে যে ভারতবর্ষের ৫২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাধিকার দেওয়া হবে। এদের মধ্যে ৫টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ২৯টি প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়, ২৪টি ডীমড বিশ্ববিদ্যালয় ও ২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। আরো ৮টি কলেজকে “স্বাধিকারপ্রাপ্ত কলেজ প্রবিধান, ২০১৮” অনুযায়ী “বাণিজ্যিক অধিকার” জ্ঞাপন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই উপলক্ষে যে প্রেস বিবৃতি ছাড়া হয়, তাতে এই সিদ্ধান্তকে “ঐতিহাসিক” বলে বর্ণনা করা হয়। একই সুর শোনা যায় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রী প্রকাশ জাভদেকরের কন্ঠেও। জাভদেকরের মতে, এই সিদ্ধান্ত ১৯৯১-এর ভারতীয় অর্থনীতির উদারীকরণের মতই যুগান্তকারী। তাঁর ভাষ্যে, “সরকার থেকে প্রচেষ্টা চলছে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে উদারীকৃত একটি শাসন-ব্যাবস্থা চালু করার”। যদিও শিক্ষাক্ষেত্রের সাথে যুক্ত প্রতিটি সংবেদনশীল কর্মী বা বিগত প্রায় তিনদশকের ছাত্রছাত্রী-আন্দোলনের কর্মী মাত্রই জানেন, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ও বেসরকারীকরণের প্রক্রিয়াটি এদেশে নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্নভাবে গত তিনদশকে শিক্ষাক্ষেত্রকে “উদারীকৃত” করা হয়েছে। ইউজিসির সাম্প্রতিকতম ঘোষণা, বলা যেতে পারে, এই প্রক্রিয়াকেই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি চরমতম ও সুনির্দিষ্ট রূপ দিল।

কি সেই সুনির্দিষ্ট রূপ? বাকি অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রের মতই, শিক্ষাক্ষেত্রও একটি বাজার। যেখানে, গবেষণা ও পঠনপাঠনজাত যেকোনো প্রক্রিয়া ও উৎপাদিত বস্তু আসলে পণ্য। আবারও, এই প্রক্রিয়া একেবারেই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন কিছু নয়। উদাহরণস্বরূপ, পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে, যেখানে গ্র্যান্টমূলক অর্থের জোগানদারিত্বের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকে উচ্চশিক্ষার গবেষণা, সেখানে এই গ্র্যান্ট-ই হয়ে ওঠে ভর্তুকি সরিয়ে নেওয়ার মূর্ত প্রতীক। বিশেষত, “গ্র্যান্ট” নামক এই সোনার যাদুকাঠিটি যখন নির্ধারিত হয় প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে।

গ্র্যান্ট লেখার প্রক্রিয়া ও তার রাজনীতিটি একটু তলিয়ে দেখলে দেখা যাবে, গ্র্যান্ট লেখা ও বিজ্ঞাপনের কপি লেখার মধ্যে খুব ফারাক নেই। ঠিক যেমনভাবে বিজ্ঞাপনের কপির তড়িৎচকিত ঝকঝকানি আমাদের শেখায় কি কিনতে হবে, তা সে পণ্যটির আসল গুণপনা যাই হোক না কেন, গ্র্যান্ট হল এক বিশেষ আঙ্গিক যার মধ্য দিয়ে আমরা একটি বা একাধিক ফান্ডিং এজেন্সির কাছে নিজেদের গবেষণাকে বিজ্ঞাপিত করি। তার সাথে, কোনো একটি গবেষণাজাত প্রকল্পের মূল গুণাবলী বা গভীরতার স্বাভাবিক কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু, বাজার বা বিজ্ঞাপনের ভাষায় তো ব্যাখ্যা করা হয় না এই গ্র্যান্ট বাজার! করা হয় মেধার ভাষার মোড়কে। যে গবেষক যত বেশি গ্র্যান্ট পায়, সে তত বড় পণ্ডিত।

ঐতিহাসিকভাবে, অধিকাংশ পাশ্চাত্যের দেশে জ্ঞানচর্চার যে অর্থনীতি, সেখানে গ্র্যান্টের সিংহভাগ টাকাটাই আসে বেসরকারী সূত্রের হাত ধরে। সেই বেসরকারি সূত্রের তালিকায় থাকতে পারে কোন বৃহৎ শিল্পপতি, বড় কোনও সাংস্কৃতিক এনজিও কিংবা অন্যধারার কোনও বৃহৎ সাংস্কৃতিক সংস্থা।

ইউজিসির সাম্প্রতিকতম সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে এই আপাদমস্তক পুঁজিবাস্তবী মডেলটিকেই গ্রহণ করা হল এবং এই গ্রহণ করার প্রক্রিয়ায় “স্বাধিকার” বা “অটোনমি”-র শব্দটিকে বাঁকিয়েচুরিয়ে উপস্থাপিত করা হল এক অভাবনীয় ভাষার রাজনীতি। যা এতদিনকার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দিশার ভাষা নিয়ে বস্তুতঃ খেলার রাজনীতি।

শিক্ষাক্ষেত্রের সর্বস্তরে “স্বাধিকার” বা “অটোনমি” কাম্য ও প্রয়োজন। স্বাধিকার প্রয়োজন বাজারের (অথবা বহিরাগত সংস্থার) অর্থনৈতিক স্বৈরতন্ত্রের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। স্বাধিকার প্রয়োজন আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এবং সেই স্বাধিকার বহুক্ষেত্রেই শিক্ষাজগতে সুনিশ্চিত হয়ে এসেছে রাষ্ট্রীয়/সরকারি নিরাপত্তাজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে। ঐতিহাসিকভাবে, আইন ও সংবিধানের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে সুরক্ষিত হয়ে এসেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির এজাতীয় স্বাধিকারের অধিকার।

কিন্তু, সাম্প্রতিককালে, স্বাধিকারের এই ধারণাটিকেই সম্পূর্ণ উলটে দেওয়া হল। সরকারি অনুদানের মধ্য দিয়ে বাজারের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা নয়, “স্বাধিকার” বা “অটোনমি”-র অর্থ এখানে পুনর্সং‌জ্ঞায়িত করা হল সরকারি অনুদান ও সুরক্ষার পরিমণ্ডল থেকে মুক্তি হিসাবে। কাজেই, বকলমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণার ভিত্তিভূমি হিসেবে ঘোষণা করা হল বেসরকারী প্রতিযোগিতামূলক গ্র্যান্টের বাজারকে।

এবং এর মধ্যে দিয়ে বৈধতা দেওয়া হল মুক্ত বাজারের দর্শনকে। বোঝানো হল, মুক্ত বাজার, পণ্য মানসিকতা এবং তদ্জনিত গলাকাটা প্রতিযোগিতার বাতাবরণই শিক্ষাক্ষেত্রে গবেষণা ও পঠনপাঠনের মানের উন্নতি ঘটিয়ে থাকে। অবশ্য, এর আগেই নীতি আয়োগ (NITI Aayog)-এর উদ্যোগে ২০১৭-২০১৮, ২০১৮-২০১৯ ব্যাপী তিনবছর ধরে যে শিক্ষাক্ষেত্র সংক্রান্ত পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তাতে স্পষ্ট করেই ঘোষণা করা হয় যে প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত বেসরকারীকরণই হবে সরকারী নীতি। কাজেই, স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে শিক্ষাজগতে আমরা সমস্ত সমস্যা ও বৈষম্য সহও যে সীমিত গণতন্ত্রীকরণের আবহাওয়া দেখেছিলাম, দেখেছিলাম সমাজের প্রান্তিক অংশ থেকে কমসংখ্যায় হলেও সরকারী অনুদান ও নিয়ন্ত্রণের হাত ধরে ছাত্রছাত্রীদের আনাগোনা, তা সমূলে বিনষ্ট করা হল।

অন্যদিকে, একটু খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে যে, আজকের উচ্চশিক্ষার পরিকাঠামোর হাল শোচনীয়। ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যার তুলনায় শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা বড়ই নগণ্য। লাইব্রেরী, ল্যাবরেটরির অবস্থাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যে ঠিকা (বা অ্যাড-হক) ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বর্তমানের অধিকাংশ শিক্ষক কলেজগুলিতে নিয়োজিত হয়ে থাকেন, সেই ব্যবস্থার যে ভিত্তিগত অনিশ্চয়তা, তা কোনও ধরনের উচ্চমানের পঠনপাঠন বা গবেষণার দরজা খুলে দেয় না। সরকারি অনুদানে চলা কলেজগুলির যখন একদিকে এই অবস্থা, তখন বহুমূল্যের যে “নতুনধারা”-র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তৈরী হয়েছে, তাদের অবস্থা – বিরাট অংকের টিউশন ফি সত্ত্বেও – খুব আলাদা নয়।

সেখানে যেহেতু শিক্ষা বিষয়টিকে প্রায় পুরোটাই লাভক্ষতির হিসেবে দেখা হয়, তাই শিক্ষকনিয়োগ বিষয়টিকেও ভাবা হয় বাণিজ্যিক লাভক্ষতির অঙ্কের নিয়মেই। আবারও বলি, এদেশের শিক্ষাব্যাবস্থায় এই ব্যবস্থাসমূহের প্রচলন ঘটেছে বেশ কিছুদিন ধরেই, এবং এই প্রচলন আমাদের বুঝতে শেখায় যে বাণিজ্যিকীকরণ একটি প্রক্রিয়া। ইউজিসির সাম্প্রতিকতম প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে এই প্রক্রিয়াগুলিকেই প্রাতিষ্ঠানিক বৈধতা দেওয়া হয়েছে মাত্র। তাই, গত দু’দশকের শিক্ষার বাতাবরণ পরীক্ষা করলে দেখা যাবে যে, কলেজগুলিকে ইউজিসির পক্ষ থেকে, তাদের নিজেদের রাজস্ব নিজেদের তুলতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, প্রায় জোরও খাটানো হয়েছে তাদের উপরে।

তাই নীতি আয়োগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, একটি বিশেষ উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুণগত মান নির্ধারিত হবে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভর হয়ে ওঠার ওপরে। অর্থাৎ, বেসরকারীকরণের পথে হাঁটার ওপরে। বাজারমুখী হওয়ার ওপরে। নচেৎ, সেইসমস্ত কলেজের ওপর নেমে আসবে আরও আরও বেশি নিয়ন্ত্রণের ছড়ি। এর সাথে সাথে, ঘোষণা করা হয়েছে যে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বাবদ যে বাড়তি ৩০% ব্যয়, তা কলেজগুলিকে উপার্জন করে নিতে হবে নিজেদের মত করে। কাজেই, এর মধ্য দিয়ে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের অর্থনৈতিক স্বার্থকেও জুড়ে দেওয়া হল বাণিজ্যিকীকরণের সাথে। এইভাবে, এই বিপুল অর্থনৈতিক–রাজনৈতিক প্রকল্পে তাঁদেরও ভাগীদার বানানোর চেষ্টা করা হল। তার সাথে সাথে ছাত্র-ছাত্রী মাত্রই হয়ে উঠল ক্রেতা বা ভোক্তা। কাজেই, শিক্ষক ও শিক্ষাক্ষেত্রের সাথে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর গোটা সম্পর্কটাই হয়ে ঊঠল পুঁজি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, মধ্যস্থিত। এই সস্বাধিকারপ্রাপ্ত শিক্ষাজগতে, ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক একে অন্যের সহযোগী বন্ধু নন। তাঁরা দাঁড়ালেন একে অন্যের মুখোমুখি।

পরিশেষে, ক্যাটেগরি ১ এবং ২-য়ের অন্তর্গত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির (অর্থাৎ, National Assessment and Accredition Council (NAAC)-এর মূল্যায়ন অনুযায়ী যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তুলনামূলকভাবে উৎকৃষ্টমানের) অভ্যন্তরে এই পরিকল্পনা অনুযায়ী যা যা পরিবর্তন হতে পারে, তা হল –

১. ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যেকোনো নতুন কোর্স/প্রোগ্রাম/বিভাগ/স্কুল/কেন্দ্র খুলতে পারবে। সেই নতুন কোর্স/প্রোগ্রাম/বিভাগ ইত্যাদির সাথে যে প্রচলিত পাঠ্যক্রম, তার একটা আদানপ্রদানের সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু, প্রাথমিক শর্ত হলো, এই নতুন পাঠ্যক্রমের জন্য ইউজিসির কাছ থেকে কোনো আর্থিক অনুদান দাবি করা যাবে না।

২. যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই কোনো বৃত্তিমূলক কোর্স চালু করতে পারে। কিন্তু আবারও, প্রাথমিক শর্ত হলো ইউজিসির কাছ থেকে কোনো আর্থিক অনুদান দাবি করা চলবে না। অর্থাৎ, আবারও সেই স্ব-অর্থায়নের নীলছক।

৩. ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই, যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে, রিসার্চ পার্ক, ইনকিউবেশন সেন্টার, ইত্যাদির সূচনা করতে পারে। আবারও সেখানে সরকারী অনুদানের কোনও বিষয় থাকবে না। প্রয়োজনে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থার সাথে সহযোগিতা গড়ে তুলতে পারে।

৪. নির্ধারিত সংখ্যার ওপরেও ২০% পর্যন্ত বিদেশী শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে।

৫. একই কথা প্রযোজ্য বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী সম্পর্কেও। বলা বাহুল্য, এই ছাত্র-ছাত্রীরা প্রায় সবাই গণ্য হবে রাজস্ব-আদায়ের অন্যতম মূল উৎস হিসেবে।

৬. কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অর্থের বিনিময়ে অনলাইন ও দূরশিক্ষণের বিভিন্ন কোর্স চালু করতে পারবে।

বলা বাহুল্য, যেখানে ভারতবর্ষে শিক্ষাক্ষেত্রে এমনিতেই এত বৈষম্য – শ্রেণীকেন্দ্রিক, জাতপাতকেন্দ্রিক, লিঙ্গকেন্দ্রিক – সেখানে এই বাণিজ্যিকীকরণের ঢালাও প্রকল্প কি ধরনের ধ্বংস ডেকে আনবে।

(তথ্যসূত্র: দ্য ওয়্যার ও FEDCUTA)
নন্দিনী ধর পেশায় শিক্ষক ও গবেষক, এবং আয়নানগর পত্রিকার সহ-সম্পাদক।

 

Share this
Recent Comments
3
  • comments
    By: ratish deb on April 28, 2018

    Relevant article .People need to be aware of what is going on in the field of education.

  • comments
    By: ratish deb on April 28, 2018

    comment: Relevant article. people need to be made aware of what is going on in the field of Education.

  • comments
    By: ratish deb on April 28, 2018

    Relevant article.

Leave a Comment